সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের নেতিবাচক কথা এবং নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে বরং আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
শুক্রবার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শেখ রাসেল অনুধ-১১ চ্যালেঞ্জ কাপ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিলে হবে না, সংগ্রাম করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা প্রতি বছরের শুরুতেই একথাটি বলেন। আমাদেরকে হঠিয়ে বাংলাদেশে তারা ক্ষমতায় আসবেন। আসলে উদ্দেশ্য তা নয়, উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে সবসময় গন্ডগোল পাকানোর উদ্দেশ্য তাদের থাকে, এবং সেই গন্ডগোলের মধ্যে তারা পানি ঘোলা করে সেখানে মাছ শিকার করার অপচেষ্ঠা করে আসছে। তাদের এই হুমকি ধমকি অপচেষ্ঠা এবং ষড়যন্ত্রের মধ্যেও বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ প্রায় একযুগ ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে।
২০২১ সালের প্রথম দিনে দেশবাসির পাশাপাশি বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে আমরা পৃথিবীর মানুষ স্বাভাবিক শ^াস-প্রশ^াস নিতে পারিনি, নতুন বছরে মহান আল্লাহর কাছে আমার প্রার্থনা হচ্ছে নতুন বছরে যাতে খুব সহসা আমরা স্বাভাবিকভাবে শ^াস-প্রশ^াস নিতে পারি, আবার আগের পৃথিবীতে ফেরত যেতে পারি।
তিনি বলেন, নতুন বছরে আমার প্রত্যাশা থাকবে বিএনপি এতদিন ধরে যে নেতিবাচক রাজনীতি করে এসছে, মানুষকে জিম্মি করার রাজনীতি করে এসেছে, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করার রাজনীতি করে এসেছে, ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করে এসেছে, সেটি থেকে বেরিয়ে এসে ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় তারা ফেরত আসবে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শিশু কিশোররা যেভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতিরিক্ত আসক্তির মধ্যে নিমজ্জিত হচ্ছে, এটি তাদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে বিরাট প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। শিশু কিশোররা যাতে সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারে, তাদের মনন ও মেধা বিকশিত হতে পারে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা হতে পারে সে জন্য কিন্তু খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, এখন খেলাধুলা সীমিত হয়ে গেছে, কারণ মাঠও সীমিত হয়ে গেছে। আমাদের আরো খেলাধুলার মাঠ বাড়াতে হবে। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে অনুরোধ জানাবো কিছু মাঠ বাড়ানোর জন্য। সম্ভব হলে ওয়ার্ড ভিত্তিক মাঠ তৈরী করা গেলে ছেলেমেয়েদের খেলার জন্য সুযোগ তৈরী হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুর পুরো পরিবার ক্রীড়ামোদি ও সংস্কৃতিমনা ছিলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেটে টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছেন। তার হাত ধরেই আমাদের নারী যুব ক্রিকেট দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু নিজেও খেলোয়াড় ছিল, তিনি ফুটবল খেলতেন। বঙ্গবন্ধু যখন স্কুলে পড়তেন তখন তাঁর বাবার নেতৃত্বে টিম আর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে টিমের মধ্যে খেলা হয়েছিল, সেই খেলায় বঙ্গবন্ধুর টিম বাবার টিমকে হারিয়ে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর দুই পুত্র শেখ কামাল ও শেখ জামাল খেলোয়াড় ছিল। শেখ খামালের নবপরিণিতা বধু সুলতানা কামাল ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ব্লু ছিলেন। তিনি বিশ^বিদ্যালয়ের সেরা নারী ক্রীড়াবিদ ও এথলেট ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, মহেশখালি কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমন আল মাহমুদ, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি আলী আব্বাস।
শেখ রাসেলের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার জন্য চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ অনুর্ধ-১১ টুর্ণামেন্টের আয়োজন করেন। টুর্ণামেন্টে ১০টি টিম অংশ নেন। প্রতিকটি টিমের নামকরণ করা হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডে নিহতদের নামানুসারে। শুক্রবারের ফাইনাল খেলায় সুলতানা কামাল ক্রিকেট একাডেমি ও শেখ ফজলুল হক মণি ক্রিকেট একাদশ প্রতিদ্ধন্ধিতা করেন। এতে শেখ ফজলুল হক মণি ক্রিকেট একাদশ চ্যাম্পিয়ন ও সুলতানা কামাল ক্রিকেট একাডেমি রানার্স আপ হন।