হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নে
কাপ্তাই হ্রদের অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দিচ্ছে প্রশাসন
প্রকাশঃ ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩ ১২:১৩:২২
| আপডেটঃ ০১ এপ্রিল, ২০২৩ ০৭:৫৭:১৭
|

২৯২
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের ওপর গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযানে নেমেছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চালায় প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্বে দিয়েছেন রাঙামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা বিনতে আমিন। অভিযানে জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইনামুল হাসান এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিজয় কুমার জোয়ার্দার উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অভিযানে রাঙামাটি জেলা শহরের আসামবস্তি বাজার ও ব্রাহ্মণটিলা এলাকার ১০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও গুড়িয়ে দেয়া হয়। অবৈধ স্থাপনার মধ্যে ৫টি দোকান, ৪টি বসতঘর এবং একটি নির্মাণাধীন পাঁকা অবকাঠামো রয়েছে। এসব স্থাপনাগুলোর সব’কটিই কাপ্তাই হ্রদের ওপর অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। এদিকে, উচ্ছেদ অভিযান থেকে হ্রদ তীরবর্তী ও হ্রদের ওপর স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের ম্যজিস্ট্রেটরা। আগামীকালও (বুধবার) প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযানে নামার কথা রয়েছে। এরআগে গত সোমবার জেলা শহরের পাবলিক হেলথ্ এলাকায় হ্রদের ওপর নির্মাণাধীন একটি বসতঘর গুড়িয়ে দেয়া হয়।
এদিকে, উচ্ছেদ অভিযানের পাশাপাশি জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি এলাকায় কাপ্তাই হ্রদের ওপর সকল প্রকার অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। পাঁচটি এলাকার মধ্যে রয়েছেÑ রিজার্ভবাজার, উন্নয়ন বোর্ডঘাট, ফিসারিঘাট, তবলছড়ি ও আসামবস্তি। সাইনবোর্ড স্থাপন করেছেন রাঙামাটির জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ। এসময় জেলা পুলিশ-প্রশাসনের এই দুই শীর্ষকর্মকর্তার সঙ্গে অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (রাজস্ব) এসএম ফেরদৌস ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাসরীন সুলতানা, অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জাহেদুল ইসলাম ও কোতোয়ালী থানার ওসি আরিফুল আমিনসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে আড়াই ঘন্টা অভিযান চালিয়ে কাপ্তাই হ্রদের ওপর নির্মাণাধীন দশটি অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে এবং শহরের পাঁচটি এলাকায় হ্রদের ওপর অবৈধ স্থাপনা তৈরিতে নিষেধাজ্ঞা জানিয়ে সাইনবোর্ড দেয়া হয়েছে। জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসাবে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর একটি রিটের প্রেক্ষিতে দেশের একমাত্র কৃত্রিম জলাধার রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে অবৈধভাবে দখল বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে কাপ্তাই হ্রদে আর যেন কোন মাটি ভরাট বা স্থাপনা নির্মাণ না করা হয় সে ব্যাপারে কার্যকরি ব্যবস্থা নিতে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং পুলিশ সুপার (এসপি)সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি অপর এক আদেশে কাপ্তাই হ্রদের জরিপ করে অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক কাপ্তাই হ্রদে অবৈধ দখল বন্ধে উচ্ছেদ অভিযান ও সাইনবোর্ড টাঙানো হচ্ছে- এমনটাই জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।