প্রকাশঃ ১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ০৫:২৪:৫৪
| আপডেটঃ ২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১০:১৮:৪৪
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। এবারও পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে উচ্চমাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় পাসের হার কমেছে। ২০২৪ সালের ঘোষিত এইচএসসির ফলাফলে রাঙামাটিতে পাসের হার ৬০ দশমিক ৫১ শতাংশ। এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০৮ জন। গতবছর (২০২৩ সালে) জেলায় পাসের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩৬ জন। এবার পাসের হার কমেছে ৪ শতাংশেরও বেশি। জিপিএ-৫ কমেছে ২৮।
রাঙামাটি জেলার ৯ উপজেলার ১৯টি কলেজের মধ্যে কেবলমাত্র কাপ্তাই নৌ-বাহিনী স্কুল এন্ড কলেজে শতভাগ পাস করেছে। ১৬৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৩ জন। জেলায় মোট ১০৮ জন শিক্ষার্থী পেয়েছেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এরমধ্যে কাপ্তাই নৌ-বাহিনী স্কুল এন্ড কলেজে ৪৩ জন ছাড়াও রাঙামাটি সরকারি কলেজে ৩৫, লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে ১৮, কাচালং সরকারি কলেজে ৫ ও শিজক কলেজে ৫, কাউখালী সরকারি কলেজে ১ এবং নানিয়ারচর সরকারি কলেজে ১ জন।
উপজেলাভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রাঙামাটি সদরে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ২ হাজার ৩৭৯ জন; পাসের হার ৫৩ শতাংশ ৫১ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৩ জন। কাপ্তাই উপজেলায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ৮৪৪ জন; পাসের হার ৪৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৩ জন। কাউখালী উপজেলায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ৪৬২ জন; পাসের হার ৫৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন। রাজস্থলী উপজেলায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ৩১৩ জন; পাসের হার ৩৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। বরকল উপজেলায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ৯৮ জন; পাসের হার ৯৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। লংগদু উপজেলায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ৩২৭ জন; পাসের হার ৭৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। নানিয়ারচর উপজেলায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ২৩৮ জন; পাসের হার ৫৪ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন। বাঘাইছড়িতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ৯০৫ জন; পাসের হার ৮৯ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ জন। জুরাছড়িতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ৫১ জন; পাসের হার ৯৮ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং অর্থাৎ এই উপজেলায় একজনই কেবল ফেল করেছেন।
এদিকে, রাঙামাটি জেলার ১৯টি কলেজভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রাঙামাটি সরকারি কলেজে পাসের হার ৬০ দশমিক ১৬ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৫ জন। রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজে পাসের হার ৩৫ দশমিক ১৯ শতাংশ। রাঙামাটি পাবলিক কলেজে পাসের হার ৩৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে পাসের হার ৯০ দশমিক ৫৯ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৮ জন। মাউরুম কলেজে পাসের হার ৬২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। কর্ণফুলী সরকারি কলেজে পাসের হার ৩৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। কাপ্তাই নৌ-বাহিনী স্কুল এন্ড কলেজের পাসের হার শতভাগ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৩ জন। কাউখালী সরকারি কলেজে পাসের হার ৫৪ দশমিক ০১ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে একজন। ঘাগড়া কলেজে পাসের হার ৬৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
সৃজনী ট্রাস্ট্র স্কুল এন্ড কলেজে ৩৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। রাজস্থলী সরকারি কলেজে পাসের হার ৩৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। বাঙ্গালহালিয়া সরকারি কলেজে পাসের হার ৩৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। বরকল রাগীব রাবেয়া কলেজে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। লংগদু সরকারি মডেল কলেজে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গুলশাখালী বর্ডার গার্ড মডেল কলেজে পাসের হার ৮৪ দশমিক ২১ শতাংশ। নানিয়ারচর সরকারি কলেজে পাসের হার ৫৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। কাচালং সরকারি কলেজে পাসের হার ৮৪ দশমিক ৪০ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ জন। শিজক কলেজে পাসের হার ৯৫ দশমিক ১৯ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ জন এবং শলক কলেজে পাসের হার ৯৮ দশমিক ০৪ শতাংশ। জেলায় মোট ৫ হাজার ৬৭০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৫ হাজার ৬১৭ জন। পাস করেছে ৩ হাজার ৩৯৯ জন।
এদিকে, ২০২৪ সালের মাদ্রাসা বোর্ডের (আলিম) পরীক্ষায় রাঙামাটিতে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৪০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮ জন। রাঙামাটি সদরের রাঙামাটি সিনিয়র মাদ্রাসার পাসের হার শতভাগ হলেও কোনো জিপিএ-৫ নেই। তবে আল-আমিন ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন। এছাড়া লংগদুর মাইনীমুখ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার পাসের হার ৮৪ দশমিক ২৩ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬ জন।
অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনের পরীক্ষায় জেলায় পাসের হার ৯১ দশমিক ২৫ শতাংশ। তবে কোনো জিপিএ-৫ নেই। রাঙামাটি বিএম ইনস্টিটিউটের পাসের হার ৯১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং রাজস্থলী সরকারি কলেজে পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮২ শতাংশ।
রাঙামাটি সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও শিক্ষাবিদ তুষার কান্তি বড়–য়া বলেন, এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় রাঙামাটির ফলাফল কিছুটা খারাপ হওয়ার পেছনে পরীক্ষার্থীদের এসএসসির ফলাফলের প্রভাবও পড়েছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে সব কিছু পরীক্ষা না হওয়ায় এসএসসির ফলাফলের সঙ্গে সমন্বয় করে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে করে ফলাফলে তার প্রভাব পড়েছে। সবগুলো বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে ফলাফল আরেকটু ভালো হতো আশা করা যায়। এদিকে, একই কথা বলছেন এইচএসসি কৃতকার্য হওয়া অনেক শিক্ষার্থীও। তারা বলছেন, কিছু সংখ্যক পরীক্ষার্থীর দাবির প্রেক্ষিতে সরকার অটোপাসের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সামগ্রিকভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিই হলো।