প্রকাশঃ ০৬ জানুয়ারী, ২০২৩ ০৫:৪২:০৭
| আপডেটঃ ১২ জানুয়ারী, ২০২৫ ০৮:৫৬:৩৬
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের রেংয়েন পাড়ায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্টি ম্রো সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখন আতংক বিরাজ করছে পুরো এলাকায়। ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির বিরুদ্ধে লামা উপজলার সরই ইউনিয়নের রেংয়েন পাড়া, লাংকম পাড়া ও জয় চন্দ্র পাড়ার ৩৫০একর জুম চাষের বনাঞ্চল পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে চলমান ভুমি বিরোধ এর এই সময়ে সম্প্রতি ২জানুয়ারী আবার ও ম্রো পাড়ার বাড়িঘরে হামলা,ভাংঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আতংক নিয়ে বসবাস করছে ওই এলাকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্টির পরিবারগুলো।
রেংয়েন পাড়ার বাসিন্দা রেং চং ম্রো বলেন, আমাদের চলাফেরা করতে এখন প্রচুর ভয় লাগে। কয়েকবার হামলা, জুমে আগুন,পানিতে বিষ ঢেলে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রি আমাদের সাথে দ্বন্দে লিপ্ত হয়েছে,তাদের আচরণে আমরা আতংকিত।
রেংয়েন পাড়ায় পাড়ার কারবারি রেংয়াং ম্রো বলেন, আমাদের বসবাস করা এখন খুবই কষ্ট,সবদিকেই লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রি আমাদের গিলে খাচ্ছে।
এদিকে পাড়াবাসীদের ওপর ক্রমাগত হামলা, বাড়ীঘর ভাংঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় জাতীয় মানবধিকার কমিশনের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সদস্য কংজরী চৌধুরীর নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার (৫জানুয়ারী) সকালে ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। দীর্ঘ ২ঘন্টাব্যাপী ৪সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলটি রেংয়েনপাড়া পরিদর্শন করেন এবং পাড়াবাসীর সাথে ঘটনার বিবরণ শুনেন এবং শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
৪সদস্য বিশিষ্ট উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধি দল এর দলনেতা ও জাতীয় মানবধিকার কমিশনের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক এর সদস্য কংজরী চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি , যা যা দেখলাম আর যা শুনলাম তা আমরা সরকারকে জানাবো। তিনি আরো বলেন, এই ঘটনায় আপনারা (সাংবাদিকদের) ও সহযোগিতা প্রয়োজন হবে, সবাই মিলে কাজ করলে আশাকরি এই সমস্যা দ্রæত সমাধান হবে।
প্রতিনিধি দলের সদস্য পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) এবং জেলা ও দায়রা জজ মো.আশরাফুল আলম এসময় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমরা এখানে তদন্ত করলাম , দেখলাম ৩টি ঘর পোঁড়ানো হয়েছে এবং ১টি বাড়ীতে ভাঙচুর করা হয়েছে যা খুবই দু:খজনক। তিনি আরো বলেন, গত বছরের এপিল থেকে এখানে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রি এর সাথে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভ‚মি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে, আর সেই কারণে আমরা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রথম থেকে এই বিষয়ে স্বোচ্ছার ছিলাম আর আমরা একাধিক সুপারিশ করেছিলাম ।
তিনি আরো বলেন, আমরা শংকা করেছিলাম ভ‚মি বিরোধকে নিয়ে আইনশৃংঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, সে মর্মে আমরা কিছু নির্দেশনা ও দিয়েছিলাম। তিনি আরো বলেন, সেই নির্দেশনা সঠিকভাবে পালিত হলে হয়তো আজকের এই ঘটনা আমাদের দেখতে হতো না। প্রতিনিধি দলের সদস্য পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) এবং জেলা ও দায়রা জজ মো.আশরাফুল আলম আরো বলেন, আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি তারা আমাদের জানিয়েছে এই ধরণের ঘটনা আর আগামীতে হবে না, আর আমরা যা দেখলাম তা কমিশনে প্রতিবেদন দেব সেই অনুযায়ী কমিশন পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।