জুরাছড়িতে জীবন্যাসের দ্বিতীয়দিনে ঢল নেমেছে পূর্ণার্থীদের

প্রকাশঃ ১৮ নভেম্বর, ২০২২ ০৬:৩৮:১১ | আপডেটঃ ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০১:২৫:৪৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘতম ও সর্ববৃহৎ বুদ্ধমূর্তি নির্মিত হয়েছে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলায়। ১২৬ ফুট দীর্ঘতম ‘সিংহশয্যা বুদ্ধমূর্তিটির জীবন্যাস’ উৎসবকে ঘিরে তিন দিনব্যাপী দানোৎসর্গ অনুষ্ঠান চলছে।

কাল শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) তিনদিনের এই আয়োজনের সাঙ্গ হবে সন্ধ্যায় ফানুস উত্তোলন ও আকাশ প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দয়ে। জীবদান উৎসবের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার সকালেই বৌদ্ধ ভিক্ষুদের (ধর্মীয় গুরু) কাছ থেকে পঞ্চশীল গ্রহণ করেন পূর্ণার্থীরা। এরমধ্য দিয়ে শুরু দ্বিতীয় দিনের আচার-অনুষ্ঠান। একে-একে অষ্টপরিস্কার দান, সংঘদানসহ নানাবিধ দানোৎসর্গ করা হয়। উৎসবকে কেন্দ্র করে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে দায়ক-দায়িকারা এসেছেন। এছাড়া থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকেও পূর্ণার্থীরা এসেছেন বলে জানিয়েছে বিহার কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, বৃহস্পতিবারের দানোৎসর্গ অনুষ্ঠানে ধর্ম দেশনা দেন রাঙামাটির রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। অনুষ্ঠানে রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রæ চৌধুরী, চাকমা সার্কেল চিফ দেবাশীষ রায়, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, জুরাছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য ও শিক্ষাবিদ নিরূপা দেওয়ানসহ দায়ক-দায়িকা, পূর্ণার্থীরা অংশগ্রহণ করেছেন।

বিহার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পরমপূজ্য বনভন্তের স্মৃতি স্মারক হিসেবে জুরাছড়ি উপজেলার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষ ও এই উপজেলা হতে ভিক্ষু হওয়া ভিক্ষুগণ (বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু) জুরাছড়িতে দেশের সর্ববৃহৎ ও দীর্ঘতম সিংহশয্যা বুদ্ধমূর্তি নির্মাণের উদ্যোগ নেন ২০১২ সালে। ২০১৬ সালের ২ ফেব্রæয়ারিতে বুদ্ধমূর্তিটি নির্মাণ শুরু হয়ে ২০২১ সালের শেষ দিকে এসে নির্মাণকাজ শেয় হয়। চলতি বছরের ১৬-১৮ নভেম্বর তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নেয় বিহার কমিটি। বুদ্ধমূর্তিটির স্থপতি ছিলেন বিশ্বজিৎ বড়ুয়া, প্রতিপদ দেওয়ান ও দয়াল চন্দ্র চাকমা। প্রকৌশলী ছিলেন তৃপ্তি শংকর চাকমা ও অঙ্কনের দায়িত্বে ছিলেন বিমলানন্দ স্থবির।

সুবলং শাখা বনবিহারের সাধারণ সম্পাদক প্রচারক চাকমাকে জানান, সাধারণ মানুষের দেয়া অর্থেই আমরা বুদ্ধ মূর্তিটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিই। পুরো কাজে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যার পুরোটাই দায়ক-দায়িকাদের অর্থ। এখনো আমাদের কিছু কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। সামনের দিনে সেগুলো সমাপ্ত করব।

এদিকে, জুরাছড়িতে দেশের দীর্ঘতম বুদ্ধনির্মাণের মধ্য দিয়ে সারাদেশেই জুরাছড়ির নাম ছড়িয়েছে বলে মনে করেন জুরাছড়ি পরিষদ চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা। তিনি বলেন, এই বুদ্ধমূর্তির কারণে দেশে-বিদেশে জুরাছড়ির সুনাম বেড়েছে। উদ্বোধনের আগে থেকেই মানুষ এটি দেখতে আসছেন। মানুষের আগমনে পর্যটন স্থাপনা গড়ে ওঠার পাশাপাশি এখানকার অর্থনৈতিক গুনগত পরিবর্তন সাধিত বলে মনে করি।


সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions