লামার জীনামেজু রাজামুনি বুদ্ধমূর্তির অভিষেক ও উৎসর্গ অনুষ্ঠান সম্পন্ন

প্রকাশঃ ১৭ জানুয়ারী, ২০২০ ১১:১১:১৫ | আপডেটঃ ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০৬:৪১:২৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বান্দরবানের লামা উপজেলায় ৩৫ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন জীনামেজু রাজামুনি বুদ্ধমূর্তির অভিষেক ও বুদ্ধমূর্তি উৎসর্গ করা হয়েছে।

বুদ্ধমুর্তির অভিষেক ও উৎসর্গ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা।

৭তম সংঘনায়ক, বাংলাদেশ তংশৈরোওয়া সংঘনিকায়া ভদন্ত উঃ চাইন্দা মহাথের এর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার জেরিন আখতার, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, সদস্য ক্যসাপ্রু, সদস্য ফাতেমা পারুল, লামা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা জামাল, লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ- জান্নাত রুমি, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিল্টন মুহুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত, লামা পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের আহবায়ক কেলুমং সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন, জীনামেজু অনাথ আশ্রম অনাথ শিশুদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছে বলেই এই আশ্রম প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। একটি জাতি ও সমাজ গঠনে শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। যেহেতু শিক্ষার ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছে এই প্রতিষ্ঠান সেহেতু এই আশ্রমের জন্য যা প্রয়োজন পর্যায়ক্রমে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।

এসময় পার্বত্য মন্ত্রী আরো বলেন, আমি বীর বাহাদুর কোন একটি জাতির মন্ত্রী নই। আমি পাহাড়ে বসবাসরত প্রতিটি মানুষের মন্ত্রী। সরকারীভাবে বরাদ্দ যাই আসুক তা সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সমবন্টন করে দেয়া হয়। অনাথ আশ্রমের জন্য তিনি ১ লক্ষ টাকা অনুদান এবং ১০ মেট্রিকটন খাদ্যশষ্য ঘোষনা দেন। এদিকে মন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ প্রতি বছর এই অনাথ আশ্রমের জন্য ৫০ হাজার টাকা অনুদান ঘোষনা দেন।

পরে ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে নির্মিত ৪ কক্ষ বিশিষ্ট অনাথ আশ্রমের ছাত্রাবাসের শুভ উদ্বোধন করা হয়।

এদিকে জীনামেজু রাজামুনি বুদ্ধমূর্তির অভিষেক ও উৎসর্গ অনুষ্ঠানকে ঘিরে ৩দিন ব্যাপী সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রথম দিন মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহি লোকনাট্য “জ্যাহ” এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানের ২য় দিন সকালে শোভাযাত্রা, ভিক্ষুসংঘের পিন্ডদান, ধর্মীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষুসংঘ কর্তৃক বুদ্ধমুর্তির অভিষেক ও উৎসর্গ এবং ধর্মীয় সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি রবিবার শেষ দিন সকালে ভিক্ষুসংঘের পিন্ডদান এবং রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য “জ্যাহ” অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য জীনামেজু রাজামুনি বুদ্ধমূর্তিটি জেলার সবচেয়ে উচ্চতা সম্পন্ন একটি বুদ্ধমুর্তি। এটি লামা উপজেলার ইয়াংছা নামক এলাকায় জীনামেজু অনার্থ আশ্রমে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

জীনামেজু অনাথ আশ্রমের অধ্যক্ষ উ নন্দমালা থের বলেন, নব উৎসর্গকৃত বুদ্ধমুর্তিটি আশ্রম পরিচালনায় একটি অনন্য ভুমিকা রাখবে। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা ও তার সহধর্মিনী কি কি এ এর সার্বিক সহযোগিতা ও দিক নির্দেশনায় এই রাজামুনি বুদ্ধমুর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions