বিয়ের অনুষ্ঠানের টাকায় শিশুদের একবেলা খাওয়ালেন এক নবদম্পতি

প্রকাশঃ ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ০৩:০৭:১৫ | আপডেটঃ ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১১:০৮:৪৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। বিয়ের অনুষ্ঠানে আত্বীয় ও অতিথিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে না খাইয়ে, রাঙামাটি সরকারি শিশুপরিবারের শিশু-কিশোরী ও  স্টাফ’সহ প্রায় দুইশত মানুষকে শুক্রবার ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে একবেলা পেট ভরে খাওয়ালেন রাঙ্গামাটিরএক নব দম্পতি।

বিয়ে মানে যেখানে বিশাল জাঁকজমক আয়োজন। আর সেখানে খাদ্যরসিকদের জন্য থাকবে নানা খাবারের আয়োজন। পাত্র-পাত্রী পক্ষের আর্থিক অবস্থা যেমন হোক আয়োজনটা চাই ষোলো আনা। তবে বিয়ে করে এমন লোক দেখানো খাবার খাওয়ানোর কোন রকম ইচ্ছাই ছিল না রাঙামাটির লিটন ও লক্সমি দম্পতির। তারা চেয়েছিলেন খুব সাধারণ ভাবে বিয়ে করতে এবং সেটাই কাজে করে দেখিয়েছেন তারা। ‘অতিসাধারণ’ ভাবে বিয়ে শিষে তাঁরা খাওয়ালেন শুধু প্রায় দুইশতাধিক রাঙামাটি শিশু পরিবারে থাকা শিশু-কিশোরী ও  সেই প্রতিষ্ঠানের স্টাফদের।

এভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে লক্সমি বলেন, বাবা-মা হারা আমার শিশু ও কৈশরকাল কেটেছে এই শিশু পরিবারে থেকে তাই এই পরিবারের প্রতিটি মানুষ ও বস্তুর কাছে আমি চির ঋনি। তাছাড়া পরিবারে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা দিনের পর দিন খেতে পায় না। আর আমি দেখেছি, একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে খাবার খেয়ে লোকে শেষ করতে পারে না। চার ভাগের প্রায় দেড় ভাগ খাবারই নষ্ট হয়। এসব বাড়াবাড়ি ছাড়া কিছু নয়। এই আয়োজন করতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয় তা দিয়ে যদি এই শিশু পরিবারের শিশুদের পেট ভরে তবে সেটাই আমাদের আসল স্বার্থকতা। নব দম্পত্তি লিটন ও লক্সমি বলেন, আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াসে শিশুরা পেট ভরে খেতে পেয়েছে তারা আনন্দ পেয়েছে, এটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি।’

এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তি ও শিশু পরিবারের অনেক কর্মকর্তারা প্রশংসা করছেন তাঁদের এমন ব্যতিক্রম সিদ্ধান্তের। কিন্তু কতজন তাঁদের মতো সাহসী হয়ে উঠতে পারবেন তা বলা মুশকিল। কিন্তু তবু কিছু দৃষ্টান্ত থাকে যা অন্যকে ভাবতে শেখায়।

খাবার বিতরণকালে,নব দম্পতি লিটন শীল, অংক্রানু শীল (লক্সমি), রাঙামাটি লংগুদু সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজীব ত্রিপুরা, তার সহধর্মিনী সাংস্কৃতিক ব্যাক্তি শিমলা ত্রিপুরা, রাঙামাটি সরকারি শিশু পরিবারের এসেসটেন্ট সুপারেনডেন্ট জুনোটন চাকমা, ঢাকা ডিভাইন মার্সি হাসপাতালের হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের এসেসটেন্ট ম্যানাজার ত্রিদিপ বাহাদুর রায়, ক্রিড়াবিদ সুজন ত্রিপুরা’সহ সরকারি শিশু পরিবারের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions