শনিবার | ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

কাউখালীতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা “চোর” বলায় সভা বর্জন করলেন জনপ্রতিনিধিরা

প্রকাশঃ ০৮ মে, ২০২৩ ০৬:৪৪:০২ | আপডেটঃ ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:৪৯:০৮  |  ৯৬৬
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। জনপ্রতিনিধিদের “চোর” বলায় রাঙামাটির কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) কার্যালয়ে এক প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে একমাস পরও অপসারণ ও শাস্তিমুলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় আজ সোমবার চার ইউনিয়নের ৫৪ জনপ্রতিনিধি সকল সভা বর্জনের ঘোষনা দিয়েছেন। পাশাপাশি ওই কর্মকর্তাকে অপসারণ ও শাস্তির দাবীতে জনপ্রতিনিধিরা সংবাদ সন্মেলনও করেছেন।

জানা গেছে,গত ১০ এপ্রিল রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার নিন্ম আয়ের মানুষের মধ্যে টিসিবির পন্য বিতরণ করা হয়। ওই সময়ে ইউএনও কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাজী আহসান উল্লাহ নিয়ম বহির্ভুতভাবে টিসিবির পণ্য বিতরণ করায় স্থানীয় এক সংবাদকর্মী ও স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি পণ্য বিতরণে জনপ্রতিনিধিরা অনুপস্থিত কেন জানতে চাইলে জনম্মুখে চেয়ারম্যান মেম্বারদের “চোর” বলে আখ্যায়িত করেন ওই কর্মকর্তা। এ ঘটনায় চার ইউনিয়নের ৫৪ জন প্রতিনিধি ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অপসারণ ও শাস্তিমুলক ব্যবস্থা  নেওয়ার দাবী জানান। এ দাবী প্রায় এক মাস অতিবাহিত হলেও ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে রয়েছেন চার ইউনিয়নের চার চেয়ারম্যান, দুই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও চার ইউপির ৪৮ জন ওয়ার্ড মেম্বার। পরে গতকাল সোমবার উপজেলার আইন-শৃংখলা ও মাসিক সমন্বয় সভায় হলেও জনপ্রতিনিধিরা যোগদান করেননি। তারা তাৎক্ষনিকভাবে উপজেলা পরিষদ বিশ্রামাগারে সংবাদ সন্মেলন করেন।  সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলমপতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যজাই মারমা।

সংবাদ সন্মেলনে বলা হয়, এ ঘটনার পর ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা সাদিয়া নূরীয়ার বরাবরে লিখিত অভিযোগ জানান। ইউএনও উপস্থিত চেয়ারম্যান মেম্বারদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং  কাজীর আহসান উল্লাহর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান। দীর্ঘ এক মাসেও অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায়  সোমবার উপজেলা আইন-শৃংখলা ও মাসিক সমন্বয় সভা বর্জন করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেন।

সংবাদ সন্মেলনে আরো বলা হয়, ওই কর্মকর্তা চাকুরী জীবনের সিংহভাগ সময়ে কাউখালীতে অবস্থান করার কারনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তো দুরের কথা সাধারন কাউকে পাত্তা দেন না। ফেনী জেলার বাসিন্দা হিসেবে সরকারী চাকুরী নিলেও কাউখালী উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা সেজে এখানে বিপুল পরিমান পাহাড় ও উপজেলা পরিষদের জায়গা লিজ নিয়ে দোকানপাত  গড়ে তুলছেন। সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসনিক কর্মকতা পদে পদোন্নতী হওয়ার পূর্বেও কাউখালীতে কর্মরত ছিলেন। জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকতা পদোন্নতী হওয়ার পর তাদেরকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অন্যত্র বদলী করা হলেও অদৃশ্য কারনে কাজী আহসান উল্লাহকে কাউখালীতে বহাল তবিয়েতে রয়েছেন। ফলে তার ক্ষমতার দাফট আরো বেড়ে গেছে।

এ ব্যাপারে  কাজী আহসান উল্লাহ কাউকে চোর বলেছেন তা অস্বীকার করে বলেন, কেউ শত্রুতা বশত তার বিরুদ্ধে এসব কথা বলে বেড়াচ্ছেন। তাকে কাউখালী থেকে অপসারণ করতে এ অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি কাউখালীতে সততার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।

কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সাদিয়া নূরীয়া বলেন, এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, উর্দ্ধতন  কর্তৃপক্ষ যা নির্দেশ দেন তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সময় সাপেক্ষের বিষয় তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




রাঙামাটি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions