সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটিতে সুবিধাবঞ্চিত ও নিম্ন আয়ের জনসাধারণের জন্য ১০ টাকার মধ্যে ব্যাগভর্তি বাজারের আয়োজন করেছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। সুবিধাবঞ্চিত দুস্থ ও অসহায় তিন শতাধিক পরিবারের জন্য চাল ডাল ডিম ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নামমাত্র মূল্যে সরবরাহের জন্য “৫ টাকার হাট” নামে গরিবের এই সুপার শপের আয়োজন করেছে সংগঠনটি। এই বাজারে যেকোন পন্যের মূল্য ১ থেকে ৫ টাকার মধ্যে। গ্রহীতারা ১০ টাকার মধ্যে যেকোন পন্য বাছাই করে নিতে পারবেন। এ কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করেছে জেলা প্রশাসন রাঙামাটি।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাঙামাটি সদরের সাবারাং কমিউনিটি সেন্টারে দিনব্যাপী ৫ টাকার হাট নামের এই সুপারশপে পণ্য কেনার কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়। ভোজ্যতেল, চাল-ডাল, লবণ, ডিম, মাছ, সবজি ও নুডলসসহ ১৯টি পণ্যের সমাহার ছিল সুপারশপে। ১০ টাকার টোকেন নিয়ে দুস্থ ও অসহায় মানুষজন নিজেদের চাহিদা মতো বাজার করেছেন।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকদের তদারকিতে ৫ টাকার হাটে চলেছে অসচ্ছল নারী ও পুরুষের কেনাকাটা। বাজারে এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম যখন ১৯০ টাকা সেখানে গরিবের এই সুপারশপে মাত্র তিন টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ২৬০ টাকার ব্রয়লার মুরগি এখানে মিলেছে ৫ টাকায়। এক কেজি মাছ মাত্র ৪ টাকা। এক টাকায় এক হালি ডিম, ফ্যামিলি সাইজের নুডলস মিলেছে এক টাকায়। মুলত দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যে প্রতি মাসে একবার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই বাজারের আয়োজন করা হয় বলে জানায় ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ।
এই সুপারশপে বাজার করতে আসা মেচাইনু মারমা বলেন, ৫ টাকার হাটে এসে খুব ভালো লাগছে। এত কম দাম জিনিস পাওয়ার কথা চিন্তা করতে পারি নাই। এই বাজারের ব্যবস্থা করায় সত্যি খুব খুশি হয়েছি। বাচ্চাটাকে অনেকদিন পর মাংস দিয়ে ভাত খাওয়াবো । অনেকের খুব সুবিধা হলো।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক মুবারক বাবু বলেন, রাঙামাটি জেলার তিন শতাধিক পরিবার মাত্র ১০ টাকায় যে পণ্যগুলো কিনেছেন তার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পণ্য বাছাই করে নিজে ক্রয় করার স্বাধীনতা তৈরি করতে এ ধরনের আয়োজন করা হয়েছে। আর তারা যেন কোনোভাবেই নিজেদের ভিক্ষুক মনে না করেন, এজন্য নামমাত্র মূল্য নেওয়া হয়েছে।
দেশ বিদেশে ভিন্নতর ও অভিনব সব আইডিয়া নিয়ে সেবামূলক কাজ করে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে বিদ্যানন্দ। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে কেউ যখন ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেনা তখন জীবনবাজি রেখে করোনা মহামারী মোকাবেলায় সম্মুখসমরে যুদ্ধ করে সাধারণ মানুষের ভালবাসা অর্জন করে নেয় এই প্রতিষ্ঠান। সমাজসেবায় তাদের অসামান্য সব অবদানের জন্য ২০২৩ সালে সরকার তাদের একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়াও ২০২২ সালে সমাজকল্যান মন্ত্রনালয় কতৃক জাতীয় মানবকল্যান পদক ও ২০২১ সালে বৃটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কতৃক "কমনওয়েলথ পয়েন্টস অফ লাইট" পদকে ভূষিত হয় এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।