কাউখালী প্রেস ক্লাবের সদস্য পদ থেকে মো.ওমর ফারুককে বহিষ্কার পাহাড়ের কৃতি খেলোয়ার ঋতুপর্ণা চাকমাকে কে সংবর্ধনা দিলো কাউখালী বিএনপি বান্দরবানে শীতার্থদের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে শীতবস্ত্র দিলো আশা খাগড়াছড়িতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অগ্নিদগ্ধ রোগীর আত্মহত্যা চাকরী পুনঃবহাল ও ক্ষতিপূরণের দাবীতে বিডিআর সদস্য-পরিবারের মানববন্ধন
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পার্বত্য চট্টগ্রামে ১১টি ভাষাভাষীর ১৪ টি জাতিসত্তা বসবাস। এসব পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব ভাষা, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। পাহাড়ি এসব জনগোষ্ঠী নারীদের প্রধান ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক পিনন-হাদি। এই পোশাকগুলো নিজ নিজ সম্প্রদায়ের পরিচয় বহন করে। চাকমাদের কাছে এটি পিনোন-হাদি আর ত্রিপুরাদের কাছে ভাষায় রিনাই-রিসা নামে পরিচিত। ছোট বড় বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি পাহাড়ের প্রধান উৎসব বিজু, বৈসু, সাংগ্রাই, বিহু (বৈসাবি) উপলক্ষে পাহাড়ি নারীদের পছন্দের তালিকায় প্রথমে থাকে এই পিনন-হাদি।
পাহাড়ি নারীদের ঐতিহ্যবাহী এই পরিধেয় বস্ত্রের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। রাঙামাটি শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা বনরুপা বাজারে সপ্তাহে দুদিন শনি ও বুধবারে জমজমাট বাজার বসে এই পিনন-হাদি'র। নানা ডিজাইনের পিনন-হাদি নিয়ে খুব ভোরে বিক্রি করতে আসেন বিভিন্ন দূর-দূরান্ত থেকে বিক্রেতারা। ঐতিহ্যবাহী এই পরিধেয় বস্ত্রের চাহিদা দিন দিন বাড়তে থাকায় এখন এই পিনন-হাদি চট্টগ্রাম ও ঢাকার গন্ডি পেরিয়ে রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। এই পিনন-হাদি বিক্রি করে চলছে অনেক পাহাড়ি নারীদের জীবন-জীবিকা।
সম্প্রতি রাঙামাটির বনরুপা বাজার ঘুরে দেখা যায় নানা ডিজাইনের সারি সারি ভাবে সাজানো পিনন-হাদি বিক্রি করছেন পাহাড়ি নারী বিক্রেতারা। একজোড়া পিনন-হাদি বিক্রি হয় সর্বোনিম্ন ৩ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ত্রিশ হাজার হাজার টাকা পর্যন্ত।
বিক্রেতা আলো রানী চাকমা বলেন, এখানে আমাদের সপ্তাহে দুই দিন পিনন-হাদির বাজার বসে। সামনে বিজুর উৎসব আসে সে উপলক্ষে পিননের চাহিদাও বেড়েছে। একেকটা পিননের দাম একেকটা কোয়ালিটির উপর বিক্রি করি। সর্বোচ্চ ৩০ হাজার, ৪ হাজার ও সাড়ে চার হাজার টাকার দামে পিনন রয়েছে। আমরা কাস্টমার যে দামে পায় সে দামে বিক্রি করি।
নিরালা চাকমা বলেন, গ্রামে কারিগর থেকে কিনে আমরা এখানে খোলা বাজারে সপ্তাহে শনি ও বুধবারে বাজার দিনে বিক্রি করি। মোটামুটি ভালো বিক্রি হয়। অনেকে আমাদের থেকে পাইকারি দরে কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বিদেশেও নিয়ে যায়।
কল্পনা চাকমা বলেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পিনন হাদি গুলো দেশে বিদেশে অনেক জায়গায় আমাদের এখান থেকে পাইকারি কিনে নিয়ে যায়। আমাদের ব্যবসার পাশাপাশি আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতেছি। আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকগুলো দেশ বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে এটার জন্য আমাদের খুব ভালো লাগে। তবে আমাদের এখানে ভালো একটা সুবিধামতো বসার জায়গা না থাকায় আমাদের খোলা বাজারে বিক্রি করতে হয়। এছাড়া আমাদের ব্যবসা করতে অনেক টাকা দরকার। কিন্ত সেরকম আমাদের কোন সহযোগিতা বা কোন ঋণ আমরা পাই না। নিজেদের জমানো টাকা দিয়ে কোন রকম আমরা ব্যবসাটা চালিয়ে যাচ্ছি।
উন্নয়ন কর্মী নুকু চাকমা বলেন, যারা পিনন-হাদি বিক্রির সাথে জড়িত তারা যদি নিদিষ্ট একটা জায়গায় বসে সেটা বিক্রি করতে পারে। তাহলে যারা পর্যটক বা ক্রেতা আসে তারা খুব সহজে এটা সংগ্রহ করতে পারবে বলে আমি মনে করি।
বিসিক রাঙামাটি জেলা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যস্থাপক মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন,বর্তমানে আমাদের কোন প্রকল্প না থাকায় ফ্রিতে যন্ত্রপাতি বিতরণ ও বিনা সুদে ঋন দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আমরা প্রশিক্ষন দিয়ে তাদেরকে লোনের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংকে সুপারিশ করতে পারি। আমাদের যে ঋণের কার্যক্রম আছে সেটি খুব সীমিত।