সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। হঠাৎ করেই পার্বত্য শহর রাঙামাটিতে মোটর-সাইকেল চুরির হিড়িক পড়েছে। আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ চোর চক্র। গত এক সপ্তাহে রাঙামাটি শহরের প্রাণকেন্দ্র বনরূপার তিনটি পৃথক স্থান থেকে তিনটি মোটরসাইকেলের চুরি ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ আজ সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বনরূপা ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে থেকেই মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটলো। এতে করে রাঙামাটি শহরের মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। চুরি ঠেকাতে ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের ভূমিকা চেয়েছেন স্থানীয়রাও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বনরূপা ট্রাফিক পুলিশ বক্সের বিপরীতে কৌশিক ফার্মেসীর সামনে থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে। মোটরসাইকেলের বাহক ধনেশ্বর তঞ্চঙ্গ্যা ফার্মেসীর সামনে গাড়ি রেখে পাশের একটি দোকানে যান। এসে দেখেন তার গাড়িটি আর সেখানে নেই। ধনেশ্বর তঞ্চঙ্গ্যা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সুগার ক্রপ প্রকল্পে কনসালটেন্ট হিসেবে নিয়োজিত আছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ধনেশ্বর তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘আমি সন্ধ্যা ৭টার দিকে গাড়িটি রেখে যাই। ৭টা ২৫ মিনিটে এসে দেখি গাড়িটি আর নেই। থানায় এসেছি গাড়ির কাগজপত্র নিয়ে, আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ রাঙামাটি ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট সাইফুর রহমানও ধনেশ্বর তঞ্চঙ্গ্যার মোটরসাইকেল চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বেলা পৌনে ১২টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র বনরূপা বিএম শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, এক ব্যক্তিটি গাড়িতে থাকা হেডমেটটি মাথায় দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে চলে যায়। বনরূপা বিএম শপিং কমপ্লেক্স ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম জাহান লিটন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি একই ধরণের ব্যক্তি মোটরসাইকেলের চুরির সঙ্গে জড়িত।’
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে বনরূপা কল্পতরু কনভেনশন হলের সামনে আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার রাঙামাটি প্রতিনিধি মো. হান্নানের মোটরসাইকেলের চুরির খবর পাওয়া যায়। সাংবাদিক মো. হান্নান নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন রাঙামাটি জেলার সাধারণ সম্পাদক এম জিসান বখতেয়ার বলেন, ‘শহরে চুরির প্রবণতা বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের। এই বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনের গুরুত্বসহকারে দেখা উচিত। মোটরসাইকেল উদ্ধার ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনা দরকার।’
জানতে চাইলে রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ জানান, ‘চোর শনাক্ত করা কিংবা না ধরা পর্যন্ত কিন্তু মোটরসাইকেলগুলো উদ্ধার করা যায় না। আমরা মোটরসাইকেল চুরির বিষয়ে অবগত আছি। গত বছরের একই সময়ে নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আমরা সাতটি মোটরসাইকেলসহ চোর চক্রের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করেছি। আমরা সার্বিক বিষয় দেখছি; আবারও একই চক্র সক্রিয় হয়েছে কিনা এবং এদের সঙ্গে নতুন করে কেউ জড়িত কিনা।’