সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অত্যন্ত দুর্বল, এ সরকারের অধীনে পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিসত্তাসমূহ অনিশ্চয়তা, আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। দেশের অন্যত্রও অবস্থা সংকটাপন্ন। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও অব্যবস্থার কারণে গার্মেন্টেসের শ্রমিক, পেশাজীবী ও সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষের জীবন ধারণ ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের অপরিণামদর্শী মন্তব্য ও কর্মকাণ্ডের কারণে দেশের অভ্যন্তরে নানা বিতর্ক, সংকট তৈরি হচ্ছে এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কেও টানাপোড়ন চলছে মন্তব্য করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
আজ মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ইউপিডিএফ-এর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জনগণের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত এক বার্তায় দলের সভাপতি প্রসিত খীসা এসব কথা বলেন।
ফ্যাসিস্ট হাসিনা উৎখাত হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হয়নি, বরং ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় বহাল তবিয়তে থেকে আগের মতোই নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে ইউপিডিএফ নেতা জনগণের উদ্দেশ্যে দেয়া বার্তায় মন্তব্য করেন এবং নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রদত্ত বার্তায় তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘১৯-২০ সেপ্টেম্বর ও ১ অক্টোবর দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি ও রাঙমাটিতে সহিংস হামলা, হত্যাকাণ্ড, বৌদ্ধবিহারে লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞের কারণে নিরাপত্তাহীনতায় শঙ্কাগ্রস্ত বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবরদান পার্বত্য চট্টগ্রামে পালিত হয়নি।’
ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্বলতা ও নির্লিপ্ততার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মাদের দৌরাত্ম্য চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন,‘পার্বত্য চট্টগ্রামের বৃহৎ সামাজিক উৎসব বৈসাবি (বৈসুক-সাংগ্রাই-বিঝু...) উৎসবের দিন এসএসসি পরীক্ষার দিন ধার্য করায় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনে অসন্তোষ ও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ব্যাপারে সরকারের উদাসীনতার কারণেই এমন ঘটেছে। নির্বাহী আদেশে বৈসাবি উৎসবের দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হলে, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব হতো না।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে উগ্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদী গোষ্ঠীসমূহের উস্কানিমূলক কথাবার্তা ও আগ্রাসী তৎপরতার ব্যাপারেও প্রদত্ত বার্তায় ইউপিডিএফ নেতা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং দেশের গণতান্ত্রিক শক্তিকে এ ধরনের অপতৎপরতার ব্যাপারে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ভূমিকা এবং ইউপিডিএফ-এর ওপর পরিচালিত অবর্ণনীয় দমন-পীড়নের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘খাগড়াছড়ি ও রঙঙ্গামাটিতে ২৭টি কেন্দ্র ভোটশূন্য করার মাধ্যমে পাহাড়ের জনগণ ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করে দেয়, যা দেশের ইতিহাসে নজীরবিহীন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর তিন গণতান্ত্রিক সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, পাহাড়ি গণপরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের এক যৌথ সম্মেলনে ইউপিডিএফ গঠিত হয়। আগামী ২৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠার ২৬তম বর্ষ পূর্ণ হবে। এ উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ধান কাটা, সেতু নির্মাণ, পাহাড়ি রাস্তার দু’পাশের ঝোপঝাড় সাফ করা এবং পরিবেশ রক্ষার্থে প্লাস্টিক-পলিথিন পুড়িয়ে ফেলার কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।