করোনা ভাইরাস সর্ম্পকে সচেনতামুলক অভিযান জীবন এবং অপরাজিতার

প্রকাশঃ ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ০৫:৩৪:৫৮ | আপডেটঃ ০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:৪০:০৫
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পুরো বিশ্বে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে নতুন করোনাভাইরাস। এই রোগের শুরু চীনে, এখন যা ছড়িয়ে গেছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে। করোনাভাইরাস আতঙ্কে আতঙ্কিত পুরো বিশ্ব। আজ ৪ঠা ফেব্রুয়ারি রাঙামাটিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান পরিচালনা করে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী দেশসেরা সংগঠন "জীবন" ও তার সহযোগী স্বতন্ত্র সংগঠন "অপরাজিতা"।

রাঙামাটি শহরের প্রাণকেন্দ্র বনরুপায় সকাল ৯টায় একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে প্রচারাভিযানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। কর্মশালার সংগঠনের সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা: মোঃ মোস্তফা কামাল এম ও (সিএস অফিস), বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী মোহাম্মদ ইব্রাহীম,  বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডি. ভি. এম দুর্জয় বড়ুয়া।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জীবন এর সাধারণ সম্পাদক সাজিদ-বিন-জাহিদ (মিকি)। রাঙামাটির জনবহুল সড়ক বনরুপায় করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা তুলে ধরে অর্ধশতাধিক স্বেচ্ছাসেবক এবং পথচারীদের মধ্যে সচেতনতামূলক নির্দেশনার পাশাপাশি মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। প্রথম ধাপে, ৩০০ মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। অপরাজিতার সভাপতি সাইদা জান্নাত কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি এটিকে আরো ছড়িয়ে দিতে আহবান জানান। দেশ জুড়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সতর্ক থাকার জন্য নাগরিক সম্পৃক্ততায় বিশেষ নজরদারির গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানকে এই করোনাভাইরাসের আঁতুড়ঘর হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে। গত ডিসেম্বরে প্রথম এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে তিন শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে। চীনের বাইরে ২৫টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এর মধ্যে চীনের বাইরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম একজনের মৃত্যু হয়েছে ফিলিপাইনে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ২০০৩ সালের সার্স ভাইরাসের চেয়েও মারাত্মক হতে পারে করোনাভাইরাস। এরই মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যায় সার্সকে ছাড়িয়ে গেছে এটি।

করোনাভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। যদিও প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা শুরু হয়ে গেছে, তবে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, তৈরি করা গেলেও সময় লাগবে প্রায় ৬ থেকে ১২ মাস।
বাংলাদেশে এখনো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোন ব্যক্তিকে সনাক্ত করা যায়নি। চীনে বাংলাদেশিদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। শুধু উহানে বসবাসরত বাংলাদেশির সংখ্যাই ৫০০।

উহানফেরত একজন বাংলাদেশি গবেষকের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে চারশ’র মতো বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন। চীন সরকার সেখানে সবধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় আটকেপড়া বাংলাদেশিরা ওখান থেকে বের হতে পারছেন না।
চীনের সঙ্গে আমাদের সরাসরি বিমান যোগাযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ৬টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট থাকায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ চীনে আসা যাওয়া করছে। সুতরাং বিষয়টি আমাদের জন্য উদ্বেগজনক।

উহানে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও চীনের অন্যান্য প্রদেশে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে। চীনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সবাই আতঙ্ক-উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছে। দেশে আত্মীয়-স্বজনরাও খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। ২৭ জানুয়ারি আমাদের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে জানিয়েছেন- উহানে অবস্থানরত ছাড়াও চীনে যেসব বাংলাদেশি দেশে ফিরতে চান, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

করোনাভাইরাস ছোঁয়াচে। আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে সহজেই অন্য আরেকজনের দেহে ভাইরাসটি প্রবেশ করতে পারে। বিশ্বব্যাপী চরম উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করা এই ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশেও একধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ভাইরাসটা যেহেতু আক্রান্ত ব্যক্তি থেকেই অন্য ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করছে সেহেতু সবার আগে যে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে তা হল, কোনো আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে এটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে। চীন থেকে বা আক্রান্ত দেশ থেকে যারা ফিরছে, তাদের ওপর নজরদারি জোরদার করতে হবে।

স্বেচ্ছাসেবকদের পরবর্তীতে রাঙামাটির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও প্রচারাভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রত্যয় লক্ষ্য করা গেছে।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions