“পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত হলে পাহাড়ী নারীরা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে”

প্রকাশঃ ০৯ মার্চ, ২০২৪ ০৫:১৫:০০ | আপডেটঃ ২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ০৬:৩১:৪৩
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। আজ ৮মার্চ ২০২৪ ইং তারিখে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে রাঙামাটির জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শিল্পকলা একাডেমি থেকে র‌্যালি শুরু হয়।  র‌্যালিটি বনরুপা পেট্রোল পাম্প প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়। র‌্যালি উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির সদস্য  জ্যোতিপ্রভা লারমা মিনু।

আলোচনা সভায় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য উলিসিং মারমার সঞ্চালনায়ও পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রীমতি মনি চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহসভাপতি শ্রী ঊষাতন তালুকদার। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য শ্রী সাধুরাম ত্রিপুরা,এম এন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি শ্রী বিজয় কেতন চাকমা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, এডভোকেট ভবতোষ চাকমা, এডভোকেট সুষ্মিতা চাকমা, এডভোকেট জুয়েল দেওয়ান, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক ইন্টুমনি তালুকদার, ছাত্র ও যুব সমাজের প্রতিনিধিপার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক সুপ্রিয় তঞ্চঙ্গ্যা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ¤্রানুসিং মারমা। বিবৃতি পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি চন্দ্রিকা চাকমা।

বিশেষ অতিথি এ্যাড. সুস্মিতা চাকমা বলেন, বিভিন্ন সামাজিক পশ্চাদপদ প্রথা পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম নারী সমাজকে আষ্টেপৃষ্টে ধরে আছে। তার উপর রাষ্ট্রের জাতিগত নিপীড়ন। সব মিলিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের নারী সমাজ এক অমানিশার মাঝে দিনাতিপাত করছে। নব্বই দশকের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের চলমান আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা ছিল। চুক্তি সাক্ষরিত হওয়ার পরও নারীরা সংগ্রাম সামিল হয়েছে। কিন্তু নারী সমাজকে আরো জোরালোভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই নারীর সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে।

বিশেষ অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য সাধুরাম ত্রিপুরা মিল্টন বলেন, অধিকার আদায় করতে হলে প্রতিনিয়ত আন্দোলন করতে হয়।সমাজ বিনির্মাণে নারীরা প্রধান সহায়ক। নিপীড়ন-নির্যাতন শাসকের বিরুদ্বে রুখে দাড়াতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণ অবশ্যই থাকতে হবে। রাষ্ট্রের বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে পাহাড়ী নারীরা পিছিয়ে পড়েছে।পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় পাহাড়ে নারীদের জীবন অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। সমাজ শ্রেণি বৈষম্য ভাঙতে নারীদের যোগ্য হতে হবে। জুম্মরা অধিকার হারিয়ে অস্তিত্ব হারানোর শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে।নারীদের সামাজিক অবস্থান আরো শোচনীয়।  কল্পনা চাকমাঅধিকার আন্দোলনে  সোচ্চার ছিলেন। বৈষম্য ও শোষণের হতে রেহাই পেতে পাহাড়ী নারীরা মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের পতাকা তলে সামিল হয়েঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম শুরু করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি  ঊষাতন তালুকদার বলেন, পাহাড়ী নারীদের জীবনমান বিকাশে রাষ্ট্রকে কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। সমাজ বিকাশের ধারাবাহিকতায়  নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরা তেমন সুযোগ সুবিধা পায় না আদিবাসী সমাজে নারীরা পুরুষদের পাশাপাশি অনেক কাজ করে।পাহাড়ের নারীরা জুম চাষ, সন্তান লালন পালন করা সহ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখে, পাহাড়ী নারীরা নিজেদের কাপড় চোপড় বুনতে পারেকিন্তু সেটালারদের আগ্রাসনে পাহাড়ী নারীরা অনিরাপদ জীবন কাটাচ্ছে। রাষ্ট্রের বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে পাহাড়ী নারীরা বার বার বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। দেশের নানা পর্যায়ে  পাহাড়ী নারীরা  ভূমিকা রাখছে।পাহাড়ী নারীদের ভাগ্য পরিবর্তনের রাষ্ট্রের সহযোগিতা প্রয়োজন। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত হলে পাহাড়ী নারীরা দেশের উন্নয়নে বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে।

সভাপতির বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সভার সভাপতি  মনি চাকমা আলোচনা সভা শেষ করেন।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions