বৃহস্পতিবার | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

খাগড়াছড়ির বেশীর ভাগ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, ভোট বর্জনে বেড়েছে আতঙ্ক

প্রকাশঃ ০৩ জানুয়ারী, ২০২৪ ০৩:১৭:৩২ | আপডেটঃ ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৭:৫৪:০৯  |  ৭৭২
সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ি-২৯৮ নং সংসদীয় আসনে এতোদিন শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চললেও শেষ সময়ে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনায় আতঙ্ক ভর করেছে সাধারণ ভোটার ও প্রার্থীদের। গেল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারী) খাগড়াছড়ির দুর্গম জনপদ ল²ীছড়ি উপজেলার বর্মাছড়িতে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার নির্বাচনীয় প্রচারণায় সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এর আগে (২৯ ডিসেম্বর) জেলার পানছড়ি উপজেলার লোগাংয়ের দুদকছড়ায় তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী উশ্যেপ্রæ মারমা নির্বাচনীয় প্রচারণায় হামলা চালিয়ে ১২ টি গাড়ি ভাংচুর ও ৯ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা। উভয় ঘটনার জন্য প্রার্থী ও সমর্থকরা পাহাড়ের অনিবন্ধিত আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) কে দায়ী করছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে সংগঠনটি।

সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তথ্যমতে, খাগড়াছড়ির ৯ উপজেলা ও ৩৮ ইউনিয়নের ১ শ ৯৬ টি কেন্দ্রের ৮০ টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ও ৭৭ টি কেন্দ্রকে সাধারণ ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। তন্মধ্যে দুর্গম তিনটি কেন্দ্রে হেলিসটি ব্যবহার করা হবে। কেন্দ্রের দূরত্ব, যাতায়াত ব্যবস্থা ও ভৌগলিক দিক বিবেচনার পাশাপাশি বিগত সময়ের বেশকিছু বিষয় মাথায় রেখে এসব কেন্দ্রের নিরাপত্তার বিষয়টি সাজানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক সূত্র।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ি জেলায় এবার ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ। যার প্রভাব পড়ছে নির্বাচনীয় প্রচারণায়, শঙ্কা করা হচ্ছে ভোটের দিন ভোটার উপস্থিতিতে প্রভাব ফেলবে। আঞ্চলিক সংগঠনটির আধিপত্য রয়েছে এমন এলাকায় ভোটারদের কেন্দ্রে না যেতে প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি ভয়ভীতি প্রদর্শনের কথাও শোনা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ইউপিডিএফর খাগড়াছড়ি জেলার সংগঠক অংগ্য মারমা বলেন, জনগণকে ভোট কেন্দ্রে না যেতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে এটা সত্য। তবে কাউকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে না। জনগণই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এতে সাড়া দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় তাই এবার ইউপিডিএফ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বলেও জানান তিনি।

তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী উশ্যেপ্রæ মারমা সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ নিয়ে শঙ্কা জানিয়ে বলেন, শুরুতে যে ভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো হয়েছে হামলার পর নেতাকর্মীদের মাঝে আতঙ্ক কাজ করছে। প্রত্যন্তাঞ্চলের অধিকাংশ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও প্রশাসনের জোরালো ভূমিকা চান তিনি।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, আঞ্চলিক দল নির্বাচন বর্জনের নামে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রভাবিত করছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি কঠোর হয় তাহলে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে কেন্দ্রে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  

খাগড়াছড়ি আসনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ইতোমধ্যে সুষ্ঠু ও নিরাপদে ভোট গ্রহণে সবধরণের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। ভোট কেন্দ্রের গুরুত্ব বিবেচনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।  সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে তৎপর রয়েছেন। আশা করছি ভোটের দিন ভোটাররা ভয়মুক্ত পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

খাগড়াছড়ি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪ শ ১৯ জন। তন্মধ্যে মহিলা ভোটার ২ লাখ ৫৩ হাজার ৩ শ ৭৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬২ হাজার ৪৪ জন। আওয়ামীলীগ, তৃণমূল বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও ন্যাশনালা পিপলস পার্টির চারজন প্রার্থী ভোটের মাঠে প্রার্থী হয়েছেন।


খাগড়াছড়ি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions