শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪

জুরাছড়িতে বিরল প্রজাতি লাজুক বানর উদ্ধার

প্রকাশঃ ২৫ জুলাই, ২০২১ ০১:৫২:১০ | আপডেটঃ ২৯ মার্চ, ২০২৪ ১২:৪৭:৪৭  |  ৮১৪
সিএইচটি টুডে ডট কম, জুরাছড়ি (রাঙামাটি)। রাঙামাটি জুরাছড়িতে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসা একটি অতি বিপন্ন প্রজাতির লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।  রোববার সকালে স্বাস্থ্য বিভাগের ভেষজ বাগান থেকে লজ্জাবতী বানরটি উদ্ধার করা হয়।  

জানা গেছে, রোববার সকাল ৯টায় উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগের ভেষজ বাগানে  স্থানীয়রা বানরটি দেখতে পান। তখন শিশু-কিশোররা এটিকে দৌড়ে ধরার চেষ্টা করে। পরে স্বাস্থ্য বিভাগের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোঃকামরুজ্জামান জুয়েল বানরটি উদ্ধার করে নিজ কক্ষে নিরাপদে রাখেন।
জানা গেছে লজ্জাবতী বানরটি ডান হাতে কিছুটা আঘাত পেয়েছে।  তিনি নিজেই চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেন ডা. কামরুজ্জামান জুয়েল।
দক্ষিণ বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা গঙ্গা প্রসাদ জানান, বিষয়টি খবর পেয়েছি। ছবি দেখে নিশ্চিত হয়েছি এটি লাজুক বানর।  কঠোর ভাবে লকডাউন চলার কারণে সেখানে যেতে সময় লাগবে। তার পরেও দ্রুত হেফাজতে নিয়ে আসার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

ডা. কামরুজ্জামান জুয়েল  জানান, হালকা বাদামি রংয়ের পশমযুক্ত বানটির উচ্চতা প্রায় এক ফুট। লম্বায় প্রায় দেড় ফুট। চোখ দুটি গোল। দেখতে বিড়ালের মতো ঘোলাটে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ অনন্যা চাকমা জানান, লাজুক বানরটি উদ্ধারের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। বর্তমানে বানরটি ডা. কামরুজ্জামান জুয়েল এর হেফাজতে রয়েছে। 

বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা গঙ্গা প্রসাদ চাকমা বলেন, লজ্জাবতী বানর একটি অতি বিপন্ন প্রাণি। এটি 'লাজুক বানর' হিসেবেও পরিচিত। আবার 'বেঙ্গল স্লো লরিস' নামেও ডাকা হয়। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের তালিকায় (আইইউসিএন) এটি লাল তালিকাভুক্ত প্রাণি।
লজ্জাবতী বানর ছোট আকারের। এটি বেঙ্গল স্লো লরিস নামে পরিচিত। স্তন্যপায়ী শ্রেণীর লরিসিডি পরিবারের সদস্য এই বানর বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনের তফসিল-১ অনুসারে সংরক্ষিত প্রাণী।

লজ্জাবতী বানরের বৈজ্ঞানিক নাম Nycticebus bengalensis। এরা নিশাচর প্রাণী। এই বানর দিনের বেলায় গাছের উঁচু ডালে নিজেদের আড়াল করে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে। লজ্জাবতী বানর কচি পাতা, পোকা-মাকড়, পাখির ডিম খেয়ে থাকে।

প্রবীন হেডম্যান করুনাময় চাকমা বলেন, পার্বত্য এলাকায় এখনো বহু বিরল প্রানী রয়েছে।  দিন দিন বন উজার, জলবায়ু পরিবর্তনে খরা, অনা বৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, অধিকহারে তাম মাত্রা বৃদ্ধির ফলে খাদ্য সংকট, আবাসন হারা হয়ে পরেছে এসব বন্য প্রানী। যার কারণে তারা খাদ্য খোঁজে লোকালে হানা দিতে বাধ্য হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিতেন্দ্র কুমার নাথ বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ভেষজ বাগান থেকে উদ্ধার লাজুক বানরটি নিরাপদে রয়েছে। যথাযথ ভাবে খাদ্য প্রদান করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য  গেল মে মাসে দূর্গম পাহাড়ী অঞ্চল বারুদখোলা গ্রাম থেকে ২/৩ মাস বয়সী একটি বিরল প্রজাতির সাম্ভা হরিণের বাচ্চা উদ্ধার করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগ। এটাকে প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রামে চিকিৎসা সেবা প্রদান শেষে কক্সবাজার দোলা হাজরা সাফারি পার্কে  হস্তান্তর করা হয়।


এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions