চট্টগ্রামে আইনজীবি হত্যার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে আইনজীবিদের মানববন্ধন নাশকতার মামলায় নাইক্ষ্যংছড়ির দুই ইউপি চেয়ারম্যান জেল হাজতে গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে লংগদুতে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত বান্দরবানে আওয়ামী লীগের ৪৮ নেতাকর্মীর জামিন লংগদু-দীঘিনালার মনের মানুষ এলাকায় আগুনে বসতঘরসহ পুড়ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
সিএইচটি টুডে ডট কম, কাপ্তাই (রাঙামাটি)। রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলাধীন কর্ণফুলী সরকারি কলেজে গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি ছাত্রীনিবাস নির্মাণ করে কলেজ কতৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা ছাত্রী নিবাসটির উদ্বোধন করেছিলেন। একতলা বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাসটিতে ১২ জন ছাত্রী থাকার মতো আসবাবপত্র এবং সু-ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া ভবনটিতে পানি এবং বিদ্যুৎ এর সংযোগ স্থাপন করা রয়েছে।
তবে বুধবার (১ নভেম্বর) কর্ণফুলী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গনে অবস্থিত ছাত্রীনিবাসটিতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অযত্ন অবহেলায় এবং পরিত্যক্ত অবস্থায় ভবনটি পড়ে রয়েছে। সেইসাথে ভবনটি পুরো ফাঁকা এবং তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে. ছাত্রীনিবাসটি নির্মাণের পর থেকে অদ্যবদি সেখানে কেউই থাকেনা। যার ফলে একপ্রকার অপরিষ্কার, অপরিছন্ন এবং নোংরা অবস্থায় পরিত্যক্তভাবে পড়ে আছে ছাত্রীনিবাসটি। ভবনটির আঙিনার চারপাশে ধুলাবালি, আবর্জনা জর্জরিত অবস্থায় দেখা গেছে।
এছাড়া ছাত্রীনিবাসের ভবনটির মুল গেইটের তালা দীর্ঘদিন না খোলার ফলে জং ধরে গেছে। ভবনের ভিতরেও ময়লা আবর্জনায় ভরা। ভবনটির ছাদেও বেশ বাজে অবস্থা। এদিকে দিনের পর দিন ভবনটি এভাবে পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে থাকার ফলে ছাত্রীনিবাসটি পুরোপুরি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী সরকারি কলেজে এর অধ্যক্ষ এ এইচ এম বেলাল চৌধুরী জানান, ছাত্রীনিবাসটি নিরাপত্তাজনিত কারণ এবং বাউন্ডারি ওয়াল না থাকার ফলে চালু করা হয়নি। তিনি আরো জানান, ছাত্রীনিবাসটির বাইন্ডারী ওয়াল, নিরাপত্তা প্রহরী এবং হোস্টেল সুপার নিয়োগের জন্য একাধিক বার উধ্বর্তন কতৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হলেও অদ্যবদি তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাই এই সমস্যা দ্রুত নিরসন করা হলে ছাত্রীনিবাসটি চালু করা হবে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্ণফুলী সরকারি কলেজ এর কয়েকজন ছাত্রী জানান, এই কলেজে অধিকাংশ গরীব পরিবারের সন্তান লেখাপড়া করে। বিশেষ করে কাপ্তাই এবং বিলাইছড়ি উপজেলার বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ী এলাকা থেকে এই কলেজে অনেক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করতে আসে। তবে শিক্ষার্থীদের বাসাবাড়িগুলো অনেক দুরে হওয়ায় নিয়মিত যাতায়াত করা সম্ভব হয়না। তাই অনেক শিক্ষার্থী কলেজ এলাকার আশেপাশে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে লেখাপড়ার পাশাপাশি বাসাভাড়া এবং দৈনিক খাবার খরচেই অনেক টাকা ব্যয় হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের। তাই অধিকাংশ শিক্ষার্থী বলেন, কলেজের এই ছাত্রীনিবাসটিতে থাকার মতো পরিবেশ তৈরি করা হলে অনেক গরীব ও অসহায় শিক্ষার্থী এখানে থাকার সুযোগ পাবে। এতে তাদের অনেক উপকার হবে।
প্রসঙ্গত, কর্ণফুলী সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে প্রায় ২ হাজার ১শত ৬৬ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। তার মধ্যে কাপ্তাই উপজেলা ছাড়াও পাশ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার দুর্গম পাহাড়ী অঞ্চল থেকে অনেক শিক্ষার্থী কলেজটিতে লেখাপড়া করতে আসেন।