খাগড়াছড়িতে সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে ছাত্রলীগ নেতার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

প্রকাশঃ ২০ মার্চ, ২০২৪ ১১:৫০:১৫ | আপডেটঃ ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৮:২৪:২৯

সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। লোকসানের অজুহাতে যেখানে মাংস বিক্রী বন্ধ করে দিয়েছেন পেশাদার ব্যবসায়ীরা। সেখানে ন্যায্য মূল্যে মাংসের বাজার নামে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিলেন ছাত্রলীগের এক নেতা। পাহাড়ী জনপদ খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা বাজারের অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে এমন উদ্যোগ নেন উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তসলিম উদ্দিন রুবেল।

 

প্রতি সপ্তাহে তিনদিন ৮০ টাকা কেজি ধরে গরুর মাংস বিক্রী করছেন তিনি। নিম্নবিত্ত কম আয়ের মানুষ চাইলে নিতে পারবেন চাহিদা অনুযায়ী। পুরো রমজান জুড়ে উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আশা তার। ইতোমধ্যে মহৎ উদ্যোগ মন ছুঁয়েছে সাধারণ ক্রেতাদের।    


জানা যায়, রমজানে ভোক্তা সাধারণের কথা বিবেচনায় কেজি প্রতি ৮০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন মাটিরাঙ্গা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তসলিম উদ্দিন রুবেল। নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হতে নয়, রমজানে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে এমন উদ্যোগ বলছেন তিনি। সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার, রোববার মঙ্গলবার সকাল থেকে যতক্ষণ মাংস থাকে মাটিরাঙ্গা বাজারে তসলিমের ন্যায্য মূল্যের মাংসের দোকানে বেচাবিক্রি চলছে। সম্ভব হলে রমজানের পরও কার্যক্রম ধারাবাহিক রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।


মাটিরাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তসলিম উদ্দিন রুবেল উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, রমজানের আগে থেকে মাটিরাঙ্গা বাজারে ব্যবসায়ীরা গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা ধরে বিক্রি শুরু করেন।

 

একাধিকবার দাম কমানোর অনুরোধে উল্টো যখন বিক্রি বন্ধের হুমকি দেয় তখন আমি ব্যক্তিগত ভাবে ইচ্ছা পোষণ করি অন্তত রমজান জুড়ে মানুষকে কম মূল্যে মাংস দেয়ার। শুরুতে ৭০০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি করলেও পরে ২০ টাকা কমিয়ে ৬৮০ টাকা করে দিতে থাকি তাতেও কোন লোকসান নেই। অসাধু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে উদ্যোগ আমার অব্যাহত রাখার ইচ্ছা আছে।


তিনি আরও বলেন, এক কেজি মাংস কেনার যাদের সামর্থ্য নেই তারা চাইলে আরও কম নিতে পারবেন। গরীব, অসহায়দের জন্য সেক্ষেত্রে আরও মূল্য ছাড় দেয়ার কথা বলেন তিনি।


এদিকে, তসলিমের এমন উদ্যোগ সাড়া জাগিয়েছে সাধারণ ক্রেতাদের মনে। কম দামে পাওয়ায় দূরদুরান্ত থেকে মানুষজন আসছেন মাংস কিনতে। বাজার করতে আসা নাসিমা আক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, আমার স্বামী দৈনিক ৬০০ টাকার ভিত্তিতে দিনমজুরী করেন। আগে চাইলেও এক কেজি মাংস নিতে পারতাম না। এখন আধা কেজি মাংস কিনতে পারছি।


করিম নামে আরেকজন বলেন, রমজানের সময়ে এমন উদ্যোগে নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য অনেক উপকার হয়েছে। ব্যবসায়ীদের প্রতি প্রশাসন যদি একটু কঠোর হয় তাহলে নিত্যপণ্যের বাজার অনেকাংশ নিয়ন্ত্রণে থাকত। 


মাটিরাঙ্গা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোহাগ মজুমদার বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তসলিম যে কাজ করছে সেটি অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। আমরা রমজানের আগে মাংসের মূল্য নির্ধারণে চেষ্টা করে যখন পারিনি তখন এমন উদ্যোগ বাজারে মাংসের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখছে। আগামীতে তিনি যদি উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে চান তাহলে তাকে  সবধরণের সহযোগীতা করা হবে।


উল্লেখ্য, দিকে খাগড়াছড়ি সদর বাজারে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ ঘোষণা করেছে ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি সরকারি নির্ধারিত ৬শ ৬৫ টাকায় বিক্রি করতে গেলে তাদের লোকসান হবে

 

 

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions