পরস্পরকে দোষারোপ না করে চুক্তি বাস্তবায়নে সকলকে এগিয়ে আসা উচিত : পার্বত্যমন্ত্রী

প্রকাশঃ ৩০ অগাস্ট, ২০২০ ০৫:০৩:০১ | আপডেটঃ ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১১:১৬:০৮
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি পাহাড়ে এক জনপ্রিয় ব্যাক্তির নাম। জনগণের ভোটে টানা ৬ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে, দু’বার মন্ত্রী হয়েছেন। পাহাড়ের ৩ সংসদীয় টানা ৬বার এমপি ও দুবার মন্ত্রী হবার নজির নেই। জনপ্রিয়তার কারনে বার বার সংসদ সদস্য ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হওয়ায় ২বার মন্ত্রী হয়েছেন। বীর বাহাদুর উশৈসিং এম পি ১৯৬০ সালের ১০ জানুয়ারী বান্দরবান পার্বত্য জেলা সদরের একটি সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা প্রয়াত লালমোহন বাহাদুর এবং মাতা প্রয়াত মা চ য়ই,তিনি একজন গৃহিনী। তিনি দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক।

বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি ১৯৭৯ সালে বান্দরবান পার্বত্য জেলার স্থানীয় সরকার পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তির পূর্বে এ সংক্রান্ত সংলাপ কমিটির অন্যতম সদস্য এবং তৎকালীন সরকারের বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ সালে উপমন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রথম বারের মত এবং ২০০৮ সালে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় দ্বিতীয় বারের মত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড,রাঙামাটি-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।এরপর ১৯৯৬ সালে সপ্তম,২০০১ সালে অষ্টম,২০০৮ সালে নবম এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালে ০৫ জানুয়ারী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবান সংসদীয় আসন (৩০০ নং আসন) থেকে টানা পঞ্চম বারের মত জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৬ষ্ঠ বারের মত ৩০০ নং আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।

সম্প্রতি সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তার ঢাকাস্থ বেইলী রোডের বাসভবনে সিএইচটি টুডে ডট কম পরিবারের মুখোমুখি হয়েছেন। এসময় তিনি শান্তি চুক্তি, পর্যটন, ভুমি, র‌্যাব ব্যাটালিয়ন স্থাপনসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাতকারটি গ্রহণ করেছেন পাহাড়ের জনপ্রিয় অনলাইন সিএইচটি টুডে ডট কম এর সম্পাদক ফজলুর রহমান রাজন।

সাক্ষাতকারটি পাঠকদের জন্য হুবহু তোলে ধরা হলো  

প্রশ্ন: কেমন আছেন? কিভাবে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হলেন? এখন কেমন আছেন?

বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি : এখন মোটামুটি ভালো আছি, করোনা ভাইরাস শুরু থেকে বান্দরবানের দিনমজুর থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে ছিলাম, তাদের দুর্দিনে খাবার বা ত্রাণ পৌঁছে দিতে গিয়ে হয়ত কারো মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছি। তবে মানুষের ভালোবাসা ছিল বলে দ্রুত সুস্থ্য হয়ে কাজে ফিরেছি। আমি অসুস্থ্য হওয়ার পর রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের জনগন মসজিদ, মন্দির, গীর্জায় প্রার্থণা করেছে, ভগবানের দোয়া ও সবার আর্শীবাদে আমি সুস্থ্য হয়ে উঠেছি।

প্রশ্ন: টানা ৬ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য, একবার প্রতিমন্ত্রী দ্বিতীয় পুর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব পালনে কোন ধরণের প্রতিবন্ধকতা এসেছে কিনা কিংবা কেমন উপভোগ করছেন মন্ত্রীত্ব? কি ধরণের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন?


বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি : দায়িত্বে পালনের সময় আমি কোন প্রতিবন্ধকতা সম্মুখীন হয়নি, এটি উপভোগের বিষয়ে জনগনের প্রতি কমিটমেন্ট রক্ষা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।  মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি হওয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পেয়েছিলেন কল্প রঞ্জন চাকমা এমপি। তারপর বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে মনি স্বপন দেওয়ান দায়িত্ব  পালন করেছেন। পরবর্তীতে ২৯৯নং আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৪সালের জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী সরকার গঠনের পর আমাকে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেন। এরপর আবার ২০১৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠনের পর পুনরায় আমাকে মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পন করেন। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা  বলে উনার পরামর্শে আমি অত্র জেলাগুলোর উন্নয়নে কাজ শুরু করি। তিন পার্বত্য জেলায় মানুষের সাথে কথা বলে, খোজ খবর নিয়ে পার্বত্য এলাকায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে যেসব উন্নয়নমূলক কাজ করার সুযোগ আছে, সে সব কাজগুলো সর্বোচ্চ নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার চেষ্টা করছি। উপভোগ বলতে কিছু নেই। মূলত দায়িত্ব, যতটুকু আমার সামর্থ্য আছে ততটুকু দিয়ে, আমি ও আমার কর্মকর্তা এবং তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠাগুলোর সাথে  সম্পর্ক  এবং সমন্বয় রেখে এলাকার চাহিদা মোতাবেক বরাদ্দ যা পাই তা দিয়ে উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি। কাজ করতে গিয়ে, কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের কল্যাণ করার সরকারে যে লক্ষ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামকে জাতীয় উন্নয়নের ধারার সাথে সম্পৃক্ত করার প্রধানমন্ত্রীর যে ভাবনা, চিন্তা- চেতনা সেটিকে বাস্তবায়ন করার জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি এবং কাজের মধ্য থেকেই আমি আমার আনন্দটা খুজে পাই। মানুষের  উপকার হওয়া, জনগণের উপকার, এলাকার উপকার  হলেই আমি আনন্দ পাই। সুতরাং আমি মনে করি কাজ করতে গিয়ে প্রতিবন্ধকতা নয়, সহযোগিতা ও কাজের মধ্যদিয়েই আমি আনন্দ পাওয়ার চেষ্টা করি।



প্রশ্ন: পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবণা রয়েছে, পাহাড়ের পর্যটন খাতকে আয়ের উৎস বা শিল্প হিসেবে গড়ে তোলার কোন পরিকল্পনা রয়েছে কিনা?



বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি : পর্যটন খাতকে শিল্প খাতে হিসাব করা উচিত। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সমূহে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে পর্যটন বিভাগ হস্তান্তর করা হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মন্ত্রণালয় পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর সাথে কথা বলে পর্যটন খাতটি আরো উন্নতি করতে পারি। সেটি বেসরকারিভাবে হোক কিংবা মন্ত্রণালয়ের তিন জেলা পরষিদের মাধ্যমে হোক। উন্নতির ব্যাপারে আমরা মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমরা পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য মন্ত্রণালয়ের সাথে এসব বিষয়ে আলোচনা করেছি। বৃহত্তর পরিষরে আমরা পরিকল্পনা করে পর্যটন শিল্পকে আরো বেশি উন্নয়ন বিকাশে কাজ করে যাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চান পার্বত্য অঞ্চল সমূহ একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান হোক। সেজন্যে আমরা বেসরকারি ও পার্বত্য জেলা পরিষদ এর মাধ্যমে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করেছি। জেলা পরিষদগুলো যদি বড় পরিকল্পনা করে আমরা তা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় পাটিয়ে পর্যটন শিল্পের আরো বেশি উন্নয়ন ও বেগমান করার জন্য কাজ করবো।

প্রশ্ন: পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া কত দুর? জেএসএস বরাবরই অভিযোগ করে আসছে চুক্তি বাস্তবায়নে কোন অগ্রগতি নেই, সরকার পাহাড়ে চুক্তি বিরোধী উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে বিষয়টি মন্ত্রী হিসাবে কিভাবে দেখছেন? 

বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি : পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি অথবা পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ তাদের দৃষ্টিভঙ্গী থেকে অনেক কথায় বলতে পারেন। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়নের দায়িত্ব উভয় পক্ষের। সরকাররের  আন্তরিকতার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি যতগুলো ধারা রয়েছে তার অধিকাংশই পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে এমন দাবি কখনো করা হয়নি। সরকার বলছে অধিকাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে বাকীগুলো প্রক্রিয়াধীন। কিন্তু উনারা পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ বিভিন্ন কথা বলছে। চুক্তির ধারা এখনো যেগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা থাকলে কিভাবে সমাধান করা যায়, কিভাবে আরো দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায়, এবিষয়ে উভয় পক্ষের এগিয়ে আসা উচিত। একে অপরকে দোষারোপ করলে চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। বরং কিভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করা যায় সে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের পর পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকরের ভাবনা পর্যটন শিল্প আরো সমৃদ্ধশালী করা। ঘরে বসে আলোচনা সমালোচনা করলে শান্তি চুক্তি
দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সকল প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করতে হবে। কিভাবে আরো আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা যায়। তবে এসব ব্যাপারে সরকারের আন্তরিকতার কোন অভাব নেই। আমি আহব্বান করবো কাদা ছুড়াছুড়ি না করে কিভাবে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করা যায় সে ব্যাপারে আলোচনার মাধ্যমে উভয় পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে সামনের দিতে  এগিয়ে যেতে হবে।




প্রশ্ন: পাহাড়ে বিভিন্ন মহল থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি উঠেছে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আপনার মন্ত্রনালয় কোন ভুমিকা কি নিচ্ছে? পাহাড়ে কবে নাগাদ হচ্ছে র‌্যাবের ব্যাটালিয়ন?  

বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি: পার্বত্য অঞ্চলে র‌্যাব ব্যাটিালিয়ন স্থাপনের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে. শুনেছি পার্বত্য তিন জেলায় র‌্যাব গঠন করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেহেতু মানুষের জানমাল রক্ষার করা সরকারের দায়িত্ব। আইন শৃঙ্খলা উন্নতি করা জন্য পার্বত্য অঞ্চলে র‌্যাব গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা জনসংহতি সমিতির সাথে শান্তি চুক্তি করেছি। শান্তি চুক্তির আলোকে সেখানে অস্ত্র জমা হয়েছে কিন্তু জমার দেওয়ার পর পাহাড়ে অস্ত্র থাকার কথা নয়। আমরা পাহড়ে যে অস্ত্রের ঝণঝনানি বর্তমানে দেখি তা হলো অবৈধ অস্ত্র। যেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা সেখানে অস্ত্র দিয়ে মানুষকে খুন করা হয়। খুনাখুনি, চাঁদাবাজি, অপহর, ঘুম-হত্যা এসব অচিরেই বন্ধ করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব এসব অবৈধ অস্ত্রে বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। আমরা রাঙামাটিতে বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সভা করেছি,  স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের সাথে কথা বলেছি। কিভাবে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়, সেজন্য আমরা বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানের সাথে আলোচনা করেছি। সভায় সকলে অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্ছার হয়েছেন এবং বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। বর্তমান সরকার এসব কিভাবে বন্ধ করা যায় এসব ব্যাপারে ভাবছেন এবং পদক্ষেপ গ্রহন করছেন। যে সব দায়িত্বশীল নেতা ও কর্মকর্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন, সবাই সব অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ চান। পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন আশা করি।




প্রশ্ন: পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো রদবদলের কথা শোনা যাচ্ছে, কবে নাগাদ রদবদল হতে পারে? জেলা পরিষদগুলোর নির্বাচনের কোন চিন্তা ভাবনা রয়েছে?

বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি : পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো যেদিন থেকে গঠন করা হয়েছে সেদিনের পর থেকেই শুনছি নির্বাচন হচ্ছে, হবে, তবে স্বাভাবিক ভাবে আমরা চাই নির্বাচন হোক। বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন পরিষদের নিয়োগে সুনির্দিষ্ট মেয়াদ উল্লেখ নেই, তবে বর্তমান যেটি চলমান আছে সেটি আমরা ধরে নেই ৫বছর মেয়াদী । ইতিমধ্যে বর্তমান পরিষদগুলোর ৫বছর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে কিন্তু এখনো নির্বাচনের কিংবা পুনরায় গঠনের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি। তবে মানুষের কাছে অনেক ধরনের অনেক কথা শুনি। এখন পর্যন্ত পার্বত্য জেলা পরিষদ গুলোর নির্বাচন বা পুনগঠনের কোন উদ্যোগ এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। তবে ৫বছর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, সেক্ষেত্রে যেকোন মুহুর্তে পুন:গঠন হবে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে এসব পরিষদের নির্বাচন এর প্রক্রিয়া গঠন করবে নির্বাচন কমিশন। তারা যখন মনে করবেন জেলা পরিষদগুলোর নির্বাচন করার দরকার তখনই তারা নির্বাচনের জন্য উদ্যোগ নিবেন। আমরা চাই জনগণের পছন্দ অনুযায়ী একজন জনপ্রতিনিধি আসুক নির্বাচনের মাধ্যমে। জেলা পরিষদের নির্বাচন হলে জনগণের আশা আঙ্খংকা পুরণ হবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিষদগুলোর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোক এটা জনগণের অধিকার। নির্বাচন করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের । অন্যান্য নির্বাচনে ভোটার তালিকায় ইউনিয়ন থেকে শুরু করে  জেলার সবাই অংশ গ্রহন করে। তবে জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে যেটি স্থানীয় ভোটার তালিকার মাধ্যমে নির্বাচনের দাবি রয়েছে। এটা কিভাবে সম্ভব হবে, কি হবে না?  এবিষয়ে নির্বাচন কমিশন ভালো বলতে পারবে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত একই ভোটার তালিকা দিয়ে হয়ে আসছে, কিন্তু জেলা পরিষদের নির্বাচন কিভাবে অন্য প্রক্রিয়ায় সম্ভব সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ভালো বলতে পারবে।




প্রশ্ন: দীর্ঘদিন ধরে ভুমি বন্দোবস্ত প্রক্রিয়া বন্ধ, এতে করে ভুমি জটিলতা বাড়ছে, ভুমি বন্দোবস্তী প্রক্রিয়া চালু বা শিথিল করার কোন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আছে কি?

বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি : এই বিষয়ে মতামত কিংবা তথ্য ভুমি মন্ত্রণালয় ভালো দিতে পারবে, তবে আমি জানি স্বল্প মেয়াদী কিছু কিছু বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দিয়ে থাকেন। যেমন ১০টি বিষয়ে কবরস্থান, পর্যটন, স্কাউট সরকারি জরুরী কাজ এধরনের। ভূমি সমস্যা সমাধানে পার্বত্য ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন গঠন করা হয়েছে, এখানে আভ্যন্তরীন উদ্বাস্ত ও পুর্নবাসিত বাঙ্গালীরা রয়েছে, আবার কোথাও কোথাও পাহাড়ী বাঙালীর জমি বিরোধ রয়েছে সে সব বিষয়ে আলাপ আলোচনা করে সমাধানের একটা রাস্তায় পৌঁছালে এবং সরকার সিদ্ধান্ত নিলে হয়ত ভুমি বন্দোবস্তী প্রক্রিয়া চালু হতে পারে,, তবে এখনো পর্যন্ত ভুমি বন্দোবস্ত চালুর ব্যাপারে কোন চিন্তা ভাবনা নেই।

প্রশ্ন: আমাদের সময় দেয়ার জন্য সিএইচটি টুডে ডট কম পরিবার থেকে আপনাকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ

বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি: আপনাদেরকে ও ধন্যবাদ। সিএইচটি টুডে ডট কম এর পরিবারের সকল সদস্যদের জন্য শুভ কামনা ইলো।


সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions