বুধবার | ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫

তিনদিনের ছুটিতে পর্যটকে মুখর বান্দরবান

প্রকাশঃ ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৮:৫২:১৪ | আপডেটঃ ১২ জানুয়ারী, ২০২৫ ০৪:৩৬:৪৩  |  ৫৩৪
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। টানা তিনদিনের ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত হয়ে উঠেছে পার্বত্য জেলা বান্দরবান। শুক্র ও শনিবার সপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে যোগ হয়েছে বড়দিন এর ছুটি। আর এই তিনদিনের ছুটিতে দীর্ঘদিন পর বান্দরবানের হোটেল-মোটেল আর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া পযর্টক এর সমাগম হয়েছে। এদিকে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।

শীতের আমেজ আর সেই সাথে টানা তিনদিনের ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত হয়ে উঠেছে পার্বত্য জেলা বান্দরবান। জেলার মেঘলা,নীলাচল, শৈল প্রপাত, চিম্বুক,নীলগিরি,নাফাকুম,তমাতুঙ্গিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলো এখন পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রেই ছুটছে অসংখ্য পর্যটক আর পাহাড়,নদী ঝর্ণার অপরুপ রুপ দেখে বিমোহিত হচ্ছে প্রকৃতি প্রেমীরা।

বান্দরবানের অন্যতম সুন্দর পর্যটনকেন্দ্র নীলাচলে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. রাশেদ জানান, টানা তিনদিনের ছুটি পেয়ে বান্দরবান বেড়াতে আসলাম। বান্দরবান খুবই সুন্দর ও প্রকৃতি প্রেমীদের ভ্রমনের জন্য উপযুক্ত একটি জেলা।

নরসিংদি থেকে বান্দরবানের মেঘলা পর্যটনকেন্দ্রে বেড়াতে আসা পর্যটক শারমীন জানান, বান্দরবানের পাহাড় আর প্রকৃতি খুবই সুন্দর, আর দীর্ঘদিন পর ছুটি পেয়ে বান্দরবান ভ্রমনে আসলাম। তিনি আরো বলেন, বান্দরবানের  ৭টি উপজেলার মধ্যে অসংখ্য পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে আর আমরা বেশিরভাই পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে এবারের ছুটি উপভোগ করবো।

চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ থেকে বান্দরবান সদরে ভ্রমনে আসা পর্যটক দীপ্র জানান,বান্দরবান খুবই সুন্দর,আমি ছুটি পেলে বান্দরবান ঘুরতে চলে আসি । বান্দরবান বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম একটি জেলা যেখানে ভ্রমনে খুবই মজা।

এদিকে গত ১০অক্টোবর থেকে বান্দরবান জেলার রুমা-রোয়াংছড়ি, থানচি এবং আলীকদম উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকাগুলোতে যৌথবাহিনীর সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান শুরু হওয়ায় আর পর্যটকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের বান্দরবানের কয়েকটি উপজেলা ভ্রমণে গত ১৮অক্টোবর থেকে কয়েক দফায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞার কারণে এখনো বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়ি এই দুই উপজেলায় পর্যটকরা ভ্রমন করতে পারছে না।

তবে দুই উপজেলায় পর্যটকরা ভ্রমন করতে না পারলে ও দীর্ঘদিন পর টানা ছুটির কারণে অন্য ৫টি উপজেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমনে বিপুল সংখ্যক পর্যটক এর আগমনে জেলার হোটেল-মোটেলগুলো ভর্তি হয়ে ওঠেছে কানায় কানায়, আর সেই সাথে পর্যটকবাহী গাড়ীগুলো ভাড়া হওয়ায় খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

বান্দরবান মাইক্রোবাস-জিপ-পিকআপ মালিক সমিতির সভাপতি মো.নাছিরুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন পরে বান্দরবানে অসংখ্য পর্যটক এর উপস্থিতি আমাদের পর্যটন ব্যবসায়ীদের মনে একটু শান্তি নিয়ে এসেছে। গতবছর করোনার কারণে আমরা অনেক ক্ষতির মধ্যে ছিলাম,আবার এবছর প্রশাসন থেকে বান্দরবানের কয়েকটি উপজেলায় কয়েক দফায় নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা ব্যবসা বন্ধের উপক্রমে পড়ে গিয়েছিলাম, তবে টানা বন্ধের কারণে বান্দরবানে এখন প্রচুর পর্যটক রয়েছে আর তারা বান্দরবান বেড়াতে পেরে খুশি আর আমরা তাদের পর্যটকবাহী গাড়ীতে করে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে ভ্রমন করাতে পেরে আরো বেশি খুশি।

বান্দরবান রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন মাস্টার বলেন, বান্দরবানে পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার পর্যটক ভ্রমণে আসেন। পর্যটকদের উন্নত সেবা দেওয়ার জন্য আমরা বান্দরবান রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি সব সময় প্রস্তুুত থাকি আর পর্যটকদের ভালো সার্ভিস দিয়ে তাদের বান্দরবান ভ্রমন নিয়মিত করতে আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁ মালিক সচেষ্ট রয়েছি।

এদিকে টানা বন্ধে বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে আরো বাড়তি সর্তকতা এমনটাই জানালেন ট্যুরিষ্ট পুলিশ বান্দরবান জোন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.নকিবুল ইসলাম ।

তিনি আরো জানান, পর্যটকদের বেড়ানোর জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে নিরাপদ সুন্দরস্থান বান্দরবান ,আর পর্যটকরা যাতে বান্দরবানে নিরাপদে ভ্রমন করতে পারে সেজন্য ট্যুরিষ্ট পুলিশ এর সদস্যরা বেশিরভাগ পর্যটন কেন্দ্রে নিয়মিত টহল কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ট্যুরিষ্ট পুলিশ বান্দরবান জোন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.নকিবুল ইসলাম আরো জানান, সাদা পোষাকে এবং পোষাকধারী ট্যুরিষ্ট পুলিশ এর সদস্যরা বেশিরভাগ পর্যটনকেন্দ্রের আশেপাশে রয়েছে যাতে কোন পর্যটক কোন বিপদের সম্মুখীন না হয়।

বান্দরবান |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions