রাঙামাটিতে
জোর পূর্বক গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটার প্রদান বন্ধসহ ১৬দফা দাবিতে সুজনের স্বারকলিপি
প্রকাশঃ ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৩:২৩:৫১
| আপডেটঃ ০১ জানুয়ারী, ২০২৫ ১১:২৮:৩৫
|
২৮৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। জোর পূর্বক গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটার প্রদান কার্যক্রম বন্ধসহ প্রিপেইড মিটার নিয়ে গ্রাহকদের ভোগান্তি নিরসনে ১৬দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে প্রদান করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন রাঙামাটির নেতৃবৃন্দ।
রবিবার সকালে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের কার্যালয়ে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপি পেশকালে উপস্থিত ছিলেন সুজন রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি এড্যা. দীননাথ তঞ্চঙ্গ্যা, সম্পাদক এম জিসান বখতিয়ার, সুজন সদর উপজেলার সভাপতি পলাশ কুসুম চাকমা, সম্পাদক শংকর হোড়, পৌর কমিটির সভাপতি ইন্দ ্রদত্ত তালুকদার, সম্পাদক মো. এরফানুল হক রুমেল, সুজন বন্ধু জেলা কমিটির সভাপতি মিশু দে প্রমুখ।
বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষে স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দীন, সহকারী প্রকৌশলী খন্দকার রোকনুর জামান, উপ সহকারী প্রকৌশলী রঞ্জু আহমেদ।
স্মারকলিপিতে সুজন নেতৃবৃন্দরা জানান, পূর্ববর্তী সরকার দেশকে ডিজিলাইজেশনের নামে ঘরে ঘরে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাঙামাটি পৌর এলাকায় প্রথম দিকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হয়। বর্তমানে পৌর এলাকায় বাসাবাড়িতে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পৌর এলাকার দুই-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ গ্রাহককে ইতোমধ্যে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হয়েছে। প্রিপেইড মিটার স্থাপনের পর গ্রাহকদের বিভিন্ন অভিযোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনা জরুরি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর পক্ষ থেকে গ্রাহকদের বিভিন্ন অভিযোগ ও দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হয়েছে। এই সকল অভিযোগ করা ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ^াস দিয়েছেন এবং জোর পূর্বক প্রিপেইড মিটার প্রদান না করার কথা জানিয়েছেন।
সুজন নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপকালে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দীন জানান, আমরা এইসব দাবি প্রজেটিভলি গ্রহণ করেছি। সমস্যাগুলো সমাধানে কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। গ্রাহকদের জোর পূর্বক প্রিপেইড মিটার প্রদান করা হচ্ছে না। তাদের সাথে আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে কাজ করছি।
সুজনের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত অভিযোগ ও দাবি গুলো হচ্ছে:
১. জোর পূর্বক প্রিপেইড মিটার নিতে বাধ্য করা বন্ধ করতে হবে।
২. প্রিপেইড মিটার না নিলে লাইন কাটা বন্ধ করতে হবে।
৩. লোড বাড়ানোর জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
৪. প্রতি মাসে মিটারের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে, এটা কত মাস পর্যন্ত নেয়া হবে তা গ্রাহককে জানিয়ে দিতে হবে।
৫. প্রিপেইড মিটারের গ্রাহককে সকল সেবা নিতে বিদ্যুৎ অফিসে যেতে হয়, এমন অভিযোগ যা কোনভাবেই কাম্য নয়।
৬. যে কোনও কারণে লাইনে টান পড়লে মিটার লক(বন্ধ) হয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
৭. মিটারের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেলে ব্যাটারি স্থাপনে গ্রাহককে চার্জ প্রদান করতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে একটি মিটার কতদিন পর্যন্ত ওয়ারেন্টি/গ্যারান্টি থাকবে সেটা গ্রাহককে জানিয়ে দিতে হবে।
৮. মিটার নষ্ট হলে গ্রাহককে পুনরায় ৭/৮ হাজার টাকা দিয়ে মিটার স্থাপন করতে হয়। সেক্ষেত্রে পুনরায় মিটারের প্রতিমাসের ভাড়া কাটা হচ্ছে।
৯. লোড/কিলো কমানোর সুযোগ দিতে হবে।
১০. কোনও প্রকার পূর্ব নোটিশ বা ঘোষণা ছাড়া মিটার লক করে দেওয়া বন্ধ করতে হবে। যেকোনও অভিযোগের বিষয়ে গ্রাহককে আগেভাগেই জানাতে হবে।
১১. প্রিপেইড মিটারের ক্ষেত্রে বিল বেশি কাটার অভিযোগ রয়েছে।
১২. রিচার্জের তিন ঘণ্টার মধ্যে পুনরায় রিচার্জ করতে না পারার নিয়ম পরিবর্তন করতে হবে।
১৩. প্রাথমিক পর্যায়ে যে সকল মিটার লাগানো হয়েছিল, সেসব মিটারে এনালগ পদ্ধতিতে নাম্বার দিয়ে ইউনিট ক্রয় করতে হচ্ছে। সব প্রিপেইড মিটারে সরাসরি টাকা ঢুকানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
১৪. মিটারে কত টাকা আছে সেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইলে জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
১৫. নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বাক্ষর প্রয়োজন যা গ্রাহকরা খুঁজেই পাচ্ছে না। যার কারণে বেশি টাকায় গ্রাহকদের চুক্তিতে যেতে হয়।
১৬. প্রিপেইড মিটার নেয়ার প্রায় এক বছর পর আগের বকেয়া বিল রয়েছে বলে গ্রাহকদের কাছে বিল পাঠানো এবং সেটা দিতে অপারগতা দেখালে মিটার লক করে দেয়া হচ্ছে। অন্তত মিটার স্থাপনের ক্ষেত্রে কোনও বকেয়া থাকলে সেটা আগেই গ্রাহককে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দিতে হবে।