বান্দরবানে কেএনএফের প্রধানসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের

প্রকাশঃ ১৯ জানুয়ারী, ২০২৩ ০৩:৫০:৩৭ | আপডেটঃ ১১ জানুয়ারী, ২০২৫ ০৬:৪৯:৩৩
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বান্দরবানে জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়ার আমির ও কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) প্রধানসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারী) বিকেলে নুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে বান্দরবানের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে এই মামলার আবেদন করেন।

নুরুল ইসলামের বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি তাঁর ছেলে আমিনুল ইসলাম, ওরফে আল আমিনকে (২৩) হত্যার পর লাশ গুম করার অভিযোগে এই হত্যা মামলার আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মো.নাজমুল হোসেন আবেদনটি এজাহার হিসেবে নিয়ে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে বান্দরবানের রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আবেদনে জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়া’র আমির আনিসুর রহমানকে প্রধান আসামি এবং প্রধান উপদেষ্টা শামীম মাহফুজকে ২নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সশস্ত্র দল  কেএনএফের প্রধান নাথান লনচেও ওরফে নাথান বম, সামরিক শাখার ভাঙুর লিয়ান, লাল মোহন রিয়াল ওরফে কর্নেল সলোমন, লালদন সাং বমসহ সর্বমোট ২০ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ১১ জানুয়ারি র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার পাঁচ জঙ্গিও আছেন।

লিখিত অভিযোগে নুরুল ইসলাম উল্লেখ করেন, আসামিরা তাঁর ছেলে আমিনুলকে ধর্মীয় মিথ্যা প্রলোভনে ফুসলিয়ে কুমিল্লা থেকে বান্দরবানে কেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নিয়ে যায়, পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্নভাবে জানতে পারেন, তাঁর ছেলের মতো আরও অনেককে প্ররোচনা দিয়ে জঙ্গি সংগঠন শারক্বীয়ায় সম্পৃক্ত করা হয়। বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে কেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নিয়ে যান তাঁদের। র‌্যাবের হাতে ১১ জানুয়ারি গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা স্বীকার করেছেন, তাঁর ছেলে আমিনুল ভুল বুঝতে পেরে শারক্কীয়ায় থাকতে অপারগতা প্রকাশ করে এবং বাড়ি ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে , এজন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০২২সালের ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বরের মধ্যে বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম লুমউয়াল পাড়া (লুয়াং মুয়াল পাড়া) এলাকায় তাঁর ছেলেকে হত্যা করে অজ্ঞাতস্থানে লাশ গুম করেছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো.খলিলুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাদী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি অভিযোগ করেন, অভিযোগটি আমলি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.নাজমুল হোসেন এজাহার হিসেবে নিয়ে রুমা থানার ওসিকে তদন্ত করে পাঁচ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত : গত ১১জানুয়ারি বান্দরবানে র‌্যাবের অভিযানে রুমা ও থানচি উপজেলা থেকে ৫ জঙ্গী গ্রেফতার হয়,পরে গ্রেফতারকৃত জঙ্গীদের দেওয়া তথ্যমতে আদালত তাদের এক সহকর্মীর কবর খুড়ে লাশ উত্তোলনের জন্য নিদের্শনা প্রদান করে। পরে  রোববার (১৫ জানুয়ারি) বান্দরবানের রুমা উপজেলার প্রাংসা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম লুয়ং মুয়াল পাড়া এলাকায় এক জঙ্গীর মরদেহ উদ্ধারে যায় পুলিশ,র‌্যাব,সেনাবাহিনীর একটি টিম। সেসময় পাহাড়ে সন্ধান পাওয়া একটি কবর খুড়ে তাতে কোন মরদেহ না পেলেও সেখানে আমিনুল ইসলাম, ওরফে আল আমিনকে (২৩) এর কিছু পোষাক দেখে তার পিতা নুরুল ইসলাম সেখানে তার পুত্রকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান। পরে নুরুল ইসলাম তার পুত্রকে হত্যায় জড়িত থাকার দায়ে বান্দরবানে এসে কেএনএফের প্রধানসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions