সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বান্দরবানে হঠাৎ করে সক্রিয় হয়ে ওঠেছে মোটর সাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা। রাত-বিরাতে বাসাবাড়ী,সড়ক ও অফিস থেকে মহুর্তের মধ্যে মোটর সাইকেল নিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে এই দলের সদস্যরা। আর মোটর সাইকেল খুঁজতে গিয়ে নতুন বিড়ম্বনায় পড়ছে মোটর সাইকেলের মালিকরা। চোরের দলের সদস্যদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে অনেকে তাদের বিকাশে টাকা দিয়ে মোটর সাইকেল খুঁজে পাচ্ছে পুকুরের পানির নীচে আর অনেকে পাচ্ছে গহীন পাহাড়ে আর অনেকে চোরের বিকাশে টাকা দিয়েও ফিরে পাচ্ছে না তাদের একমাত্র সম্বল মোটর সাইকেলটি।
সুত্রে জানা যায়, গেল কয়েকদিন যাবৎ হঠাৎতই পার্বত্য জেলা বান্দরবানে মোটর সাইকেল চোরের দলগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। এই দলে রয়েছে উঠতি বয়সী কয়েকজন যুবক আর তারাই দিনের বেলা বিভিন্ন বাসা-বাড়ী আর অফিসে নজরদারি করে গভীর রাতে চুরি করে সাধারণ জনগণের মোটর সাইকেল।
সম্প্রতি বান্দরবান পৌরসভার ৮নং ওর্য়াড এর মেম্বার পাড়া এলাকার একটি পুকুরের গভীর থেকে একসাথে ২টি মোটর সাইকেল উদ্ধারের পর মোটর সাইকেল চালকদের মধ্যে আতংক বেড়েছে কয়েকগুণ। কখন কার মোটর সাইকেল চুরি হয় এই ভয়ে এখন অনেকেই সার্বক্ষাণিক মোটর সাইকেল রাখছে নিজ তদারকিতে।
জানা যায়, বান্দরবান পৌরসভার মেম্বার পাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার ও তার ছেলে মো.এমরান দুইজনের ২টি মোটর সাইকেল রয়েছে। ঠিকাদারী ব্যবসায়ী হিসেবে পিতা ও ছেলে দুটি মোটর সাইকেল দিনের কাজ শেষে রাতে তাদের বাড়ীর একপাশে গ্যারেজে রাখে পরম যতেœ । তবে গেল ১৫ নভেম্বর রাতে চোরের দল ঘরে প্রবেশ করে ঘরের সকল দরজা বাহির থেকে বন্ধ করে গ্যারেজ থেকে ২টি মোটর সাইকেল ( ডিসকভার -১২৫ ও গ্ল্যামার -১২৫) নিয়ে উধাও হয়ে যায়।
এদিকে সকালে উঠে আব্দুস সাত্তার কাজে বের হওয়ায় জন্য ঘরের দরজা খুলতে গিয়ে বাহির থেকে দরজা বন্ধ দেখে ভয় পেয় যায়, পরে আশেপাশের প্রতিবেশীর সহযোগীতায় দরজা খুলে গ্যারেজে গিয়ে দেখে ২টি মোটর সাইকেল উধাও। এসময় গ্যারেজে মোটর সাইকেল না থাকলে ও তিনি দেখতে পায় চোরের দল একটি মোবাইল নং লিখে দেয় দেয়ালে আর সেই নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলে। পরে আব্দুস সাত্তার আশেপাশে বিভিন্নস্থানে মোটর সাইকেলগুলো খুঁজে না পেয়ে সেই নাম্বারে ফোন করলে চোরের দলের সদস্যরা মোটরসাইকেল গুলো ফেরত দিতে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে আবার ২০-১৫ হাজার টাকাসহ কয়েক দফা দরদাম শেষে ১০ হাজার টাকা স্থির হয় চোর ও মোটর সাইকেল মালিকের মধ্যে। এরমধ্যে মোটর সাইকেল মালিক মো.এমরান ৫হাজার ৫শত টাকা ( বিকাশ নং : ০১৫৮৫৮১০৮৪২) চোরের বিকাশে প্রদান করে এবং মোটর সাইকেল পেলে বাদবাকী টাকা দেবে বলে চোরের দলকে আশ্বস্ত করে।
এদিকে বিকাশে টাকা পেয়ে চোরেরা জানায়, মোটর সাইকেল ২টি তাদের বাড়ীর সামনের পুকুরের দুই পাশে ফেলে দেয়া হয়েছিল সেই রাতে। পরে মোটর সাইকেল মালিক মো.এমরান স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় ১৬ নভেম্বর বিকালে মেম্বারপাড়া পুকুরের দুই পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় মোটর সাইকেল ২টি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
এদিকে রাত বিরাতে জেলা সদরের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চোরেরা মোটর সাইকেল চুরি করে তা নিয়ে যাওয়া,আবার বিকাশে টাকা আদায় করায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম আরো জোরদার করার জন্য আহবান জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
এদিকে বান্দরবানে হঠাৎ মোটর সাইকেল চুরির বিষয়টি উদ্বেগজনক বলে ব্যক্ত করে সকল মোটর সাইকেল চালকদের আরো সর্তক থাকার আহবান জানান বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার । পুলিশ সুপার আরো জানান, সাম্প্রতিক বান্দরবানে মোটর সাইকেল চোরের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় বিষয়টিকে আমলে নিয়ে চোরের দলের সদস্যদের খুঁজতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে এবং খুব দ্রুত সময়ে এই সকল অপরাধীদের আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।