মঙ্গলবার | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
এক ফসলি জমি হচ্ছে তিন ফসলি !

সংরক্ষিত পানিতে হবে সেচ সংকট নিরসন

প্রকাশঃ ৩০ জুন, ২০২৪ ০৩:০১:৩১ | আপডেটঃ ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ০৭:০৪:৩১  |  ২৬৩
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটি জেলা কাপ্তাই হ্রদবেষ্ঠিত হলেও জেলার বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে সুপেয় ও কৃষি জমিতে সেচ পানির সংকট। শুষ্ক মৌসুমে জেলার বিভিন্ন প্রান্তিক এলাকায় সুপেয় পানির সংকট দেখা দেয়। এছাড়া পানি সংকটের কারণে কৃষি জমিতে সেচ ব্যবস্থাপনার অভাবে ব্যাহত হয় চাষাবাদ। সারাদেশের মতো পার্বত্য এলাকাতেও ‘টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প’ হাতে নিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রকল্পটির অধীনে রাঙামাটি জেলার লংগদুর পাঁচটি গ্রামের কৃষকরা হয়েছেন উপকারভোগী। এক ফসলি জমি এখন পরিণত হচ্ছে তিন ফসলি জমিতে। পাহাড়ি খালে পাঁকা ওয়্যার নির্মাণ করে সেখানে পানি সংরক্ষণ করে সেই পানি দিয়ে হবে বছরজুড়ে চাষাবাদ। এতে করে ৫ গ্রামের ৩১০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদে সেচ সংকট ঘুচলো।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ‘টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প’র অধীনে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত যুবলক্ষী পাড়া রাজনগর খালে সেচ সংকটে নিরসনের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। প্রকল্পটির অধীনে ইউনিয়নের যুবলক্ষী, রাজনগর, রহমতপুর, শান্তিপুর ও মোহাম্মদপুর গ্রামের ৪০০ হেক্টর কৃষি জমির ৩১০ হেক্টর জমি সেচ ব্যবস্থাপনার আওতায় এসেছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে নতুন করে আরও ১২০ হেক্টর জমি চাষাবাদের আওতায় আসে। ৬ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন ও দুইটি ওয়্যার (পানি সংরক্ষণের বিশেষ বাঁধ) নির্মাণের ফলে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি সব সময়ই খালে সংরক্ষিত থাকবে। এতে করে স্থানীয় কৃষকরা বছরজুড়ে আমন, বোরো ও রবিশস্য আবাদ করতে পারবেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নেয়া প্রকল্পটির মোট ব্যয় খরচ হয়েছে ১ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রকল্পের সুবিধাভোগী এলাকায় ১৯০ হেক্টর কৃষি জমিতে সেচ সংকটের কারণে আমন, বোরো ও রবি মৌসুমে শস্যসহ বিভিন্ন শাক-সবজি উৎপাদনে সেচ সংকটের কারণে ফসলের আশানুরূপ ফলন পাওয়া যেত না। পানি সংকটেরে কারণে ছিল সেচ ব্যবস্থাপনার সংকট। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে ১৯০ হেক্টরের সঙ্গে নতুন করে আরও ১২০ হেক্টর কৃষি জমিতে চাষাবাদের উপযোগী হয়েছে। এছাড়া খাল পুনঃখনন এবং পানি সংরক্ষণের সুবির্ধাতে ওয়্যার নির্মাণের ফলে বছরজুড়ে নির্দিষ্ট পরিমাণের পানি সংরক্ষিত থাকবে। খাল খননে বেড়েছে খালের পানি ধারণ সক্ষমতাও। এছাড়া সেচ প্রকল্পটি দেখভালের জন্য ‘যুবলক্ষী রাজনগর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামে তৈরি করা হয়েছে একটি সমিতিও।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী আহামদ শফি বলেন, ‘কৃষি জমিতে সেচ পানির সংকট নিরসনে আমরা একটি প্রকল্প গ্রহণ করি। প্রকল্পটির অধীনে দুইটি ওয়্যার ও ৬ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন করা হয়েছে। এতে করে স্থানীয় পাঁচটি গ্রামের মানুষের কৃষি জমিতে চাষাবাদে সেচ সমস্যার সমাধান হলো। পূর্বের ১৯০ হেক্টর জমির সঙ্গে নতুন করে আরও ১২০ হেক্টর চাষাবাদের আওতায় এসেছে। এক ফসলি জমি তিন ফসলি জমিতে রূপান্তরিত হয়েছে। আগে গ্রামের মানুষ বহুকষ্টে পাম্প দিয়ে সেচ দিলেও পর্যাপ্ত পানির সুব্যবস্থা ছিল না। এখন খালটিতে বছরজুড়ে পানি সংরক্ষিত থাকবে। আবার এই প্রকল্পটি দেখভালের জন্য স্থানীয়ভাবে একটি সমিতি গঠন ও সমিতির অফিস ঘরসহ আসবাবপত্র দেয়া হয়েছে।’

যুবলক্ষী রাজনগর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান শামীম বলেন, ‘আগে বছরজুড়ে এই কৃষি জমিগুলোতে সেচ পানির সংকট ছিল। এখন খাল পুনঃখনন ও দুইটি ওয়্যার নির্মাণের ফলে পানির সংকট অনেকটাই কমে আসবে। বছরজুড়ে পানি পাওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়ায় গ্রামের মানুষ আমন, বোরোসহ অন্যান্য শাক-সবজি চাষাবাদ করতে পারবেন। এতে করে উপকারভোগী গ্রামের কৃষকরা অনেক উপকৃত হলেন।’


রাঙামাটি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions