সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। আজ বৃহস্পতিবার রাঙামাটিতে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার(এম এন লারমা) ৩৯ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়েছে।
জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত শোক সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গৌতম কুমার চাকমা। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা শাখার সভাপতি ডা. গঙ্গামানিক চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের পার্বত্যাঞ্চল শাখার সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, এম এনলারমার মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি অ্যাড. ভবতোষ দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির রাঙামাটি জেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক আশিকা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রাঙামাটি সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সাগর ত্রিপুরা নান্টু, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুমন মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক নগেন্দ্র চাকমা।
এর আগে একটি শোক র্যালী জেলা শিল্পকলা একাডেমী চত্বর থেকে শুরু হয়ে বনরুপা পর্ষন্ত গিয়ে পুনরায় শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়ন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ বেদীতে এমএন লারমার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বিকালে প্রদীপ প্রজ্বালন ও ফানুস বাতি উড়ানো হয়। এদিকে, জেলা বাঘাইছড়ি উপজেলার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার উদ্যোগে সারোয়াতলী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের শিজক স্থানে শোক সভা ও এমএন লারমা প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করেন নেতাকর্মীরা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা শাখার ডাঃ সুমতি বিকাশ চাকমা। সংগঠনের উপজেলা শাখার আহবায়ক প্রভাত কুমার চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্যে রাখেন সংগঠনের উপজেলা শাখার সদস্য সচিব নয়ন জ্যোতি চাকমা, ত্রিদিব চাকমা(দীপ বাবু),পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক উদ্দীপন চাকমা, অমূল্য রতন চাকম, সান্তনা চাকমা লক্ষী মালা চাকমা, ও ধন বিকাশ চাকমা।
শোক সভায় বক্তারা বক্তারা বলেন,বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের নেতা ছিলেন এমএন লারমা। অধিকার হারা মানুষের জন্য অধিকারের জন্য সব সময় তিনি সোচ্ছার ছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকার হারা জুম্ম জনগনের আত্ননিয়ন্ত্রনাধিকার নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন। তারই স্বপ্নের অংশ হিসেবে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও দীর্ঘ ২৫ বছরেও চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়িত হয়নি। যদি পার্বত্য চুক্তির পূর্নাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত তাহলে হলে এমএন লারমা স্বপ্ন পুরণ হবে। বক্তারা তাই তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শকে বুকে ধারন করে পার্বত্য চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রামে সামিল হওয়ার আহবান জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ির গভীর জঙ্গলের এক গোপন আস্তানায় জনসংহতি সমিতির বিভেদপন্থী গ্রুপের সশস্ত্র হামলায় এমএন লারমা তার ৮জন সহযোদ্ধাসহ নির্মমভাবে নিহত হন।