সিএইচটি টুডে ডট কম, বাঘাইছড়ি (রাঙামাটি)।এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে একদিকে মৃদু তাপপ্রবাহ, অন্যদিকে ঘন ঘন লোডশেডিং। এ অবস্থা চলছে বাঘাইছড়ি উপজেলা জুড়ে। উপজেলায় সর্বত্রে গ্রামে দিন-রাত মিলে ৬-৮ ঘণ্টারও কম সময় বিদ্যুৎ পাচ্ছেন গ্রাহকরা। অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে জনজীবন।
বাঘাইছড়ি উপজেলার বাসিন্দা আব্দুর সাত্তার নিশাত বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গ্রাহকের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো বিল আদায় করছে। মিটার ভাড়া ও ডিমান্ড চার্জ নিচ্ছে, যা একেবারেই অযৌক্তিক। অথচ সেবার মান নেই। ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করে। এতে গ্রাহকরা নানা সমস্যায় পড়ছেন। লোডশেডিংয়ের কারণে অনেকের ফ্রিজ, টিভিসহ অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জামও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলার বাসিন্দা মো. ইমন বলেন,সারা দেশে বেশকিছু দিন ধরে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। প্রকৃতিতে যেন গ্রীষ্মের তাপদাহ চলছে। তাপদাহে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকার জনজীবন। তবে আমাদের এখানে লোডশেডিং একটি নিত্য ঘটনা। আমরা জানি যে, বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের সরবরাহ কিছু সময়ের জন্য স্থগিত রাখাকে লোডশেডিং বলে। এই ভ্যাপসা গরমে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ মানুষজন।
বাঘাইছড়ি উপজেলার কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী হারুনের অভিযোগ, বিদ্যুৎ একবার গেলে আর আসে না। এ গরমে টিকে থাকা যেন কঠিন হয়ে পড়েছে আর এতেই শুরু হয়ে গেছে অসহনীয় লোডশেডিং। নেই কোনো শিডিউল। ইচ্ছেমতো বিদ্যুৎ নিচ্ছে আর দিচ্ছে। গ্রামে সন্ধ্যা নেমে এলেই লোডশেডিং-এর ধুম পরে যেতো; কিন্তু বর্তমানে দিনরাত মিলে ৫ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকছে না। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। এতে করে লেখাপড়াসহ মানসিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বিদ্যুতের অভাবে ঠিকভাবে পড়াশোনা করতে পারছে না। বাসায় বয়স্ক লোক এবং বাচ্চাদেরও অনেক ভোগান্তি হচ্ছে। বলতে গেলে সর্বস্তরের মানুষই লোডশেডিংয়ের দুঃসহ-যন্ত্রণার শিকার হচ্ছে। একদিকে এতো গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন অন্যদিকে এমন লোডশেডিং বিড়ম্বনা। দিনের বেলা লোডশেডিং মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু রাতের বেলা এ লোডশেডিং কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। এভাবে চলতে থাকলে মানুষ নিমিষেই অসুস্থ হয়ে পরবে। এমনকি তাপমাত্রা কম থাকলে অর্থাৎ বিদ্যুতের চাহিদা কম হলেও গ্রাহক দিন-রাতের লোডশেডিং বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। এমন দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বেশ কয়েক দিন ধরে লোডশেডিং বেড়েছে। লোডশেডিং এর পরিমাণ এতো বেড়েছে যে ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে।
স্থানীয় বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত দীর্ঘদিন যাবৎ ঠাকুরছড়া গ্রীড১৩২/৩৩ কেভি দীঘিনালা লাইনে ফল্ট/ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে ফিডারটি চালু করলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রান্ত সৃষ্টি করে এবং জনসাধারণের অ-সন্তোষ প্রকাশ পায়। বিদ্যুৎ কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে, যৌথ প্রচেষ্টায় মেরামত করে লাইনটি পূনরায় সচল করা সম্ভব হয়। এবং সব লাইন সমূহ চালু করা হয়।।