সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পার্বত্য চট্টগ্রামের ঝিরি ঝরণা আর নদীর পানি দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভুমিকা রাখছে। মাতারবারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতিদিন পাহাড়ের নদীর ৭৫হাজার গ্যালন পানি ব্যবহার হচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে দেশ যতই এগোবে ততই পাহাড়ের নদী ঝিরি ঝরনার পানি ব্যবহার বাড়বে। তাই পাহাড়ের শুকিয়ে যাওয়া ঝিরি ঝরণার প্রাণ ফেরাতে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা।
শহীদ আবদুল আলী একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব আবদুল বারী মাতব্বর ও শহীদ এম আবদুল আলীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও স্মৃতিবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় স্কুল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান (অবঃ রাষ্ট্রদূত) সুপ্রদীপ চাকমা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য(অর্থ) মোঃ জসিম উদ্দিন, শহীদ আবদুল আলী একাডেমি পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিফাত আসমা, শহীদ এম, আবদুল আলীর জ্যোষ্ঠ কন্যা ফিরোজা আকতার ডলি, শহীদ আবদুল আলীর জীবনীগ্রন্থের লেখক ইয়াছিন রানা সোহেল। শহীদ আবদুল আলী একাডেমির প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য মোঃ শাওয়াল উদ্দিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুপ্রদীপ চাকমা আরো বলেন, গুনী ব্যক্তিদের স্মরণ করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তাদেরকে স্মরণের মাধ্যমে সমাজে গুনী ব্যক্তির জন্ম হবে।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, পড়ালেখা করে যে কেউ উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারে। কার পরিবারের আর্থিক অবস্থা কি, সেটা না দেখে নিজের আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাও, তবে তোমরাও সফল হবে। মনেপ্রাণে পড়ালেখা করলে তা কখনো বিফলে যায় না।
তিনি আরো বলেন, শহীদ আবদুল আলী একাডেমি পাহাড়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনার শিক্ষা দিচ্ছে। এই এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন সৃষ্টিতে এই স্কুল অনন্য ভুমিকা রাখছে। মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড স্কুলগুলোর ক্লাসরুম মাল্টিমিডিয়া করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, জেলা শহরের পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে শিক্ষার প্রসারে আলহাজ্ব আবদুল বারী মাতব্বর যে উদ্যোগ নিয়েছেন তার উপর ভর করেই শিক্ষার প্রসার ঘটেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করে শহীদ এম আবদুল আলী স্বাধীনতা সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছেন। তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার তাঁকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদকে ভুষিত করে। এই দুই মহান ব্যক্তি দেশ-বিদেশের কাছে পার্বত্য চট্টগ্রামকে গৌরবান্বিত করেছে। তাই যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন তাঁদের নাম শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় স্মরণ করবে বিশ্ববাসী।
স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ মুসলিম উদ্দিনের পরিচালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি রাঙামাটি জেলা সভাপতি রনতোষ মল্লিক, শহীদ আবদুল আলী একাডেমির সাবেক প্রধান শিক্ষক সত্য নন্দী, কাজর কুমার সাহা, বিশিষ্ট সমাজসেবক নুরুল ইসলাম তালুকদার, আলহাজ্ব আবদুল বারী মাতব্বরের সন্তান হারুন মাতব্বর, স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য মোঃ আজিজুল হক, শহীদ আবদুল আলীর নাতী কবির আবদুল্লাহ তাপস প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে শিক্ষার্থীদের হাতে স্মৃতি বৃত্তি তুলে দেয়া হয়।