প্রকাশঃ ০৬ জানুয়ারী, ২০১৯ ১১:৫৭:২৪
| আপডেটঃ ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০৬:৫৭:৩১
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও চতুর্থবারের মত নির্বাচিত সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারকে মন্ত্রী করার দাবিতে ফেইসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে সোচ্ছার হয়ে উঠেছেন দলের নেতা কর্মীরা। আজ রোববার বিকালে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে ৪৬ সদস্যর মন্ত্রীসভার নাম ঘোষণা করা হয়, এর মধ্যে দীপংকর তালুকদারের নাম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে নেত্রীর কাছে দীপংকর তালুকদারকে যে কোন মন্ত্রনালয়ের পুর্ণমন্ত্রী করার দাবি জানান।
জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ক্যারল চাকমা তার ফেবুক ষ্ট্যাটাসে লিখেন, রাজনীতিতে যোগ্যতার যে দাম নেই আরো একবার প্রমাণিত হলো, নতুন মন্ত্রী পরিষদের আজকের তালিকা প্রমাণ দিল। রাজনীতিকে বিদায় জানাব কিনা ভাবছি।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য তার ফেবুক ষ্ট্যাটাসে লিখেন, আমাদের প্রিয় নেতা দীপংকর তালুকদারকে মন্ত্রী না করায় আমরা খুব আপসেট।
স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক শাহাজাহান বলেন, পাহাড়ে একজন নেতাই সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্রৈর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন আর তিনি হচ্ছেন পাহাড়ী বাঙালীর ঐক্যের প্রতীক দীপংকর তালুকদার। আমরা হতাশ ও ক্ষুব্দ, তবুও আশা করব জননেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য এলাকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে দাদাকে (দীপংকর তালুকদার) যে কোন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী দিবেন।
জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম রাশেদ তার ফেবুক ষ্ট্যাটাসে লিখেন, দাদা দীপংকর, আপনার জীবনে সবচে বড় ভুল ছিলো ২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়ে আপনি মাথা ঘামাননি, তাতে আপনার পরাজয়, কিন্তু পরাজয়ের পরও আপনি পাহাড়ের চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন, একের পর এক পাহাড়ি আওয়ামীলীগারদের ওপর হামলার পরও আপনি শান্তির কথা চিন্তা করে পাল্টা অ্যাকশনে যাননি, এসব ঘটনায় বড় কোনও নেতার বিরুদ্ধে মামলাও হয়নি, আপনার সবচে বড় ভুল আঞ্চলিক দলগুলোর তীব্র বিরোধিতার পরও মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে এগিয়ে গেছেন। মন্ত্রী, এমপি না হয়েও ১০ উপজেলা চষে বেড়ালেন। মজবুত করেছেন দলীয় অবস্থান। আঞ্চলিক চারটি সংগঠনকে কৌশলে মোকাবেলা করেছেন।
জনসংহতি সমিতির স্বর্গভূমিতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে নির্বাচনে জয়লাভ। আর এসবের ফলাফল শূন্য। আর যাকে এসবের মোকাবেলাই করতেই হয়নি। আর গত পাঁচ বছরে যার কারণে অন্য দুই জেলা উন্নয়বঞ্চিত হয়েছে, তাকেই দিলো প্রমোশন!!!!! এরই নাম রাজনীতি!!!!!
অতত্রব, যে বনে বাঘ নেই, সে বনে বিড়ালই বাঘ। আর তার গলায় সোনার হার উঠবে, এটাই স্বাভাবিক....যাক দীপংকর দা, আপনি গত পাঁচ বছর যেভাবে তৃণমুলের নেতা ছিলেন, সেভাবেই রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থাকুন। মন্ত্রণালয়ই শেষ কথা নয়। জনমানুষের নেতা হয়ে থাকুন।
আবার কেউ কেউ লিখেছেন এটি পার্বত্য পার্বত্য মন্ত্রনালয় নয়, বান্দরবান মন্ত্রনালয়। গত বছর রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি উন্নয়ন বঞ্চিত ছিল, এবারো থাকবে।
১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮ এবং ২০১৮ সনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, ২০০৮ সনে দীপংকর তালুকদারকে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়। ২০১৮ সনের নির্বাচনে জনসংহতি সমিতি, বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝে দলের হাল ধরে রেখেছিলেন। আঞ্চলিক দলগুলোর নানা চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে পাহাড়ে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন।
সবার প্রত্যাশা ছিল এবার তাকে মন্ত্রীত্ব দেয়া হবে, কিন্তু মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী না করায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন নেতা কর্মীরা। পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দীপংকর তালুকদারকে মন্ত্রী করার জোর দাবি জানিয়েছেন।