বান্দরবানে শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে রাজপূণ্যাহ

প্রকাশঃ ০৭ মার্চ, ২০১৯ ০৪:১২:১৭ | আপডেটঃ ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০৫:৪৮:৪৯
সিএইচটি টুডে ডট কম,  বান্দরবান। আগামী ৮মার্চ থেকে বান্দরবান রাজার মাঠে তিনদিন ব্যাপী জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে শুরু হতে যাচ্ছে রাজপরিবারের রাজস্ব খাজনা আদায়ের অনুষ্ঠান রাজপূণ্যাহ। আর এই রাজস্ব খাজনা আদায় উৎসবকে ঘিরে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে বইছে আনন্দের জোয়ার। বছর শেষে রাজপরিবারের এই ঐতিহ্যবাহিবাহী খাজনা আদায় উৎসবকে ঘিরে তিন পার্বত্য জেলার জনসাধারণ ও পাহাঁড়ী বাঙ্গালীর মিলনমেলায় পরিণত হয় পুরো বান্দরবান।

মেলাকে ঘিরে জেলার জেলার সর্বত্র এখন সাজসাজ রব। প্রতিটি আদিবাসী ও বাঙ্গালী পরিবারে বছরের শেষে এই রাজপূণ্যাহ মেলাকে ঘিরে  বইছে আনন্দের বন্যা। উৎসবমুখর পরিবেশে এই মেলা উপভোগে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ভিড় করে বান্দরবানে। বছর শেষে রাজপরিবারের আয়োজনে এই রাজকীয় মেলায় অংশ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত সকলে। ঐতিহ্যবাহী এই রাজস্ব খাজনা আদায় অনুষ্ঠানে ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায়ের ১০৯টি মৌজার ১০৯ জন হেডম্যান ও ১ হাজার ৫ শত কারবারী (গ্রামপ্রধান) নিজ নিজ মৌজার পক্ষ থেকে আদায়কৃত রাজস্ব রাজাকে প্রদান করবে।

এদিকে রাজপরিবারের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ৮ই মার্চ শুক্রবার সকাল ১০টায় রাজবাড়ী হতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুরাতন রাজবাড়ীর মাঠে গিয়ে সমবেত হয়ে খাজনা আদায় অনুষ্ঠানে অংশ নেবে রাজপরিবারের সদস্য ও অতিথিরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে কৃষিমন্ত্রী ড:মো:আব্দুর রাজ্জাক। এছাড়া দেশি বিদেশি অতিথির উপস্থিতিতে চলবে তিনদিনব্যাপী রাজমেলা।

রাজপুত্র চসিং প্রু বনি জানান,প্রতিবছরের মত এবারোও আমরা জাঁকজমকভাবে এই রাজমেলার আয়োজন করছি।আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে, আশাকরি এই মেলা পার্বত্য জেলার পাহাঁড়ী বাঙ্গালীদের মিলনমেলায় পরিণত হবে।


বোমাং সার্কেল ১৮৭৫ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ঐতিহ্যবাহী এই রাজপূণ্যাহ মেলার আয়োজন করে আসছে। ১৪১ তম এই রাজপূণ্যাহ মেলা আনন্দঘন পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনে সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন বোমাং রাজা।

বান্দরবান বোমাং সার্কেল চীফ বোমাংগ্রী উ চ প্রু মার্মা জানান,আমরা রাজ পরিবার প্রতিবছরই এই রাজমেলা করে থাকি। এই শেরা আমাদের ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তুলে । জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে আমরা একটু দেরিতে এবারের মেলা আয়োজন করেছি ,এই মেলায় আমি বান্দরবানসহ সকল আগত দর্শনার্থীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

প্রতিবছর রাজমেলায় হেডম্যান কারবারী ও অতিথিদের কাছ থেকে উত্তোলনকৃত রাজস্ব খাজনা থেকে ৪২% রাজা, ২৭% হেডম্যান এবং ২১% রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা হয়ে থাকে, আর বছরের পর বছর ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য রাজপরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিবছরে একবার এই রাজস্ব খাজনা আদায় অনুষ্ঠান করা হয় ।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions