খাগড়াছড়ি এলজিইডির সহকারি প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
প্রকাশঃ ০৫ মে, ২০২৪ ০৪:০৬:৩৯
| আপডেটঃ ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১১:০৬:০৬
|
৭৪৩
সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ি এলজিইডির সিনিয়ির সহকারি প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন’র বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের হলেও এখন প্রকাশ্যে লিখিত অভিযোগ করে তার সকল অপকর্মের বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছে, মো. আক্কাছ আলী নামে প্রতিষ্ঠাটির এক প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার ও সরবরাহকারী।
ঠিকাদার আক্কাছ আলী লিখিত উল্লেখ্য করেন যে, খাগড়াছড়ি এলজিইডি-পানছড়ি কতৃক আহবানকৃত দরপত্রে অংশগ্রহণ করার নিমিত্তে সকল নিয়ম অনুসরণ করে গত ৩০-০৩-২০২৪ ইং তারিখে (ওটিএম) অনলাইনে আবেদন করলে ই-টেন্ডারে একটি কাজ প্রাপ্ত হন। যাহার টেন্ডার আইডি নং-৯৬২৭৫৬। টেন্ডার দাখিলের পর অফিসের নিয়মানুসারে সিনিয়ির সহকারি প্রকৌশলী ঠিকাদার কতৃক দাখিলকৃত সকল কাগজপত্র যাচাই বাছাই পূর্বক যদি কোন প্রকার ভুল ক্রটি থেকে থাকলে তাহা ঠিকাদারকে নোটিশের মাধ্যমে অবগত করতে হয় এবং ঠিকাদারের স্বাক্ষর নিয়ে ক্রটিপূর্ণ আবেদিত টেন্ডার বাতিল করতে হয়। কিন্তু (ওটিএম) অনলাইনে দাখিলকৃত সকল কাগজপত্র যাচাই বাছাই বা ঠিকাদারকে না জানিয়ে এবং সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে, সিনিয়ির সহকারি প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন তার দায়িত্বের অবহেলা করে একই কাজটি (এলটিএম) লটারিতে দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে গত ০৮-০৪-২৪ইং তারিখেও ভাগ্যক্রমে পূণরায় লটারিতে কাজটি প্রাপ্ত হয় ঠিকাদার আক্কাছ আলী। কাজটি প্রাপ্ত হওয়ার পর সহকারি প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন ঠিকাদার আক্কাছ আলীকে তার অফিস কক্ষে ডেকে এনে বলেন, আপনার কাগজপত্রে ভুল আছে তাহা ঠিকটাক করে দিতে পঞ্চাশ হাজার টাকার খরচ লাগবে। খরচের বাবদ পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান ঠিকাদার। খরচের পঞ্চাশ হাজার টাকা দেয়া না হলে কোনো অবস্থাতেই কাগজপত্র সংশোধন করার স্কোপ নাই বলেন, সহকারি প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন।
পরবর্তীতে এ বিষয়টি খাগড়াছড়ি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানালে তিনি তার রেফারেন্স দিয়ে আবারও ঠিকাদারকে সিনিয়ির সহকারি প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেনের কাছে গিয়ে এবিষয়ে কথা বলতে বলেন। এবার ঠিকাদার আক্কাছ আলী সিনিয়ির সহকারি প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেনের কাছে গিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর কথা বলার সাথে সাথে তিনি তার চেয়ার থেকে তেরে উঠে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে এবং বিভিন্ন প্রকার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে যেজে বলেন। আবারও ঠিকাদার আক্কাছ আলী তাকে অকত্য ভাষায় গালিগালাজ, বিভিন্ন প্রকার হুমকি, ভয়ভীতি ও অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা নির্বাহী প্রকৌশলীকে গিয়ে বলেন। এবার নির্বাহী প্রকৌশলী অফিস সহকারি রানাকে দিয়ে সহকারি প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেকে তার কক্ষে ডেকে আনতে বলেন। ঠিকাদার আক্কাছ আলীর বিষয়টি সমাধান করার কথা বলতেই রেগেমেগে ঠিকারের দিকে তাকিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলেন যে এ কাজটি আমি করতে পারবো না সাফ জানিয়ে দিলাম স্যার যা হওয়ার হবে। তৎপরবর্তীতে গত ২৩-০৪-২০২৪ইং তারিখে সরকারি সকল নিয়ম নিতীর তোয়াক্কা না করে অনিয়ম ও দূনীতির মাধ্যমে সিনিয়ির সহকারি প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন পুণরায় লটারি দিয়ে অন্য এক ঠিকাদারকে কাজটি পাইয়ে দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। সিনিয়ির সহকারি প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন কতৃত বিভিন্ন প্রকার হুমকি, ভয়ভীতি এবং আর্থীক ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, অভিযোগকারি ঠিকাদার মো আক্কাছ আলী।
অন্যান্য ঠিকাদাররা অভিযোগে জানান, লটারিতে (এলটিএম) প্রাপ্ত কাজের বিপরিতে সি.এস পাশ করার কথা বলে প্রকৌশলী বেলাল হোসেন ২% করে প্রত্যেক ঠিকাদার থেকে টাকা নিয়ে থাকে। সি.এস এর টাকা না দিলে তিনি নোহা প্রদান করেন না। ঠিকাদারি কাজ সংক্রান্ত যে কোনো কাজে তাঁর কাছে গেলে টাকা ছাড়া কোনো কাজ করানো যায় না। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে একই স্থান খাগড়াছড়িতে কর্মরত আছেন। তাঁকে বদলী আদেশ দেওয়ার পরেও বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে একই কর্মস্থলে অবস্থান করছেন।
স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, এছাড়াও আহব্বানকৃত টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি নামকরা জাতীয় পত্রিকায় দেয়ার কথা থাকলেও তিনি তা না অচেনা ও নামমাত্র প্রচারসংখ্যার পত্রিকায় ঘুপছি করে বিজ্ঞাপন ছাপায় সিনিয়ির সহকারি প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন।
অভিযুক্ত সিনিয়র সহকারি প্রকৌশলী বেলাল হোসেন এসব অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ না পাওয়ায় সংক্ষুব্ধ হয়ে ষড়যন্ত্র করছে।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী তৃপ্তি শঙ্কর চাকমা জানান, অল্প কয়েক মাস আগে তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। অভিযোগগুলো শুনেছি। যদি কোথাও অসঙ্গতির প্রমাণ মেলে তাহলে খোঁজখবর নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বেলাল হোসেন দাবি করেন, সাড়ে চার বছর ধরেই সরকারি দায়িত্ব পালন করেছি। কারো কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেইনি।