সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। টানা ভারী বৃষ্টিপাতে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা করে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তাই পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত লোক জনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরে যেতে মাইকিং করছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভারী বৃষ্টিপাতে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় রাঙামাটি শহরের ২৯টিসহ জেলায় মোট ২৬৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে, গত রবিবার থেকে রাঙামাটিতে ভারী ও মাঝারি আকারে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত শুরু হলেও তবে এখনো পর্যন্ত কোন পাহাড় ধসের খবর পাওয়া যায় নি।
জেলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় রাঙামাটিতে ৯৪ মিলিমিটারে অতিভারী বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার(০১জুলাই) সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ১৯ মিলিমিটারের মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাতের ফলে রাঙামাটিতে পাহাড় ধস ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রাঙামাটি আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক ক্যাচি নু মারমা বলেন, গতকালকে(৩০ জুন) রাঙামাটিতে ৯৪ মিলিমিটারে ভারী বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আজকে(০১ জুলাই) সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত রাঙামাটি ১৯ মিলিমিটারে বৃষ্টিপাত হয়েছে। যাকে মাঝারি ধরণের বর্ষণ হিসেবে ধরে নেওয়া যায়।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের অতি ভারী বর্ষণের পূর্বাভাসে পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিতেও পাহাড় ধসের আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসাবসকারীদের ক্ষতি এড়াতে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরে যেতে শহর জুড়ে মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া রাঙামাটি শহরে ২৯টিসহ জেলায় মোট ২৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে,ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক সড়কে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যানচলাচল ব্যাহত হয়েছে।
সোমবার (১ জুলাই) দুপুর থেকে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক সড়কের কেঙ্গালছড়ি এলাকায় সড়কে পানি ওঠায় এই যানচলাচল ব্যাহত হয়।
রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান,ভারী বৃষ্টিপাতে দুপুরে রাঙামাটি- খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক সড়কের কেঙ্গালছড়ি স্কুলের সামনের সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ার যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তবে ভারী যানবাহনগুলো কিছুটা চলাচল করতে পারলেও ছোট যানবাহন চলাচল করতে পারতেছে না।
গত, ২০১৭ সালে ১৩ জুন রাঙামাটিতে ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনায় ৫ সেনাসদস্যসহ ১২০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। । ২০১৮ সালে জেলায় নানিয়ারচর উপজেলায় ১২ জুন পাহাড় ধসে মারা যান আরো ১১ জন। এরপরে ২০১৯ সালে জেলার কাপ্তাই উপজেলায় পাহাড় ধসে ০৩ জনের মৃত্যু হয়। প্রতিবছর ভয়াল স্মৃতির দিনটি ফিরে এলেও থামেনি পাহাড়ের পাদদেশে মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস বরং বেড়েছে আরোও নতুন করে বসতি স্থাপন।