চাহিদার তুলনায় উৎপাদনে ঘাটতি পার্বত্য এলাকার গুড়

প্রকাশঃ ৩০ জুন, ২০২৪ ০১:৫৩:২৩ | আপডেটঃ ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০১:৪৯:৩০
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। চাহিদার তুলনায় পার্বত্য এলাকায় গুড় উৎপাদনে ঘাটতি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সুগারক্রপ চাষাবাদ জোরদার করণ প্রকল্পের কনসালটেন্ট কৃষিবিদ ক্যাছেন।

শনিবার (২৯ জুন) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিট অফিসের সভাকক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সুগারক্রপ চাষাবাদ জোরদার করণ প্রকল্প ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানের বাস্তবায়নে পার্বত্য চট্টগ্রামের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ইক্ষু, সাথী ফসল চাষ ও গুড় উৎপাদনের গুরুত্ব নিয়ে দিনব্যাপী এক কর্মশালায় একথা জানান তিনি।

সভার শুরুতে প্রকল্পের অগ্রগতি ও পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ইক্ষু চাষের বিভিন্ন তথ্য প্রেজেন্টেশন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সুগারক্রপ চাষাবাদ জোরদার করণ প্রকল্পের কনসালটেন্ট কৃষিবিদ ক্যাছেন। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শতকরা ৮০-৯০ ভাগ জনগণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। তিন পার্বত্য জেলায় গুড়ের চাহিদা প্রায় ১২০-১৩০ টন তবে বর্তমানে তিন পার্বত্য জেলায় গুড় উৎপাদন হয় মাত্র ১৫-২০ টন , এই হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে দরকার আরো ১০০-১২০ টন গুড়, আর এই ঘাটতি পূরণের জন্য এই অঞ্চলে গুড় উৎপাদনের কার্যক্রম আরো জোরদার করা প্রয়োজন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সুগারক্রপ চাষাবাদ জোরদার করণ প্রকল্পের কনসালটেন্ট কৃষিবিদ ক্যাছেন আরো বলেন, নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলে ও পার্বত্য জেলা বান্দরবানে প্রচুর ইক্ষুর আবাদ হচ্ছে আর তার সাথে তৈরি হচ্ছে গুড়। এসময় প্রকল্পের কনসালটেন্ট কৃষিবিদ ক্যাছেন বলেন, ক্ষতিকর তামাক পার্বত্য জেলাকে ঘিলে খাচ্ছে আর পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সুগারক্রপ চাষাবাদ জোরদার করণ প্রকল্পের মাধ্যমে তামাক চাষীদের তামাক চাষ বাদ দিয়ে ধীরে ধীরে ইক্ষু চাষে আগ্রহ বাড়ানো হচ্ছে এবং অনেক চাষী তামাক চাষ ছেড়ে এখন ইক্ষু চাষ করছে আর তার সাথে সাথী ফসল হিসেবে টমোটো,শীম,ঢেড়সসহ নানা সবজি চাষ করার পাশাপাশি ইক্ষু থেকে গুড় উৎপাদন করে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে।

সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য প্রশাসন ও প্রকল্প পরিচালক (উপ-সচিব) মোহাম্মদ মাহবুবউল করিম বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে কৃষির সাথে সম্পৃক্ত চাষীদের তামাক চাষের ক্ষতি থেকে মুক্ত করে চাষাবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে তিন পার্বত্য জেলার ২২ হাজার ৩৮০জন চাষীকে ইক্ষুচাষে উদ্বুদ্ধ করতে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

এসময় তিনি আরো বলেন, পার্বত্য জেলা থেকে ক্ষতিকর তামাক দুরীকরণের মাধ্যমে ইক্ষু চাষসহ এর সাথে বিভিন্ন সাথী ফসল চাষ বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষিতে ব্যাপক উন্নয়ন করা সম্ভব। প্রাথমিকভাবে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন  প্রকল্প নেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে তামাক চাষ নিমূল করা সম্ভব হবে আর ইক্ষু চাষের মাধ্যমে চাষীরা অর্থনৈতিকভাবে আরো সমৃদ্ধ হবে। এসময় তিনি পার্বত্য এলাকার মাটি ,আবহাওয়া আর জলবায়ু ইক্ষু চাষের জন্য উপযোগী বলে মন্তব্য করে চাষীদের ইক্ষু চাষে মনোনিবেশ করার আহবান জানান।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য প্রশাসন ও প্রকল্প পরিচালক (উপ-সচিব) মোহাম্মদ মাহবুবউল করিম এর সভাপতিত্বে এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এম, এম, শাহ নেয়াজ, হর্টিকালচার সেন্টারের উপ পরিচালক আমিনুর রশিদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানের সমন্ধয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ বেতার বান্দরবান কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক এবিএম রফিকুল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সুগারক্রপ চাষাবাদ জোরদার করণ প্রকল্পের কনসালটেন্ট কৃষিবিদ ক্যাছেন, প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চুসহ জেলা ও উপজেলা থেকে আগত বিভিন্ন কৃষি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, ইক্ষু চাষী এবং গনমাধ্যমকর্মীরা।


সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions