রবিবার | ১৯ মে, ২০২৪

রাঙামাটিতে পাকুয়াখালী ট্র্যাজেডী দিবস পালিত

প্রকাশঃ ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০১:৩৯:৪৭ | আপডেটঃ ১৪ মে, ২০২৪ ১১:১০:১২  |  ৯১৪
সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। পাকুয়াখালী ট্রাজেডি উপলক্ষে আজ পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যেগে পৌরসভাস্থ পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার কার্যালয়ের সামনে পার্বত্য নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার আহ্বায়ক বেগম নূর জাহানের সভাপতিত্বে ও পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মো: নাজিম উদ্দিনের পরিচালনায় বিকেল সাড়ে ৩টায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানবন্ধন শেষে  পাকুয়াখালী গণহত্যায় নিহতদের স্মরণে আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পদক মো: এনায়ুতুর রহমান, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তবায়ন কমিটির যগ্ম আহ্বায়ক কাজী মো: জালোয়া, পার্বত্য শ্রমিক পরিষ রাঙামাটি জেলার ষভাপতি মো: রাসেল ইসলাম সাগর, পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মো: নজরুল ইসলাম, পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সহ-সাংগঠনিক সম্পদক মো: মানিক আহম্মেদ, সহ-প্রচার সম্পদক হৃদয় দাশ, দপ্তর সম্পাদক মো: তানভীর ইসলাম, অর্থ সম্পাদক মো: আব্দুর রাজ্জাক সহ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি  (জেএসএস) এর অঙ্গ সংগঠন শান্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসীরা রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালিতে নিরীহ এবং নিরস্ত্র বাঙালী কাঠুরিয়াদের উপর নির্মম হত্যাকান্ড চালিয়ে তাদের বিবৎস মানসিকতার এক জঘণ্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। স্বাধীনতার পর পরই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি  (জেএসএস) এর অঙ্গ সংগঠন শান্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু করে।

এসব কাঠুরিয়াদের শ্রমই ছিল তাদের জীবিকা নির্বাহের উপায়। রুজি রোজগারের সহজ বিকল্প কোন উপায় না থাকায় বনের গাছ,বাঁশ আহরণেই তারা বাধ্য ছিল। শান্তিবাহিনী মিটিং করার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ডেকে নিয়ে ৩৫জন নিরীহ বাঙালী কাঠুরিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। অবাক করার বিষয় হচ্ছে যে, শান্তিবাহিনী সেদিন এতগুলো মানুষকে হত্যা করতে একটি বুলেটও ব্যবহার করেনি। ৩৫টি মাথা একটি বস্তায় করে আনা হয়েছিল। একটি লাশেরও হাত সাথে ছিল না। হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে কুপিয়ে এবং বেয়নেট ও অন্যান্য দেশিয় অস্ত্র দিয়ে খোঁচিয়ে খোঁচিয়ে নানা ভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছিল এই অসহায় মানুষ গুলোকে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকাতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল তারা। এই ভীবৎস লাশের করুন চিত্র, এখনো আমাদের হৃদয়কে নাড়া দেয়।
পার্বত্য পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখার জন্য তৎকালিন সরকারের ৮জন প্রভাবশালী মন্ত্রী লংগদু গিয়েছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম,শিল্প মন্ত্রী তোফায়েল আহম্মদ, পানি সম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এবং শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রী এম.এ.মান্নান। তাঁরা লংগদু গিয়ে মানুষের বুক ফাটা কান্না আর আহাজারী দেখে হত্যাকারীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোকে পুনর্বাসন করার। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সন্তানদের লেখা পড়ার দায়িত্ব নেয়ার প্রতিশ্রুতিও তারা দিয়েছিলেন।

লংগদু থেকে ফিরে আসার পর তৎকালিন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সুলতান মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই কমিটি ৩১ অক্টোবর ৯৬ ইং বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি।

বক্তারা আরো বলেন পার্বত্য চট্টগ্রামে সংগঠিত কোন হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার না হওয়াতে সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে, বর্তমানেও তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ করছে না, মানুষ খুন করা বন্ধ করছে না। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করার জোর দাবী জানান । অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা না হলে সন্ত্রাসীরা এবারও সশস্ত্র তৎপরতার মাধ্যমে গত বারের মত এবারও ২৯৯নং আসনটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে। তাই নির্বাচনের আগ মুহুর্তে দ্রুত চিরুনী অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করার মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের নিরীহ জনগণের জান মাল রক্ষার পাশাপাশি এবারের নির্বাচনে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বন্ধে সরকারের কাছে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবী জানান।

পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদের দপ্তর সম্পাদক তানভীর ইসলাম প্রেরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।

রাঙামাটি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions