"লংগদুতে শত প্রতিবন্ধকতার বেড়াজালে দ্বীনি শিক্ষা মাদ্রাসা"

প্রকাশঃ ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ০২:৫৫:২৩ | আপডেটঃ ১০ জানুয়ারী, ২০২৫ ০৮:২৫:৫৩

সিএইচটি টুডে ডট কম, লংগদু (রাঙামাটি)রাঙামাটির লংগদু উপজেলার আল জামিয়া ইসলামিয়া মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা এতিমখানার ভবন, শ্রেণিকক্ষ, আসবাবপত্র, শিক্ষক, বিশুদ্ধ পানি, মানসম্মত খাবার সৌর বিদ্যুৎ সংকটসহ নানা প্রতিকূলতায় ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে

 

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নের গাউসপুর এলাকায় শ্রেণিকক্ষের অভাবে ছাত্রছাত্রীরা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে বেড়াবিহীন একটি টিনের ঘরে অধ্যয়ন করছে। দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বিভিন্ন দাবি করেও কোনো ফল হয়নি। অবস্থায় অনেক অভিভাবক প্রতিষ্ঠানে তাদের ছেলেমেয়েদের ভর্তি করানোর আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন

 

মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা মামুনুর রশীদ জানান, ২০১৪ সালে নুরানী শাখা দিয়ে মাদ্রাসার যাত্রা শুরু হয়। দীর্ঘদিন পর এখন নাজেরা, হেফজ কিতাব শাখার স্বীকৃতি লাভ করে এটি। বর্তমানে মাদ্রাসায় ৩০০- বেশি ছাত্রছাত্রী রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ১২০ ছাত্রের সংখ্যা প্রায় ১৮০জন। উপজেলার পিছিয়ে পড়া গাউসপুর, রাঙ্গীপাড়া, ঠেকাপাড়া, ফোরেরমূখ, ঝর্ণাটিলা, সোনাইসহ বিভিন্ন অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে থাকে। পড়ালেখার মান ভালো হওয়ায় দিন দিন মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। ফলে শ্রেণিকক্ষের অভাবে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। কারণে বহু ছাত্রছাত্রী দাঁড়িয়ে পাঠদান গ্রহণ করে। কেউ কেউ বসার জায়গা না পেয়ে বাড়িতে চলে যায়। অবস্থা থেকে উত্তরণে শিক্ষকরা মাদ্রাসার বারান্দা নিজ হাতে পুরনো ইট, বালি, সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দিয়ে বসার উপযোগী করে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান করেন

 

এছাড়া মাদ্রাসায় বালক-বালিকা আলাদাভাবে আবাসিক ব্যবস্থা থাকায় অর্থ সংকটে উন্নত খাবারের ব্যবস্থা করতে পারছে না। অন্যদিকে মাদ্রাসায় নেই কোনো টিউবওয়েল। ফলে বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে। ৩০০ ছাত্রছাত্রীর জন্য শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ১২জন, যা একেবারেই অপ্রতুল

 

মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর সরকারিভাবে কোনো ভবন নির্মাণের সুযোগ পায়নি কর্তৃপক্ষ। ছাত্রছাত্রীদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় ঘরের বারান্দায় রোদ-বৃষ্টিতে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস করতে হয়। পাশাপাশি সৌর বিদ্যুতের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটে বলে জানান মাদ্রাসার শিক্ষকরা

 

মাদ্রাসা পরিচালক আক্ষেপ করে বলেন, দুই-তিন মাস পার হয়ে গেলেও শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়া প্রায় সময়ই সম্ভব হয় না। এই মাদ্রাসার মাধ্যমে এলাকায় দ্বীনি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হাজারো প্রতিকূলতা কাটিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে বিভিন্ন অনুদানের জন্য ছুটে চলি। মাদ্রাসার সীমানা ভূমি রক্ষা করতে গিয়ে কিছু দুষ্কৃতিকারীর আক্রমণের শিকার হয়ে রক্তাক্ত হয়েছি বহুবার। তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এখন শুধু সরকারিভাবে, প্রশাসনিক বিত্তবানদের সহযোগিতা যারা এগিয়ে যাওয়া কষ্টসাধ্য

 

 

লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকিব ওসমান জানান, মাদ্রাসায় ভবন সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে

 

 

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions