প্রকাশঃ ২১ এপ্রিল, ২০২৪ ০৫:৪৪:৫২
| আপডেটঃ ২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ০৭:৪৪:৪২
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটির নানিয়ারচরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার সেন্টারের সাবেক কর্মকর্তা মোঃ নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাধারন লোকজনদের কাছ থেকে জমি ক্রয়-বিক্রয়ের অর্থ ও জমি বুঝিয়ে না দিয়ে হয়রানী ও প্রতারণা অভিযোগ এনে শনিবার সংবাদ সন্মেলন করেছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।
শহরের গাউসিয়া মার্কেটে আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন হয়রানীর শিকার মোঃ মানিক। এসময় প্রতারনার শিকার এলাকার ভুক্তভোগী আলী হোসেন, আবু জাফর, শাহজাহান বিশ^াস, শামসুসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সন্মেলনে বলা হয়, নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চেঙ্গী হর্টিকালচার সেন্টারের সাবেক কর্মকর্তা মোঃ নূরুল ইসলাম দীর্ঘ দিন চাকুরীকালীন সময় তার লালিত ও পালিত অবৈধ সংঘবদ্ধ ভূমি দখলদার চক্রের মাধ্যমে ইসলামপুর ও বগাছড়ি এলাকার অশিক্ষিত সাধারন লোকদের প্রতারনার ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে অন্তত পক্ষে ৩৫ একর জমি স্বপ্ল মূল্যর দামে ক্রয় করেন। এতে তফসিলের জমির পরিমাণ বেশী উল্লেখ করে ক্রয় পূর্বক দখল করে তার নামে নামজারীও করে নেন। জমি ক্রয়ের হলফনামা করলেও তিনি জমি বিক্রেতাদের টাকা পরিশোধ করেননি। এছাড়া ক্রয়কৃত ওই জায়গা স্থানীয়দের কাছ থেকে কিছু অংশ বিক্রি করলেও তিনি জায়গা বুঝিয়ে না দিয়ে তার দখলে রেখেছেন। শুধু তাই নয়,পরবর্তীতে অধিক টাকার মূল্য ধার্য্য করে জমি বিক্রির হলফনামায় তার স্বাক্ষর দিয়ে অসৎ উদ্দেশ্য অর্থ ও জমি আতœসাৎ করার লক্ষ্যে জাল জালিয়াতীর মাধ্যমে নামজারী আবেদনে ভিন্ন ভিন্ন স্বাক্ষরর করেন তিনি। আবার কোন জায়গা বিক্রির অনুমতির আবেদন সম্পাদন করেননি বলে দাবী করে পুনরায় নামজারি করে দেবেন বলে অধিক অংকের টাকা দাবী করে টাকা গ্রহন করে প্রতারনা পূর্বক জালিয়াতীর মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীসহ ভয়ভীতির হুমকি দিচ্ছেন। সংবাদ সন্মেলন থেকে ওই কৃষি কর্মকর্তা বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন এবং জমি বিক্রয়ের অর্থ ফেরত ও হয়রানী থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন।
সংবাদ সন্মেলনে আসা প্রতারনার শিকার ৯৫ বৎসর বয়স্ক আলী হোসেন জানান, নুরুল ইসলাম তার কাছ থেকে অপকৌশলে তিন একর জায়গা ক্রয় করবেন বলে জানালেও চার একর পাঁচ শতক জমি দখল করে তার নামে হলফনামা করেছেন। জমির দাম আড়াই লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলেও মাত্র ৬০ হাজার টাকা পেয়েছেন। বর্তমানে তার জমি দখল হওয়াতে ঘর তৈরী করতে পারছেন না। তিনি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অপর প্রতারনার শিকার আবু জাফর বলেন নুরুল ইসলামের কাছে ৫একর জমি দুই লাখ টাকায় বিক্রি করছেন কিন্তু তিনি শুধু এক লাখ পেয়েছেন।
এ ব্যাপারে চেঙ্গী হর্টিকালচার সেন্টারের সাবেক কর্মকর্তা নূরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রাঙামাটিতে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্ষন্ত চাকুরী করেছেন। ওই সময়ে তার জমি দেখাশুনার জন্য মোঃ মানিক নামে একজন কেয়ারটেকার রেখেছেন। কিন্তু রাঙামাটি থেকে বদলি হওয়ার কারণে দীর্ঘ দিন রাঙামাটিতে যাননি। এর মধ্যে মানিক তার জমি দখল করে এখন তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। বর্তমানে এ মামলাটি রাঙামাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া জমি ক্রয়ের টাকাসহ অন্যান্য যে সমস্ত অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। জায়গা ক্রয়-বিক্রয়ের সময় নানিয়ারচরে আওয়ামীলীগের নেতৃবন্দ, এলাকার মেম্বারসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে সমস্ত টাকাসহ চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করা হয়েছে। যার প্রমাণপত্র তার কাছে রয়েছে। তিনি দাবী করেন অনেক বছর আগে জমি বিক্রয় করে দিয়েছেন। বর্তমানে তার ৮ থেকে ৯ একর জমি রয়েছে।