পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের চবি শাখার সভাপতি আনসারী সাধারণ সম্পাদক ইমন

প্রকাশঃ ০৭ জুলাই, ২০২৪ ০৮:১৪:৩১ | আপডেটঃ ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৮:১৩:৪০

সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখার নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। এতে সভাপতি নিযুক্ত হয়েছেন ১৮-১৯ সেশনের আরবি ভাষা সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আবু আইয়ুব আনসারী, সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ১৯-২০ সেশনের ইসলামের ইতিহাস সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী  সাইফুল ইসলাম ইমন।

 

শনিবার (৬ই জুলাই) সকাল ১০ টায় পিসিসিপি' কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো:হাবীব আজমের সভাপতিত্বে সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদের সঞ্চালনায় নগরীর অক্সিজেন এলাকায় পিসিসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উক্ত কমিটির মনোনয়ন দিয়েছে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি' নেতৃবৃন্দ।

 

নতুন কমিটির অন্যান্য পদে সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ১৭-২৮ গোলাম নওশাদ ১৮-১৯ সেশনের মেরিন সাইন্স বিভাগের শিক্ষার্থী নিপু আকন্দ , যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ২১-২২ সেশনের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আনোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক ২০-২১ সেশনের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মাসুদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ২২-২৩ সেশনের আরবী ভাষা সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মিজানুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক ২০-২১ সেশনের ফিন্যান্স বিভাগের গাজী ইমরান, ২০-২১ অর্থ সম্পাদক শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী  দিদার আলী সরকার, ২১-২২ সহ-অর্থ সম্পাদক ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নাজমুল।

 

নবগঠিত আংশিক কমিটিকে আগামী একমাসের মধ্যে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 

উক্ত প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি)' চেয়ারম্যান কাজী মজিবুর রহমান। সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিসিপি' কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাবীব আজম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, পিসিএনপি'  মহাসচিব আলমগীর কবির, চট্টগ্রাম মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক প্রিন্সিপাল আল আমিন। পিসিসিপি' কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, সাহিত্য সম্পাদক ওমর ফারুক। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি আবৃত্তিকার কানন এবং পিসিসিপি চবি শাখার নেতাকর্মীরা।

 

নতুন কমিটির পূর্বে পিসিসিপি চবি শাখার নেতৃত্বে সভাপতি ছিলেন, আল আমিন সাধারণ সম্পাদক তারেকুল ইসলাম। আজ নতুন কমিটি হস্তান্তরের মাধ্যমে তারা দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।

 

পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ পিসিএনপি' চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান বলেন, আমাদের বড় হতাশার দিক যে পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের  উচ্চশিক্ষিত হয়ে অঞ্চলকে নিয়ে চিন্তা করে না। সবাই নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় কিন্তু জাতিকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে না। এজন্যই আমরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম পিছিয়ে আছি। পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়ী সশস্ত্রবাহিনী তাদের এজেন্টরা বিশ্বময় ছড়িয়ে গেলেও আমরা এখনো জিরো পয়েন্টে আছি। স্বাধীন হওয়ার ৫৩ বছর পরও আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে যে বৈষম্যের স্বীকার হয়েছি তা পাকিস্তানের ইতিহাসে ২৩ বছরে তার অর্ধেকেও করা হয়নি। রাষ্ট্র চলবে সংবিধানের আলোকে। পার্বত্য চুক্তিতে সংবিধানের অনেক ধারাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। যেমন চুক্তিতে বলা হয়ছে, 'এটি উপজাতি অধ্যূষিত এলাকা।' এটার মাধ্যমে তাদের সন্ত্রাসী জিঘাংসা মনোবৃত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। বরং বলা উচিত ছিল, এটি পার্বত্য অঞ্চল অধ্যূষিত এলাকা।

 

এসময়ে তিনি আরো বলেন, বিপ্লবের বিকল্প নাই। স্বীয় অধিকার আদায়ে আমাদের সোচ্চার হতে হবে।

তোমাদের মাধ্যমে সেই অধিকার নিশ্চিত হবে বলে দৃঢ়বিশ্বাস করি।

 

পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ' কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক  হাবীব আজম বলেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি অনেকটাই বাঙালিদের স্বার্থ বিরোধী। এটিতে চাকমা এলিট-শ্রেণীর সম্প্রদায়ের মানুষেরা সুযোগ নিচ্ছে। সাধারণ চাকমারাও সুযোগ নিতে পারছে না। চট্টগ্রাম ভূমি নিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন বাস্তবায়ন হলে অধিকাংশ বাঙালির ভূমি ছাড়তে হবে। এখন তারা শিক্ষায় ৭৪% আর  বাঙালিরা মাত্র ২৪% উপজাতি কোটা শান্তিচুক্তির বিভিন্ন অসঙ্গতির কারণে তারা আজ এগিয়ে গেছে। এখন সার্বভৌমত্ব নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে তারা। পার্বত্য ভূখন্ড রক্ষার একমাত্র ছাত্র সংগঠন পিসিসিপি। যে কোন সময় সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে আমরা আক্রান্ত হতে পারি। আমি নতুন কমিটিকে সংগঠনের স্বার্থে কাজ করার অনুরোধ করছি।

 

পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের মহাসচিব আলমগীর কবির বলেন, পার্বত্য অঞ্চলকে 'জুমল্যান্ড' নামক রাষ্ট্র করার সকল প্রক্রিয়া প্রস্তুত হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলার মূল পয়েন্ট গুলোতে পাহাড়ী আধিপত্য বিস্তারকারীদের অবস্থান। পার্বত্য অঞ্চলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি দূর্গ হিসেবে গড়ে তুলে এখান থেকে তোমরা সুদৃঢ় ভাবে নেতৃত্ব দাও। আমি ঘোষণা দিচ্ছি, তোমাদের সকল প্রকার সহযোগিতা আমি করবো, নাগরিক পরিষদ করবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে মূল অধিবাসী হয়েও আজ আমরা ভালো নেই। ছাত্র গণমানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে তোমাদের দুর্বার গতিতে এগিয়ে আসতে হবে।

 

প্রসঙ্গত,  পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় নিবেদিত 'পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ' (পিসিসিপি) একটি দেশপ্রেমিক জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন। এই সংগঠন শিক্ষার্থীদের সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষার পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করতে নিরন্তর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের অন্যতম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ঢাবি,চবি, জাবিসহ অনেক সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিসিসিপির কার্যক্রম বিদ্যমান রয়েছে।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions