সব চেষ্টা ব্যর্থ করে না ফেরার দেশে চলে গেলো পুস্পা

প্রকাশঃ ০৫ এপ্রিল, ২০১৮ ০২:০৩:২০ | আপডেটঃ ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০১:১৭:৫৩

সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। অল্প সময়ের পৃথিবীতে কার না বেছে থাকতে ইচ্ছে করে, গরীব ধণী সবাই যার যার অবস্থান থেকে নিজেদের মত বাচতে চায়। কিন্তু বিধাতার লীলা খেলায় কেউ বাচে আবার অকালে হারিয়ে যায়।
তেমনি রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী  নাফিজা আক্তার পুস্পা ব্লাড ক্যান্সারের সাথে হেরে গেলেন। বুধবার ভোর ৫টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগের ৩৭ নং ওয়ার্ড  ১০ নং বেডের এতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন( ইন্না লিল্লাহে  ওয়া ইন্না ইলাইহে ---রাজিউন)। পুস্পাকে বাঁচাতে  রাঙামাটি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বাবু ও তবলছড়ি স্থায়ী বাসিন্দা বিশিষ্ট সমাজসেবক ও রাঙামাটি পৌরসভার ষ্টোরকিপার মো.মাকসুদুর রহমান মিটু চিকিৎসার জন্য তহবিল গঠন করেন। দেশ বিদেশ থেকে সাহায্যে সহযোগিতা আসলেও সব চেষ্টা ব্যর্থ করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন পুস্পা। পুস্পার মৃত্যুতে শুধু তাদের পরিবার নয় শোকের বাতাস বইছে এলাকাবাসী ও শুভাকাঙ্খীদের মাঝে।
পৌর কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বাবু ও তবলছড়ি স্থায়ী বাসিন্দা বিশিষ্ট সমাজসেবক তরুণ যুব নেতা মো.মাকসুদুর রহমান  মিটু বলেন, পুস্পাকে বাঁচাতে  অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। দফায় দফায় ক্যান্সার বিভাগের প্রধানসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের উধ্বর্তন প্রফেসারদের সমন্বয়ে বোর্ড গঠন করেও বাঁচাতে পারলাম না নাফিজা আক্তার পুস্পাকে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রফেসারগণ আন্তরিকতার পরিচয় দিয়ে পুস্পার চিকিৎসাসেবা প্রদান করেছেন। পুস্পাকে বাঁচাতে অনেকে আর্থিক সহায়তা,পত্রিকায় লেখালেখিও ফেসবুকে লেখালেখিসহ অনেক সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ক্যান্সার বিভাগের প্রধান ডা.গোলাম রাব্বানী জানান,গত ১৫মার্চ প্রথমে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করি। পরে তাকে ১৮মার্চ মেডিসিন বিভাগ হতে বদলী করে হেমাটোলজি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার ভোর ৫টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগে চিকিৎসারত অবস্থায় পুস্পা মারা যান। পুস্পার ব্লাড ক্যান্সারের পাশাপাশি লিভার আক্রান্ত ছিল সেটি একটি বিরল রোগ যার চিকিৎসা সহজে বাংলাদেশে দিতে পারে না। অনেক চেষ্টার পরও পুস্পাকে বাঁচাতে ব্যর্থ হলাম আমরা।
অটোরিকশা চালক পুস্পার বাবা হানিফও চাচা নুর মোহাম্মদ কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, আমরা গরিব হলেও পুস্পার চিকিৎসাতে কোন অবহেলা ছিল না, কারন পুস্পার চিকিৎসার ব্যাপারে অনেক ভাই বোন সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেষ করা যাবে না। কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বাবু ও মাসুদুর রহমান মিটুর সহযোগিতায় আর্থিক যোগান দেওয়া হয়েছে। যা আমরা বুঝতেও পারিনি। তারপরও বাঁচাতে পারলাম না পুস্পাকে।  পুস্পার জন্য যারা  পরিশ্রম করেছেন তাদের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থী। আপনারা পুস্পার বিদায়ী আতœার মাগফেরাত কামনা করবেন। আমি তার বাবা হিসেবে এই অনুরোধ টুকু রাখলাম।
বাদ জোহর নাফিজা আক্তার পুস্পার নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, এতে অসংখ্য লোকের সমাবেশ ঘটেছে। জানাজা শেষে তাকে তবলছড়িস্থ পারিবারিক করস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।


সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions