মেহেদী হাসান সোহাগ, কাউখালী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি। উচুঁ নিচু পাহাড়,পাহাড়ের বুক চিড়ে রাস্তা দেখলে মনে হতে পারে এই যেন একখন্ড সুইজারল্যান্ড।এই সড়কের প্রতিটি পরতে পরতে লুকিয়ে আছে সৌন্দর্য্যে আর রহস্য।এ সড়টি পাহাড়ের উচুঁতে পাহাড়ের বুক চিড়ে হওয়াতে সড়কটি এতটা উচুযে মনে হতে পারে চলতে চলতে মেঘের দেশে হারিয়ে যাবেন।বলছিলাম একদৃষ্টিনন্দন ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অপার সম্ভাবনাময় পর্যটনের উপজেলা রাঙামাটি কাউখালী উপজেলার কাউখালী থেকে ঘাগড়া সংযোগ সড়কটির কথা।
এই উপজেলার এই সড়কটির দুপাশে সাড়ি সাড়ি সবুজ বৃক্ষের সমারোহ দেখে যেকোন পর্যটক বিমোহিত হয়ে পড়বেন। পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে তৈরী করা এই সড়কটি এ এলাকার মানুষের চিকিৎসা , শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি রাঙামাটিসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য এটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কাউখালী উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘাগড়া-কাউখালী সংযোগ সড়কটি হচ্ছে ৯.৬ কি;মি। এর মধ্যে গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এই সড়কের ৫ কি:মি: রাস্তা সংস্কার করা হয়। এই সড়কের সংস্কারের মোট বাজেট ছিল ২ কোট ৮০ লক্ষ টাকা। এদিকে,কাউখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোঃ আরমান বলেন, এই সড়কটি হওয়ার আগে ঘাগড়া থেকে কাউখালী উপজেলা সদরে যেতে আমাদের আনেক সময় লাগতো। অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হতো। কিন্তু এখন সড়কটি নতুনভাবে সংস্কার হওয়ার ফলে এই এলাকায় যারা কৃষিকাজ করেন এবং ফলজ ও বনজ বাগান করেন তাদের পরিবহন খরচও অনেকাংশে কমে গেছে।
এদিকে, কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নাজিম উদ্দিন বলেন, এই সড়কটি দিয়ে রাঙামাটি-কাউখালী স্বল্প সময়ে আসার জন্য খুবই সহজ মাধ্যম। তিনি বলেন, ঘাগড়া চেলাছড়া সড়কটি ভবিষ্যতে পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পারে। এর পাশাপাশি এটি রাঙামাটির টুরিজ্যম প্রসারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে বলে মনে করছি।
রাঙামাটির ঘাগড়ার কাঠ ব্যবসায়ী মো: কবির বলেন, ২০১৮-১৯ সালের দিকে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে আমাদের খুবই কষ্ট হতো। বর্তমানে এই সড়কটি দিয়ে মালামাল নিয়ে আমরা কম সময়ের মধ্যে চলে যেতে পারি। আমরা ঘাগড়া-কাউখালী খুব দ্রত সময়ের মধ্যে চলে যেতে পারি।
ঘাগড়া-কাউখালী- চেলাছড়া সড়কের সিএনজি চালক মো: আসু জানান, রাঙামাটি-রানীরহাট সড়ক দিয়ে কাউখালী ডেতে সময় লাগে প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টা। আর এই সড়ক দিয়ে কাউখালী যেতে সময় লাগে ৪০ মিনিটের মতো। এই সড়কটি আগে থেকে অনেক সুন্দরও হয়েছে।
ঘাগড়া-কাউখালী সড়কের চেলাছড়া এলাকার বাসিন্দা শ্রমিক উষাখই মারমা বলেন, এই সড়কটি যখন ভাঙ্গা ছিল তখন আমাদের চলাফেরা করতে খুবই কষ্ট হতো। বর্তমানে এই সড়কটি আবারো নতুন করে তৈরী করায় আমরা উপকৃত হয়েছি। তিনি বলেন, আগে কেউ অসুস্থ হলে পায়ে হেটে হাসপাতালে নিয়ে যেতো হত। কিন্তু এখন মুহুত্তের মধ্যে গাড়ীতে কওে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারছি।
এলজিইডি কাউখালী উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, এটি হচ্ছে কাউখালী উপজেলার এটি বিকল্প সড়ক। এই সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করলে কমপক্ষে আধাঘন্টা সময় কম লাগে। এই সড়কটিতে ৫ কি:মি: নতুন সংস্কার করা হয়েছে। বর্তমানে সাধারন মানুষের মাঝে সড়কটি দৃষ্টি নন্দন হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ শফি বলেন, আমরা এই সড়কটি ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা দিয়ে সংস্কার করেছি। এখানে অনকেগুলো ড্রেন,প্রতিরক্ষা দেয়াল করা হয়েছে। এটি টুরিজ্যমের জন্য বিশাল ভুমিকা রাখবে । এই রাস্তাটি ব্যবহার করে কাউখালী যেতে প্রায় ৩০ মিনিটি সময় কম লাগে। তিনি বলেন, এই সড়কটি দিয়ে স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি বাইকারদেরও যাতায়াত বেড়েছে অনেক।