প্রকাশঃ ০৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০৭:৪৩:০৭
| আপডেটঃ ২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ০৯:৪৪:০৩
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটির বিজু, বৈসুক, সাংগ্রাই, সাংক্রান ও বিষু মেলায় মদ নিয়ে হট্টগোলকে কেন্দ্র করে তিনটি খাবারের দোকান (স্টল) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ ওঠেছে, যে স্টলের সামনে থেকে মদ নিয়ে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে; সেই স্টল সচল রাখা হলেও অন্য তিনটি খাবারের স্টল বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ!
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিজু মেলায় খাবারের স্টল পরিদর্শন আসে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহেদুল ইসলামসহ একটি টহল টিম। এসময় স্টল পরিদর্শনকালে ৩৮ নাম্বার স্টল থেকে এক সরকারি কর্মকর্তা মদ্যপ অবস্থায় টহলরত পুলিশের সঙ্গে বাকবিতÐায় জড়ায়। তখন মেলার ২২ ও ২৩ নম্বর স্টলের সামনে পুলিশ সদস্যদের অবস্থান ছিল। এসময় বাকবিতÐায় মেলা প্রাঙ্গণে হট্টগোল ও হইচই শুরু হয়। পরে গতকাল শুক্রবার দুপুরে কোনো ধরণের কারণ দর্শানো নোটিস ছাড়াই মেলার তিনটি স্টল বরাদ্দ বাতিল করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বরাদ্দ বাতিল হওয়া স্টল মালিকদের অভিযোগ, এক দোকান থেকে হট্টগোল শুরু হলেও অন্য তিনটি দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিজু মেলায় বরাদ্দ বাতিল করা তিনটি খাবারের স্টল হলো সুনজুক হোটেল (স্টল নম্বর- ২৪), শিল্পা হোটেল অ্যান্ড রেষ্টুরেন্ট (স্টল নম্বর- ২৫) এবং মন জুরানি হোটেল (স্টল নম্বর-৩৮)। এদিকে, শুক্রবার স্টল বরাদ্দ বাতিল বিষয়ক এক নোটিসে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেলায় সংঘটিত শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাÐের অপরাধে মেলার সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজনের স্বার্থে ২৪, ২৫ ও ৩৮ নাম্বার স্টল বরাদ্দ বাতিল করা হলো।
শুক্রবার বিকালে মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, দুপুরে বরাদ্দ বাতিল করা হলেও তিনটি স্টল সকালেই কোনো ধরণের কারণ দর্শানো ছাড়াই ভেঙে দেওয়া হয়। দোকানের মালামালগুলো আকাশের নিচে ফেলা রাখা হয়েছে। মেলার স্টল বাতিল করা দোকানিরা জানায়, তাদেরকে এ বিষয়ে কোনো নোটিস দেয়া কিংবা জানানো হয়নি। সকালে গিয়ে তারা দেখেন স্টলগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং মালামালগুলো ফেলে রাখা হয়েছে। তাদের দোকানে মদ নিয়ে কোনো ঝামেলা কিংবা বিশৃঙ্খলাও ঘটেনি। স্টলগুলো অন্যায়ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ও মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক রেমলিয়ানা পাংখোয়া বলেন, ‘আমরা সবাইকে বলেছিলাম মেলায় মদ বিক্রি না করতে। কিন্তু পুলিশের সঙ্গে বিশৃঙ্খলার পরিপ্রেক্ষিতে মেলার পরিবেশ সুষ্ঠু ও সুন্দর রাখতে তিনটি স্টলের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখুন।’
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে বিজু মেলায় মদ পান করে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে কিছু মানুষ। আমরা তাদের বুঝিয়ে ও পরিবেশ শান্ত করে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসি। পরে শুনেছি তিনটি স্টল বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, প্রতি বছরই পাহাড়ের ক্ষুদ্র ন-ৃগোষ্ঠীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু, বৈসু, সাংগ্রাই, সাংক্রান, বিষু ও বিহু উপলক্ষে মেলার আয়োজন করে থাকে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট। এটিকে স্থানীয়ভাবে ‘বিজু মেলা’ বলা হয়ে থাকে। এ বছরও চার দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয় ৩ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। চারদিনের মেলার দ্বিতীয় দিনেই এমন কাÐ ঘটল।