রাঙামাটি রাজবনবিহারে কঠিন চীবর দান উৎসব অনুষ্ঠিত

প্রকাশঃ ২৫ নভেম্বর, ২০২৩ ০৫:৪৯:৫৯ | আপডেটঃ ২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ০২:২৫:২৫
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি রাজবন বিহারে ৪৮ তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত  হয়েছে। গতকাল বেইন বুনার মধ্যে দিয়ে চীবর বানানো শুরু হয় আজ কঠিন চীবর দানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শেষ হয়। সকাল থেকে বনবিহারে বুদ্ধমূর্তিদান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, কঠিন চীবর দান পঞ্চশীল প্রার্থনা, সুত্রপাঠ, ধর্মীয় দেশনা, কল্পতরু প্রদক্ষিণসহ নানাবিধ দান সম্পন্ন করা হয়।

দুপুরে অনুষ্ঠানের মূল পর্বে পূণ্যার্থীদের পক্ষে পঞ্চশীল প্রার্থনা ও কঠিন চীবর হস্তান্তর  করেন চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। স্বাগত বক্তব্য দেন রাজবন বিহার উপাসক উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান। এ সময় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, সাবেক উপমন্ত্রী মণিস্বপন দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রæ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান, রাঙামাটি পৌরসভা মেয়র আকবর হোসেন  বিশিষ্ট ব্যক্তি ও অগণিত সেবক সেবিকা উপস্থিত ছিলেন।

পুণ্যার্থীদের উদ্দেশে সদ্ধর্ম দেশনা দেন রাজবন বিহারের আবাসিক ভিক্ষু প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরসহ অন্য বৌদ্ধভিক্ষুরা।

প্রসঙ্গত: প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে ভগবান গৌতম বুদ্ধের জীবব্দশায় মহাপূর্নবতী বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত ২৪ ঘন্টার মধ্যে সূতা কাটা শুরু করে কাপড় বয়ন, সেলাই ও রং করাসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয়ে থাকে বলে একে কঠিন চীবর দান হিসেবে অভিহিত করা হয়। এ পদ্ধতিতে দান করলে কায়িক-বাচনিক এবং মানসিক পরিশ্রম অধিকতর ফলদায়ক হয় বলে বৌদ্ধ শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে। তাই বিশাখা প্রবর্তিত এ ঐতিহাসিক নিয়ম অনুসারে মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদিবাসী নারীরা চরকায় তূলা থেকে সূতা বের করে বেইনের (কোমড় তাঁত) মাধ্যমে সেই সূতা দিয়ে কাপড় বুনন ও রং করে চীবর প্রস্তুত করে তা দান করা  হয়। এজন্য এ দানকে কঠিন চীবর দান হিসেবে অভিহিত করা হয়।

১৯৭৪ সাল থেকে রাঙামাটি রাজবন বিহারে এ রীতিতে চীবর দান হয়ে আসছে। এ উৎসবে যোগ দিতে প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত পুণ্যার্থী যোগ দেয়।

চীবর দান অনুষ্ঠানে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় প্রার্থণা করা হয়।


সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions