প্রকাশঃ ২৯ জুন, ২০১৮ ১০:৩২:৪০
| আপডেটঃ ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ০৩:২৫:৩৯
সিএইচটি টুডে ডট কম, কাপ্তাই (রাঙামাটি)। কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী ডিগ্রী কলেজে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে আবারও। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির নীতিমালা বহির্ভূত বর্ধিত ফি ফেরত দিতে সুষ্ঠ তদন্ত চেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী সহ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এর আগে ছাত্রলীগ সহ ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কলেজ অধ্যক্ষের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি তাদের অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের বিষয়টি মিথ্যা বলে জানান। পরে কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে প্রায় শতাধিক ছাত্রছাত্রী লিখিতভাবে অভিযোগ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার রুহুল আমীনের কাছে।
কাপ্তাই উপজেলা ছাত্রলীগের লিখিত অভিযোগে বলা হয়, কর্ণফুলী ডিগ্রী কলেজে একাদশ শ্রেণীতে কিছু গরীব মেধাবী ছাত্র/ছাত্রী ভর্তি করাতে গেলে জানতে পারে কলেজ কর্তৃপক্ষ বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ফি ১হাজার ১শ পঁচাশি টাকার পরিবর্তে অতিরিক্ত ফি সহ বিজ্ঞান বিভাগে ২হাজার ৯শ ২০টাকা ও ব্যবসায় এবং মানবিক শাখা হতে ২হাজার ৭শ টাকা করে নিয়ে ভর্তি কার্যক্রম চালাচ্ছে।
অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী উপজেলায় খবর নিয়ে নিয়ে দেখা যায়, সেখানকার রাঙ্গুনিয়া মহিলা কলেজের বিজ্ঞান, ব্যবসায় ও মানবিক বিভাগে ১হাজার ১শ টাকা করে নিয়ে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। শুধু তাই নয়, রাঙ্গুনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ভর্তি ফি বাবদ বিজ্ঞান বিভাগে নেওয়া হচ্ছে ২হাজার ৩শ টাকা, ব্যবসায় বিভাগে নেওয়া হচ্ছে ১হাজার ৯শ ৫০টাকা। মানবিক শাখায় নেওয়া হচ্ছে ১হাজার ৯শ টাকা।
এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির যে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকায় ১হাজারের অধিক অর্থ নেওয়া যাবে না। এমনকি রেজিস্ট্রেশনের জন্য ১শ ২০টাকা, ক্রীড়ার জন্য ৩০টাকা, রোভারদের জন্য ১৫টাকা, রেড ক্রিসেন্ট ফি বাবাদ ৮টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফি বাবদ ৭টাকা, বিএনসিসি ফি বাবদ ৫টাকা সহ সর্বমোট ১৮৫টাকা শিক্ষার্থীর থেকে গ্রহণ করতে হবে।
শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে এই নীতিমালার কোনরুপ ব্যত্যয় ঘটানো হলে বেসরকারি কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পাঠদানের অনুমতি বা স্বীকৃতি বাতিলসহ কলেজটির এমপিও ভুক্তি বাতিল করা হবে এবং সরকারি কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের কথা থাকলে কর্ণফুলী কলেজে মানা হচ্ছেনা এই নীতিমালা। নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভর্তি ফি।
কর্ণফুলী কলেজে ভর্তি ফি বাবদ ৫শ টাকা, ভবন ফি ৫০ টাকা, রোভার ফি ৫০ টাকা, স্থাপন ৫০ টাকা, লাইব্রেরী ১০০ টাকা, ক্রীড়া ১০০ টাকা, বিদ্যুৎ ৫০ টাকা, সাংস্কৃতিক ফি ১০০ টাকা, বিদায় অনুষ্ঠানের জন্য ৫০ টাকা, প্রার্থনালয়ের জন্য ৫০টাকা, লাইব্রেরিয়ান ১০০, রেজিস্ট্রেশন ২০০টাকা, অনুদান ৫০০টাকা, অনলাইন প্রক্রিয়াকরণের জন্য ২০০টাকা সহ সর্বমোট ২৭শ টাকা করে নিচ্ছে।
এই বিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এম নূর উদ্দিন সুমন ও সাধারণ সম্পাদক এআর লিমন বলেন, কাপ্তাই উপজেলায় এত বড় দূর্ণীতি কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। এর বিষয়ে কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনের রশীদের বরাবরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধ্যমে অভিযোগ দাখিল করেছি। আশা করছি তিনি খুব দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেনা।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, এই ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক। এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত হবে। আমি রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে মুঠো ফোনে প্রাথমিকভাবে বিষয়টি অবহিত করেছি এবং লিখিতভাবে জানাবো। তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন এই বিষয়ে কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
কর্ণফুলী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ এএইচএম বেলাল চৌধুরী ঘটনা অস্বীকার করে এই প্রতিনিধিকে বলেন, আমি এমন কাজের সাথে জড়িত নই, কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে তাহলে আমাকে যে শাস্তি দেওয়া হবে আমি তা মাথা পেতে নিবো।