লংগদুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল দ্বিতীয়বারের মত প্লাবিত

প্রকাশঃ ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৪:৫৩:৩২ | আপডেটঃ ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ০২:৪৬:০৯

সিএইচটি টুডে ডট কম, লংগদু (রাঙামাটি)। ভারত সীমান্ত থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে আবারও পার্বত্য জেলা রাঙামাটির লংগদু উপজেলার মাইনী নদী, কাঁচালং নদী, চেঙ্গী নদীর অববাহিকা এবং কাপ্তাই হ্রদ সহ সকল নদ নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পানিতে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার আটারকছড়া, কালাপাকুজ্জ্যা, গুলশাখালী, বগাচতর, ভাসান্যাদম, মাইনীমূখ সহ লংগদু সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব এলাকার কয়েক হাজারো মানুষ। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলী জমি সহ গৃহ পালিত পশু। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

 

সোমবার কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। সকাল থেকে প্রায় বন্ধ রয়েছে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল। নৌকা দিয়ে চলাচল করছে স্থানীয়রা। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে তাদের।

 

এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোও পানিতে ডুবে যাওয়ায় চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে জনসাধারণের।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাইনী নদী কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমায় পৌছেছে। গত এক রাতেই প্রায় ১ফুট পানি বৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চল দ্বিতীয় দফায় প্লাবিত হয়েছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৯ আগস্ট পাহাড়ি ঢল এবং টানা বৃষ্টিপাতে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পানিবন্দি হয়েছিল পাঁচ শতাধিক পরিবার। পরে পানি কমে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও গত সেপ্টেম্বর থেকে আবারও বন্যার কবলে পড়ে উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। আবারও নদ নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।

 

বগাচতর ইউনিয়নের বাসিন্দা সোহেল রানা জানান, পানি বাড়লেই বাড়িতে পানি ঢুকে যায়। ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। কিছুদিন পূর্বে বন্যায় অনেক মানুষের আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে থাকতে হয়েছে। এক মাসেই দুই বার পানি ঢেউয়ে আমার ঘরের অবস্থা শেষ। কোনো সহযোগিতাও পাই না। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টের মধ্যে দিন পার করছি।

 

কালাপাকুজ্জ্যা ইউনিয়নের শিবির বাজার এলাকার ইয়াসিন আরাফাত জানান, পানি কমায় মন ভালো হয়েছিল। কিন্তু গত দুই-তিন দিন ধরে প্রচুর পরিমাণে পানি বাড়ছে। পানি বাড়লে আমরা বড় বেশি সমস্যায় পড়ে যাই। আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে হয় অনেকের।

 

আটারকছড়া ইউপি চেয়ারম্যান অজয় চাকমা মিত্র জানান, পাহাড়ি ঢলে আবারও পানি নেমে আসায় আমার ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন কয়েকটা গ্রাম আবারও প্লাবিত হওয়ার উপক্রম। যাতায়াতের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে খুব।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কফিল উদ্দিন মাহমুদ বলেন, সীমান্তে বৃষ্টিপাতের কারণে উপজেলার নদ-নদীর পানি বেড়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে লংগদুর নিম্নাঞ্চলে আবারও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। তবে এবিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। ১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রয়েছে এবং ত্রাণ সহায়তা চলমান থাকবে।

 

তবে এলাকাবাসীর দাবি যেন কাপ্তাই বাঁধের জলকপাট দুই ফুটেরও অধিক খুলে দেয়া হয়, তাহলে পানি দ্রুত সড়ে যাবে এবং মানুষের ভোগান্তি লাঘব হবে।

 

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions