শনিবার | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

কাপ্তাই লেকের পাড়ে কোন জায়গা বন্দোবস্তী দেয়ার কথা ছিলো না : গৌতম দেওয়ান

প্রকাশঃ ২৯ জুন, ২০২২ ০৯:৫০:৩৫ | আপডেটঃ ২০ এপ্রিল, ২০২৪ ০৩:২৭:২১  |  ৮৫৯
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেছেন, আমি যখন দায়িত্বে ছিলাম তখন অলিখিত একটি সিদ্ধান্ত হয়েছিলো পর্যটনের সৌন্দর্য্য রক্ষার্থে কাপ্তাই লেকের পাশে কোন স্থাপনা, বাসা, সরকারি বেসরকারি কোন ভবন হবে না, যাতে রাঙামাটিতে বেড়াতে এসে পর্যটকরা হ্রদের দৃশ্যে অবলোকন করতে পারেন। আমি যতদিন দায়িত্বে ছিলাম ততদিন এই সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছিলাম, কিন্তু আমি চলে আসার পর সেটি আর থাকেনি। 

বুধবার সকালে রাঙামাটি জেলা পরিষদের এনেক্স ভবনের সম্মেলন কক্ষে “সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল পরিবেশ ও নারী বান্ধব পর্যটন” বিষয়ক একে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

গৌতম দেওয়ান আরো বলেন, পাহাড়ে পর্যটন উন্নয়ন হচ্ছে ঠিক কিন্তু এগুলোর কোন সমন্বয়ন নেই। পর্যটন উন্নয়নে রাঙামাটির চেয়ে খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে এগিয়ে গেছে এটি ঠিক। কিন্তু সেখানে স্থানীয়দের সম্পৃক্ততা নেই। বাইরে থেকে এসে মানুষ পর্যটন ব্যবসা করছে। এতে স্থানীয়রা কোন লাভবান হচ্ছে না। রাঙামাটির সৌন্দর্য্য রক্ষার জন্য প্রশাসনের সমন্বয় দরকার। কিন্তু সে সমন্বয় নেই। এখন পুরো রাঙামাটি শহর একটি ঝুপড়ি শহরে পরিণত হয়েছে। যেদিকে সেদিকে যার ইচ্ছা সে  দখল করছে। এতে কাপ্তাই হ্রদের সৌন্দর্য্য নষ্ট করা হচ্ছে।

তারুম ডেভেলপমেন্ট অগাইজেশনের (টিডিও) এর সহযোগিতায় উইমেন রিসোর্স নেটওয়ার্কের উদ্যোগে  জেলা পরিষদ হলরুমে দিনব্যাপী এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উইমেন রিসোর্স নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী এডভোকেট সুস্মিতা চাকমার সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের পর্যটন বিষয়ক আহবায়ক নিউচিং মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা বেগম ও রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য আছমা বেগম।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন পর্যটন গবেষক তনয় দেওয়ান, ললিত সি চাকমা, কেএমকেএসের নির্বাহী পরিচালক শেফালিকা ত্রিপুরা, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, সাংবাদিক হিমেল চাকমা, চিংমেপ্রু মারমা, হেডম্যান শান্তি বিজয় চাকমা, উন্নয়ন কর্মী ললিত  চাকমাসহ আরো অনেকে। আলোচনা সভা শুরুর আগে সেমিনারের উপর ধারণাপত্র পাঠ করেন রাঙামাটির নারী নেত্রী এনি চাকমা।

আলোচনা সভায় বক্তারা আরো বলেন, জাতীয় পর্যটন নীতি ২০১০ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে পাহাড়ে পর্যটক কর্তৃক বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে।

এগুলো কমিয়ে আনার জন্য পর্যটন নীতিমালা ২০১০ যথাযত কার্যকর বাস্তবায়ন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ১৯৯৭ মোতাবেক পাহাড়ে স্থানীয় জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি কৃষ্টি ঐতিহ্য পরিবেশের প্রতি সংবেধনশীল ও সম্মান প্রদর্শন নারীর প্রতি সহিংসতামুক্ত বৈষম্যহীন পর্যটন ব্যবস্থা গড়ার প্রতি জোর দেন বক্তারা।

সভায় বক্তারা বলেন, কিছু পর্যটক অহেতুক হৈ হুল্লা, পবিত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিধি নিষেধ অমান্য করা, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি- প্রথাকে অসম্মান অগ্রাহ্য করা, বিনা অনুমতিতে আদিবাসীদের অর্থনৈতিক এলাকায় প্রবেশ করা, গোসলের সময় নারীদের ছবি তোলা, নারীকে যৌন হয়রানী করা, বেপোরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটানোর মত ঘটনা প্রতিদিন পরিলক্ষিত হচ্ছে।

এছাড়াও পর্যটনের নামে স্থানীয় অধিবাসীদের বসবাসের জায়গা, অর্থনৈতিক কর্মকান্ড এলাকা, পবিত্র স্থান সরকারী বেসরকারীভাবে দখল করা হচ্ছে। এতে এ এলাকার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রা হুমকির মুখে পড়েছে। যা পাাহড়ি জাতিগোষ্ঠী ও পারিপার্শিক পরিবেশ ভারসাম্য নষ্ট করে চলেছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকারকে এখনই গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখার আহবান জানিয়েছেন বক্তারা।

আলোচনা সভায় ১২ দফা সুপারিশনামা তোলে ধরা হয়।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions