প্রকাশঃ ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ১০:১৭:৫৩
| আপডেটঃ ০১ নভেম্বর, ২০২৪ ০১:২৬:০১
সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ছাত্রদলের সাবেক নেতাকে অন্তর্ভূক্ত করার অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারী) খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি টিকো চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক মো. জহির উদ্দিন ফিরোজের যৌথ স্বাক্ষরে মো. জাহাঙ্গীর আলমকে সভাপতি ও সদ্য বিলুপ্ত কমিটির প্রচার সম্পাদক নাজমুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আংশিক কমিটির তথ্য প্রচার হওয়ার পর সোমবার বিকেলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে পানছড়ি উপজেলা সদরে বিক্ষোভ করেন বিলুপ্ত কমিটির নেতাকর্মীরা।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি টিকো চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন ফিরোজ বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণ করে মনগড়া পকেট কমিটি অনুমোদন ও ঘোষণা দিচ্ছে। কোন প্রকার সাংগঠনিক নিয়ম না মেনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পানছড়ি উপজেলার বর্তমান কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে দাবি তুলে অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে পানছড়ি উপজেলায় তাদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়। সমাবেশ শেষে তাদের কুশপুত্তালিকা পুড়ানো হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশের নেতৃত্ব দেন পানছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি (জেলা থেকে বিলুপ্ত কমিটির) শ্রীকান্ত দেব মানিক ও সাধারণ সম্পাদক (জেলা থেকে বিলুপ্ত কমিটির) জহিরুল আমিন রুবেল।
পানছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি (জেলা থেকে বিলুপ্ত কমিটির) শ্রীকান্ত দেব মানিক মুঠোফোনে বলেন, খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজের খেয়াল খুশি মতো সংগঠন চালাচ্ছে। সাংগঠনিক নিয়ম কানুন অমান্য করে তারা দু'জন ছাত্রলীগকে ব্যক্তিগত সংগঠনে পরিণত করেছে। ব্যক্তিগত সুবিধার বিনিময়ে ছাত্রদলের ইউনিয়ন কমিটির এক নেতাকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে। শুধুমাত্র ছাত্রদল নয় আঞ্চলিক সংগঠনের নেতাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে । অসাংগঠনিক আচরণের দায়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি টিকো চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন ফিরোজকে পানছড়ি উপজেলায় অবাঞ্চিত ঘোষণার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে কেন্দ্রে অভিযোগ করার কথাও জানান তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নবঘোষিত আংশিক কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ২০১২ সালের ৩১ মে'র পানছড়ি উপজেলার উল্টাছড়ি ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক পদে মো. জাহাঙ্গীর আলম সুজন নামে যার নাম আছে সেটি আমার নয়। আমি কখনও ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না। স্কুলজীবন থেকে আমি ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি। ২০১১ সালের জানুয়ারীতে আমি উল্টাছড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি দায়িত্ব পায়। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলা হয়েছে দাবি করেন।
এদিকে, পানছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুতির দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে জানান, পানছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত কিংবা আংশিক কমিটি ঘটনার বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সম্পাদক তার সাথে কোন সমন্বয় করেনি। অথচ তিনি পানছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুতির দায়িত্বপ্রাপ্ত। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি টিকো চাকমা বলেন, পানছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদককে একাধিকবার কাউন্সিল করতে লিখিত ভাবে জানানো পরও তা মানা হয়নি। সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়াতে প্রত্যেকটি মেয়াদোর্ত্তীণ ইউনিটের কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আনার কাজ চলছে। আর কারও বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ থাকে তাহলে সেটি প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণের সাংঠনিক গঠনতন্ত্রে নিয়ম আছে।
প্রসঙ্গত, খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে অধিকাংশ উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন কমিটির মেয়াদোর্ত্তীণ হয়ে পড়েছে। সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধিতে মেয়াদের মধ্যে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত করার পরামর্শ সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের। তবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের আশায় এখনও পর্যন্ত খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত করার দিন ধার্য্য করা যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।