সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি । গত এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত সেতু। যা রাঙামাটিতে বেড়াতে পর্যটকদের প্রধান আর্কষণ এই সেতুটি। এদিকে সেতুটি ডুবে যাওয়ায় আবারও ক্ষতির মুখে পড়ার শঙ্কা ব্যবসায়ী ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে পানি বেড়ে গিয়ে সেতুর পাটাতনের থেকে ৬ ইঞ্চির উপরে পানি উঠে যায়। ফলে শুক্রবার(২৩ আগস্ট) সকাল থেকে সেতুর উপর দিয়ে পর্যটক চলাচলের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পর্যটন কর্তৃপক্ষ। বন্ধ রাখা হয়েছে পর্যটনে প্রবেশের টিকিটও।
রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, উজানে পানি বেড়ে যাওয়ায় পর্যটক কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত সেতুটি প্রায় ছয় ইঞ্চি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বর্তমানে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সেতুর উপর চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। দ্রুত পানি কমে গেলে আগের মতো আবারো দর্শনার্থীদের জন্য সেতুটি খুলে দেয়া হবে।
১৯৮৩ সালে রাঙামাটি শহরের শেষ প্রান্তে তবলছড়ি এলাকায় দুই পাহাড়ের মাঝে সেতুটি নির্মাণ করে পর্যটন কর্পোরেশন।
এদিকে, রাঙামাটির কাপ্তাই জল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের জানান, শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে হ্রদে পানির উচ্চতা রয়েছে ১০৬ দশমিক ০৬ ফুট এমএসএল। যা কাপ্তাই হ্রদে সর্বোচ্চ পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট এমএসএল (মিন সি লেভেল)। সাধারণত পানির উচ্চতা ১০৮ ফুট এর বেশি হলে তখন আমরা গেইটগুলো খুলে দিয়ে থাকি।
বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলায় বন্যার পরিস্থিতি উন্নতিঃ
রাঙামাটির দুই উপজেলার বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলায় বন্যার পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানি নামতে শুরু করেছে। শুক্রবার সকাল থেকে আশ্রয় কেন্দ্র গুলো থেকে লোকজন বাড়ি ফিরে গেছে। বেশীরভাগ এলাকার বাড়ি-ঘর ও সড়ক হতে পানি নেমে গেছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার ও লংগদু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম নিজ নিজ উপজেলার বন্যার উন্নতির বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন।
সাজেকে যানচলাচল স্বাভাবিক; তিন দিন পরে সাজকে আটকে পড়া পর্যটকরা ফিরছেনঃ
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা সাজেক পর্যটক কেন্দ্রে যাওয়ার সড়কে বৃষ্টিপাতে ও পাহাড়ি ঢলে ডুবে যাওয়া বাঘাইহাট-সাজেক সড়কের পানি সরে যাওয়ায় সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এ সময় সাজেকে আটকা পড়া আড়াই শতাধিক পর্যটক সাজেক পর্যটন কেন্দ্র থেকে ফিরে গেছেন। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকালে ১১টার দিকে পর্যটকবাহী গাড়িতে করে সাজেক থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দেশে ছেড়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবারে সাজেকে বেড়াতে গিয়ে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাচালং ও মাচালং নদীর পানি বেড়ে বাঘাইহাট-সাজেক সড়কের বাঘাইহাট এলাকায় দুটি স্থান এবং মাচালং বাজার ডুবে যায়। এতে এই সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে পর্যটকেরা সাজেকে আটকা পড়েন।
সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ জানান, সকালে আটকা পড়া পর্যটকেরা সাজেক থেকে পর্যটকবাহী গাড়িতে করে চলে গেছেন। আটকা পড়া পর্যটকরা গতকয়েক দিন ছিলেন, তাদের থেকে কোনো কক্ষের ভাড়া না নিয়ে শুধু পানির বিল নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।