রাঙামাটির কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪০ বছর পূর্তি রুবি জয়ন্তী উদযাপন প্রকাশিত সংবাদে ভিন্নমত জানিয়েছে বাঘাইছড়ির ছাত্র-যুব ও স্বেচ্ছাসেবকদল রাবিপ্রবি’র নবনিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে প্রফেসর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান এর যোগদান রাঙামাটিতে শতাধিক শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রাঙামাটি শহরে বন্দুকভাঙা ভূমি রক্ষা কমিটির মানববন্ধন
সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। বৃহত্তর
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ
(পিসিপি)-এর রাঙামাটি জেলা
শাখার ৯ম কাউন্সিল সম্পন্ন
হয়েছে। এতে
রিপন চাকমাকে সভাপতি, তনুময় চাকমাকে সাধারণ
সম্পাদক ও রুপায়ন চাকমাকে
সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৭ সদস্য
বিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন
করা হয়।
গতকাল শুক্রবার (২০ জানুয়ারি ২০২৩)
রাঙামাটির সদর এলাকায় এই
কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
কাউন্সিলের ব্যানার শ্লোগান ছিল “পূর্ণস্বায়ত্তশাসনই পার্বত্য
চট্টগ্রামে একমাত্র রাজনৈতিক সমাধান, রাষ্ট্রীয় মদদে অব্যাহত ভূমি
বেদখল, নারী নিপীড়ন, খুন,
গুম ও জেলগেট থেকে
পূনরায় গ্রেফতারসহ সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের
বিরুদ্ধে সোচ্চার হও ছাত্রসমাজ।”
কাউন্সিল অধিবেশনে পিসিপি’র রাঙামাটি
জেলা শাখার সভাপতি নিকন
চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক
তনুময় চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য
রাখেন, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট
(ইউপিডিএফ)-এর রাঙামাটি জেলা
ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা,
পিসিপি'র কেন্দ্রীয় সভাপতি
সুনয়ন চাকমা ও চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক
সোহেল চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম
নারী সংঘের জেলা সভাপতি
রিনিশা চাকমা, হিল উইমেন্স
ফেডারেশনের জেলা শাখার সভাপতি
রিমি চাকমা ও গণতান্ত্রিক
যুব ফোরামের রাঙামাটি জেলার সাধারণ সম্পাদক
থুইনুমং মারমা। এতে
স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিসিপি জেলা
কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সতেশ চাকমা।
পিসিপির দলীয় সঙ্গীত ‘পাহাড়ি
ছাত্র-ছাত্রী দল’ গানটি
পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় ও দলীয়
পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে কাউন্সিল
অধিবেশন উদ্বোধন করা হয়।
জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন
ইউপিডিএফ সংগঠক সচল চাকমা।
কাউন্সিল অঅধিবেশনে শোক প্রস্তাব পাঠ
করেন জেলার তথ্য প্রচার
ও প্রকাশনা সম্পাদক আওজ চাকমা।
শোকপ্রস্তাব শেষে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে
সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও
সম্মান জানিয়ে দুই মিনিট
নিরবতা পালন করা হয়।
কাউন্সিল অধিবেশনে ইউপিডিএফ সংগঠক সচল চাকমা
বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শাসকগোষ্ঠির শাসন-শোষণের হাত
থেকে নিপীড়িত জনগণকে মুক্ত করার
লক্ষ্যে আমাদের পার্টি গঠন
করা হয়েছিল। তাই
পার্টি শাসকগোষ্ঠী ও জাতীয় দালাল-প্রতিক্রিয়াশীলদের নানা বাধা-বিপত্তি
মোকাবেলা করে লক্ষ্যে পৌঁছার
জন্য সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। জনগণকে
সাথে নিয়ে আমরা আন্দোলন
সংগ্রাম করছি বলে কোন
অপশক্তি পার্টির অগ্রাযাত্রাকে রোধ করতে পারছে
না। আগমীতেও
এই পার্টির নেতৃত্বে পাহাড়ি জনগণকে সাথে
নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে জনগণের অধিকার পূর্ণস্বায়ত্তশাসন
প্রতিষ্ঠা করবো।
তিনি আরো বলেন, মুঘল,
ব্রিটিশ শাসন থেকে শুরু
করে বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়া পরও
পার্বত্য চট্টগ্রামে একের অধিক চুক্তি
হয়েছিল। কিন্তু
কোন চুক্তিই পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার
প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি।
পাহাড়ি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন
হয়নি। বাংলাদেশ
সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের অস্তিত্ব ধ্বংস করতে পরিকল্পিতভাবে
যুগ যুগ ধরে সেনা
শাসন জারি রাখার মাধ্যমে
প্রতিনিয়ত নিপীড়ন, নির্যাতন, খুন-গুম, বিচার
বহির্ভূত হত্যাসহ নানা নিপীড়ন-নির্যাতন
চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি জাতির এই দুর্দিনে
অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে বেগবান
করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসার
জন্য ছাত্র-যুব-নারী
সমাজ তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের
জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
পিসিপি'র সভাপতি সুনয়ন
চাকমা বলেন, পাহাড়ি ছাত্র
পরিষদ শুধুই নামেমাত্র একটি
সংগঠন নয়। এই
নামের সাথে অনেক কিছু
জড়িয়ে আছে। এই
সংগঠনের রয়েছে শাসকগোষ্ঠীর রক্ত
চক্ষু উপেক্ষা করে প্রতিরোধ সংগ্রামের
ইতিহাস। পার্বত্য
চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের অধিকার
প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অনেক সহযোদ্ধা জীবন
উৎসর্গ করেছেন। সুতরাং
এই সংগঠনের সাথে যুক্ত হতে
পারা গর্বের বিষয়।
অধিবেশন শেষের দিকে পাহাড়ি
ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি
নিকন চাকমা ১৭ সদস্য
বিশিষ্ট নতুন কমিটির প্রস্তাবনা
পেশ করেন। এতে
উপস্থিত প্রতিনিধিরা করতালির মাধ্যমে প্রস্তাবিত নতুন কমিটিকে পাস
করে নেন।
নতুন কমিটিতে রিপন চাকমাকে সভাপতি,
তনুময় চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও
রুপায়ন চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
পরে কেন্দ্রীয় সভাপতি সুনয়ন চাকমা
মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিকে বিলুপ্ত করে নতুন কমিটিতে
নির্বাচিত সকল সদস্যদের শপথবাক্য
পাঠ করান।
কাউন্সিলে দ্বিতীয় পর্বে ফুল দিয়ে
নতুন কমিটির সদস্যদের শুভেচ্ছা
জ্ঞাপন ও বিদায়ী কমিটির
সদস্যদের বিদায় জানানো হয়।