চাকরী পুনঃবহাল ও ক্ষতিপূরণের দাবীতে বিডিআর সদস্য-পরিবারের মানববন্ধন ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে রাঙামাটিতে তৌহিদী মুসলিম জনতার বিক্ষোভ নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার: -ধর্ম উপদেষ্টা রাঙামাটিতে বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিষ্ট্যান্স সচেতনামূলক সপ্তাহ পালন বান্দরবানের ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালককে অপসারণের দাবি
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি জেলা শহরের ট্রাইবাল আদাম বটগাছ তলার সেই শতবর্ষী বটবৃক্ষ বাঁচাতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন স্থানীয়রা। জেলা তথ্য অফিসের স্থায়ী ভবনের জন্য প্রস্তাবিত ভূমিটি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয় ট্রাইবাল আদাম বটতলা এলাকায়। যদিও অবকাঠামো নির্মাণে স্থানীয়দের আপত্তি না থাকলেও বটগাছটি কাটতে দেবেন না স্থানীয়রা। এ পর্যন্ত কয়েক দফায় ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরেও ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়েন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ট্রাইবাল আদাম বটগাছ তলায় যান জেলা প্রশাসনের অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জোবাইদা আক্তার, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিজয় কুমার জোয়ার্দার, রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জাহেদুল ইসলাম ও কোতোয়ালি থানার ওসি মুহাম্মদ আলী প্রমুখ। এসময় স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়েন পুলিশ-প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এসময় স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের দাবি মন্ত্রণালয়ে জানাবেন বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন এডিএম জোবাইদা আক্তার। এছাড়া সাংবাদিকদের ছবি ও ভিডিও করতেও বাধা প্রদান করেন পুলিশ কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ট্রাইবাল আদাম এলাকার বাসিন্দা রিনা চাকমা, গীতা চাকমা ও মুনা চাকমার মালিকানাধীন ভূমিটি তথ্য অফিসের স্থায়ী ভবনের জন্য অধিগ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের মধ্যে বিষয়টি জানাজানির পর থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী। পরে শ্রমিকরা শতবর্ষী বটগাছটি কাটার জন্য গিয়েও বাধার মুখে পড়েন।
স্থানীয়দের একটাই দাবি, অফিস ভবন নির্মাণে আপত্তি না থাকলেও শতবর্ষী বটগাছটি তারা কাটতে দেবেন না। যে গাছটি দীর্ঘকাল ধরে স্থানীয়দের ছায়া ও অক্সিজেন দিয়ে আসছে সেটির গায়ে আঘাত দিতে দেবেন না। এছাড়া স্থানীয়রা বটগাছটিকে পূজাও করে থাকেন।
ট্রাইবাল আদাম এলাকার বাসিন্দা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের সভাপতি সদানন্দ চাকমা জানান, ‘শত বছরের বটগাছটি কেটে ফেলতে একপক্ষ কাজটি করতেছে। এই গরমের দিনে স্থানীয়রা এখানে এসে বিশ্রাম নেন। বটগাছটি নিয়ে স্থানীয়দের অনেক-আবেগ অনুভূতি রয়েছে। আমরা প্রশাসনকে দাবি জানিয়েছে, আমাদের একটাই কথা এই বটগাছ কাটতে দেব না।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা অভয় প্রকাশ চাকমা বলেন, ‘বটতলার বটগাছটি অনেক পুরনো। এটি পুরো এলাকার মানুষের জন্য একটা প্রশান্তির জায়গা। এভাবে গাছটি আমরা কেটে ফেলতে দেব না।’
স্থানীয়রা বলছেন, শতবর্ষী বটগাছ কবে কখন কে লাগিয়েছিলেন; তাদের কারোই জানা নেই। দিনে-দিনে বটবৃক্ষের লতা, শাখা-প্রশাখা ছড়িয়েছে বটতলা এলাকাজুড়ে। স্থানীয় হিন্দু ও বৌদ্ধা ধর্মাবলম্বীরা বছরের বিভিন্ন সময়ে বটগাছটিকে পূজা করেন। ওই এলাকার মানুষের অক্সিজেন ও ছায়া দিয়ে আসছে এই শত বছরের প্রাচীন বৃক্ষটি।
রাঙামাটি পৌরসভার কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন বলেন, ‘এই বটগাছটি শত বছরের; গাছটির কারণে এই এলাকাকে সবাই বটতলা নামে চেনেন। বটগাছটা পুরো এলাকার আশ্রয়স্থলের মতো। বিশাল অংশজুড়ে ছায়া দেয়। শুনেছি এটা অধিগ্রহণ হয়েছে একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য। এলাকাবাসীর কথা গাছটি যদি কেটে ফেলে স্থানীয়দের ছায়া বসে বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা থাকবে না।’
এদিকে, স্থানীয়দের প্রতিরোধে মুখে ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জোবাইদা আক্তার জানান, ‘স্থানীয়দের বটগাছ কাটতে বাধা দেওয়ার বিষয়টি তিনি মন্ত্রণালয়ে জানাবেন।’