প্রকাশঃ ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৫:৫১:৩৮
| আপডেটঃ ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ০৭:৪০:০৬
মেহেদী হাসান সোহাগ, সিএইচটি টুডে ডট কম, কাউখালী (রাঙামাটি)। ছিলেন এলডিপির নেতা। আওয়ামী লীগের শাসনামলে ভোল পাল্টিয়ে হয়ে যান যুবলীগ! সহোদর বড় ভাইয়ের ‘আর্শিবাদে’ ভাগিয়ে নেন উপজেলা আওয়ামী লীগের পদও। রাতারাতি ভোল পাল্টানো মনির ঘাগড়া ইউনিয়ন জুড়ে গড়ে তুলেন ত্রাসের রাজত্ব। অথচ দুই দশক আগে কুমিল্লা থেকে আসা ‘নিঃস্ব’ মনিরুল ইসলাম সরকার এখন সম্পদে ফেঁপে-ফুলে উঠেছে। রাঙামাটি ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদে বিনাভোটে (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়) ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য মনিরুল ইসলাম সরকার। কুমিল্লা থেকে রাঙামাটিতে দুই দশক আগে এসে বসতি গড়ে প্রথমে যোগ দেন এলডিপির রাজনীতিতে। সুবিধা করতে না পারায় পরে আসেন যুবলীগে। সাথে সাথে অনেকটা নিঃস্ব থেকে বাড়তে থাকে সম্পদের পরিমাণ। ক্ষমতার দাপটে রাতারাতি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাঙামাটি কাউখালি উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মনিরুল ইসলাম সরকার। স্থানীয়দের ভয়ভীতি প্রদর্শন, জায়গা দখল, দরিদ্র্র মানুষের কাছ জোর করে টাকা আদায়সহ ক্ষমতার দাপটে গড়ছেন এ বিশাল সম্পদ। ক্ষমতার পালা বদলের পর উঠে এসেছে তার কর্মকান্ডের ফিরিস্তি। মুখ খুলতে শুরু করেছে ভুক্তভোগীরা। অন্যদিকে মনিরুলের দাবি সৎ ভাবেই অর্জন করা তার সম্পদ। সাধারণ মানুষকে হুমকি ধমকি, নিরিহ মানুষের জায়গা দখল, টেন্ডারবাজী করে বনে গেছেন বিশাল সম্পদশালী। এ যেন শূণ্য থেকে রাজা বনে যাওয়া। দরিদ্র মানুষকে দেয়া আশ্রায়ন প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণেও করেছেন হরিলুট। নিম্নমানের কাজ আর দরিদ্র মানুষদের কাছ থেকে বাড়ি নির্মাণের জন্য নানান অজুহাতে হাতিয়ে নিয়েছেন বিশাল অঙ্কের টাকা। আশ্রায়ন প্রকল্পের প্রায় ১৫টি ঘর থেকে ২০থেকে ২৫হাজার টাকাও কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন সে।
আশ্র্রয়নের ঘর পাওয়া রিকশা চালক মোঃ রফিকও এর ভূক্তভোগী। রফিক জানান তারকাছে বিভিন্ন অজুহাত দেখিও ঘরের কাজ উন্নত করবে বলে কয়েক ধাপে বিশ হাজার টাকা নেয়। কখনো মাটি বরাট কখনো ঘরের আড়ার গাছ কিনার ও মালামাল সরানোর কথা বলে নগদে টাকা হাতিয়ে নেন এই জনপ্রতিনিধি। ঠিক একি কৌশলে আরো ১৫জনের থেকে নিয়েছেন টাকা। তার রয়েছে কাউখালি সদরে করেছে প্রাসাদসম বাড়ি, রাঙিপাড়া সহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিজ নামে ও যৌথ নামে আছে বিপুল পরিমান জমি। অনেক নিরীহ মানুষের জায়গাও দখল করে ভোগ করছেন ক্ষমতার দাপটে। রাঙ্গীপাড়ার বাসিন্দা মো: কাউসার অভিযোগ করেন ক্ষমতার গরমে দীর্ঘ বছর তার বসতঘরে পাশে জাইগাটি দখল করে রেখেন । বিষয়টি নিয়ে বার বার তার দারস্ত হলেও এবং তার বড় ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এরশাদ সরকারকে জানালেও কোন সুফল পাননি। এখন ভোক্তভোগীর দাবি তার জায়গাটি দখল মুক্ত করে যাতে ক্ষতিপূরণ ও বিচার দাবী করেন।
এই মনিরের হাত থেকে বাদ যায় নাই উপজেলার কেন্দ্রীয় কবরস্থানের সংস্কার কাজও। কাজ না করেই বিল তুলে পকেটে ডুকিয়েছেন এই ইউপি সদস্য। তার ভয়ে এলাকার সবাই চুপ থাকতে বাধ্য হতো। মুখ খুললেই নেমে আসতো বিপদ। তারি বর্ণনা দিয়েছিলেন কাউখালী কেন্দ্রীয় কবরস্থান কমিটির সাবেক সাধারন সম্পাদক লিটন। তিনি বলেন কবরস্থান সংস্কারের কথা বলে রাঙামাটি জেলা পরিষদ থেকে ৬/৭লক্ষ টাকা প্রথম ধাপে বরাদ্ধ নিয়ে ৩/৪ ট্রাক মাটি ফেলে বিল তুলে নেয়। এই বিষয় কাউকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেন নি। এছাড়া কবরস্থানের কাজের কথা বলে জেলা পরিষদ থেকেই কাজ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেন।
অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন নিজ দলীয় নেতা কর্মীরা। গত ইউপি নির্বাচনে ঘাগড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হন মনির। একই ওয়ার্ড থেকে মনোয়ন জমা দিয়েছিলোন আরও ৭ প্রার্থী। শেষে মেষ সবাইকে বাধ্য করেছে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে। ফলে বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় হয়ে যায় ইউপি সদস্য। ক্ষমতার পট পরিবর্তনে দাপুটে মনির অনেকটা আত্ম গোপনেই দিন পার করছে এখন। তবে মনির নিজের সব সম্পদ সৎ ভাবে উপার্জন করেছে বলে দাবী তার। বলছেন নিন্দুকেরা অপপ্রচার চালাচ্ছে। অন্যদিকে এলাকাবাসী বলছে নাম দেখানো একটি ফার্নিচারের দোকান আছে সেটি থেকে কতটাকা তার আয় সবাই জানে। সব গরিবে টাকা বলে দাবী করেছেন ভুক্তভোগীরা।