চট্টগ্রামে আইনজীবি হত্যার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে আইনজীবিদের মানববন্ধন নাশকতার মামলায় নাইক্ষ্যংছড়ির দুই ইউপি চেয়ারম্যান জেল হাজতে গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে লংগদুতে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত বান্দরবানে আওয়ামী লীগের ৪৮ নেতাকর্মীর জামিন লংগদু-দীঘিনালার মনের মানুষ এলাকায় আগুনে বসতঘরসহ পুড়ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
সিএইচটি টুডে ডট কম, লংগদু (রাঙামাটি)। একজন মানুষ গড়ার কারিগর যখন একের পর এক নারী কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত হচ্ছে, সেখানে এখনো তিনি কিভাবে বহাল তবিয়তে আছে? এমন প্রশ্নে ক্ষোভ প্রকাশ করছে সচেতন শিক্ষক মহল ও জনসাধারণ।
বলছিলাম পার্বত্য জেলা রাঙামাটির অন্যতম লংগদু উপজেলার প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ফোরেরমুখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীতি চাকমার কথা।
এসব অনৈতিক কার্মকাণ্ড ও নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় শিক্ষক সমাজ লাঞ্ছিত হওয়ায় গত (২৪ ডিসেম্বর) রবিবার সকাল ১১টায় লংগদু উপজেলা প্রধান শিক্ষক সমিতির আয়োজনে, সমিতির সহ-সভাপতি ও ঝর্ণাটিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে একটি জরুরী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মো. আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় শুরুতেই বক্তব্য রাখেন, সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীর শাহ আলম চৌধুরী। এসময় প্রধান শিক্ষক সমিতির অধিকাংশ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সকলের মতামতের ভিত্তিতে কেলেঙ্কারির প্রধান শিক্ষক সুনীতিকে লংগদু উপজেলা প্রধান শিক্ষক সমিতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সভায় একই সময় অত্র সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি আটারকছড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্যান মিত্র চাকমাকে সভাপতির পদে দায়িত্ব দেয়া হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, সুনীতি চাকমা তিনি গত ৬ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার আটারকছড়া এলাকার পাহাড়ী পাড়ায় এক উপজাতি গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করলে স্থানীয় জনতার হাতেনাতে ধরা পড়ে এবং গণপিটুনিতে আহত হয়।
পরবর্তীতে এবিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামের মুরব্বিদের কথামত সমাধান করা হয়। যা আমরা স্থানীয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগেও তিনি রাঙামাটি সদরে কলেজ গেইট এলাকায় মোটেল জর্জ এবং হোটেল মেহেদীতে মেয়ে নিয়ে জনতার হাতে আটক হয়। তার এমন অনৈতিক কর্মকান্ডে আমাদের শিক্ষক সমাজের মাথা নত হয়েছে বিধায় তাকে তার পদ এবং সমিতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে কথা হয় স্থানীয় ভবৌতোষ চাকমার সাথে, তিনি জানায় ঘটনার দিন আমাকে বলেছিলো আমি যাইনি। সুনীতির এমন অনৈতিক কর্মকান্ডের কথা সবাই জানে। ঘটনাটি সত্য, তবে শুনেছি পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে সমাধান হয়েছে।
আটারকছড়া ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য যতীন বিকাশ চাকমা বলেন, ঘটনা সত্য। সেদিন তিনি পাবলিকের হাতে ধরা পড়লে স্থানীয়দের মাধ্যমে এটা সমাধান করে নেওয়া হয়।
কেলেঙ্কারি এবং অব্যাহতির বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সুনীতি চাকমা বলেন, সমিতি থেকে যে কেউ চাইলে আমাকে অব্যাহতি দিতে পারেনা। অব্যাহতি দিতে হলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে দিতে হবে। গত (৬ ডিসেম্বর) এর ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ছিলো একটা ষড়যন্ত্র, আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার এমকে ইমাম উদ্দীন বলেন, ঘটনা শুনেছি তবে এ সম্পর্কে আমাদের কাছে কোন লিখিত অভিযোগ এখনো আসেনি। কেউ অভিযোগ করলে অবশ্যই আমরা সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। আর প্রধান শিক্ষক সমিতি বা সহকারী শিক্ষক সমিতির সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নাই। এটা সম্পূর্ণ তাদের বিষয়।
তবে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক ও বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে। শিক্ষক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থা ও সম্মানের চোখে থাকে। যাদের মাধ্যমে আগামী প্রজন্ম হবে সুশিক্ষিত। অনেকেই তার এমন কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে দ্বিধাবোধ করছেন।