রাঙামাটি শহরে জেএসএসের ঘাটিতে ইউপিডিএফের কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষ

প্রকাশঃ ০৭ অগাস্ট, ২০২৪ ০৫:০২:১৭ | আপডেটঃ ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:৩৫:৩০
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর রাঙামাটি শহরে পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস অধ্যুষিত রাঙামাটি শহরে ইউপিডিএফের কর্মসূচি ঘিরে মুখোমুখি অবস্থানে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে জেএসএস-ইউপিডিএফ নেতাকর্মীরা। জেলা শহরের রাজবাড়ী এলাকায় সংঘর্ষে দুইপক্ষের আহতের খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে রাঙামাটি জেলার কাউখালী ও সদর উপজেলার কুতুকছড়িসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সড়ক ও নৌ-পথে রাঙামাটি শহরের প্রবেশের চেষ্টা করে ইউপিডিএফ নেতাকর্মীরা। কর্মসূচির খবর পেয়ে আগে থেকেই শহরের ভেদভেদী শিমুলতলী এলাকায় নিরাপত্তাবাহিনী অবস্থান নিলে শহরে প্রবেশ করতে পারেননি কর্মসূচি অংশগ্রহণকারীর একটি গ্রুপ। অন্যদিকে, কলেজগেইট এলাকায় ইউপিডিএফের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিতে চাইলে জেএসএস নেতাকর্মীরা মুখোমুখি হয়। টিটিসি মুখে সড়কের ওপর ব্যারিকেড ইটপাটকেল ও অন্যান্য আসবাবপত্র ফেলে অবরোধ করে জেএসএস নেতাকর্মীরা।

এছাড়া রাজবাড়ী এলাকায় নৌ-পথে ইউপিডিএফ নেতাকর্মীরা শহরে প্রবেশের চেষ্টা করলে জেএসএস কর্মীরা ইটপাটকেল ছুঁড়ে। এসময় দুইপক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর থেকেই রাঙামাটি শহর জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আতঙ্কে শহরের পাহাড়ি জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত টিএন্ডটি, কল্যাণপুর ও বনরূপায় দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত বেশিরভাগই দোকানপাটই ছিল বন্ধ। এছাড়া শহরের পরিস্থিতি শান্ত রাখতে শহরে টহল দিয়েছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। যদিও এ ঘটনায় পুলিশকে রাস্তায় দেখা যায়নি। বক্তব্য জানা যায়নি কোনো কর্মকর্তার পক্ষ থেকে। মূলত সোমবার দুপুরে শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই রাঙামাটির সড়কের পুলিশের উপস্থিতি দেখা মিলছে না। শহর জুড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সক্রিয় অবস্থান বাড়লেও আওয়ামী লীগ নেতারা বেশিরভাগই রয়েছেন আত্মগোপনে। আগুন দিয়ে জ¦ালিয়ে দেওয়া হয় জেলা কার্যালয়টি।

প্রসঙ্গত, আড়াই দশকের বেশি সময় আগে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ভেঙে গড়া সংগঠন ইউপিডিএফের সঙ্গে জেএসএসের ‘বন্ধু তুমি, শত্রু তুমি’ মেরুকরণ চলছে দীর্ঘসময় ধরে। পাহাড়ের রাজনীতির নানা ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে কয়েকবার দুই সংগঠনের সঙ্গে ‘মিত্রতা’ দেখা গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বৈরী অবস্থানকে কেন্দ্র করে ফের মুখোমুখি অবস্থানে সংগঠন দুটি। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই রাঙামাটি সদর উপজেলার কুতুকছড়ি ও খাগছাছড়ি-রাঙামাটি সড়ক কেন্দ্রিক অবস্থান ধরে রেখেছে ইউপিডিএফ। রাঙামাটি শহর এলাকাটি জেএসএস অধ্যুষিত এলাকা হিসেবেই পরিচিত। গত মাসেই জেলা শহরের রেডিও স্টেশন এলাকা ও মানিকছড়িতে দুটি পৃথক কর্মসূচি পালন করে ইউপিডিএফের তিন সংগঠন। এর আগে, ২০২২ সালে রাঙামাটি শহরে অবস্থিত আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়ের সামনে ঝটিকা মানববন্ধন করে আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেএসএস সভাপতি সন্তু লারমার পদত্যাগ দাবি জানায় ইউপিডিএফ নেতাকর্মীরা। রাজনৈতিক বৈরিতার মধ্যেই জেএসএসের আখড়া’য় ইউপিডিএফের রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে মঙ্গলবারের এই সংঘর্ষ।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions